আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
41 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (4 points)
আসসালামুয়ালাইকুম।


(১) নবী, রাসুল,ওলী,ফেরেস্তা বা যে কোনো মানুষকে উসীলা করে দুআ করা বড় শিরক।আমি প্রাই এই বলে দুআ করতাম যে " রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছে বান্দা আল্লাহর কাছে দুআ করলে আল্লাহ বান্দার সেই হাত খালি ফেরত দিতে লজ্জা পায়। দুনিয়ার সব মিথ্যা হতে পারে কিন্তু আপনার হাবিবের কথা তো মিথ্যা না।আপনি আপনার হাবিবের উসীলায় আমার এ দুআ কবুল করে নিন" আমার এইভাবে দুআ করায় কি শিরক হয়েছে? আর যদি হয়ে থাকে তাহলে এখন আমার করনীয় কি? কিভাবে আল্লাহ কাছে ক্ষমা চাইতে পারি?আমি আসলে আগে জানতাম না নবীদের উসীলা করলে শিরক হয় যে আজকে এটা জানার পর থেকে মনে ভয় ঢুকেছে যে এতো দিন হয়তো আমার অজানা আমার দ্বারা শিরক হয়েছে আল্লাহ মাফ করুন।

(২) আমি অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্রী দ্বীনের বুঝ পাওয়া পর আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে আমি সহশিক্ষা ছেড়ে দিব এবং আপনাদের আলেমা কোর্স এ ভর্তি হবো আলহামদুলিল্লাহ। আমার এই সিদ্ধান্ত আমি আমার এক বান্ধবীর সাথে শেয়ার করি যে কি না রংপুর মেডিকেল ৩য় বর্ষে অধ্যয়নরত আছে।আমার কথা শুনে সে বললো যে "আমি কি করবো এখন" ওর এই কথা শুনে আমিও কনফিউজড হয়ে যাই যে কি বলবো?ওর আম্মুর ইচ্ছা মেয়েকে ডক্টর বানাবে এবং ওর নিজেরও ইচ্ছা যে সে ডক্টর হয়ে মানুষের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করবে এই নেক নিয়তে মেডিকেলে পড়া শুরু করে।তাই আমি যেমন ভার্সিটি ছাড়ার সিদ্ধান্ত সহজে নিতে পেরেছি ওর জন্য ব্যপারটা সহজ নয়।এটা ভেবে আমি তখন বলেছিলাম যে আপাতত পর্দা মেইনটেইন করা,নন মাহরামদের সাথে না মিশা সহ ইসলামের বেসিক জিনিস গুলো যেনো মেনে চলে এইটুকু বলে চুপ হয়ে যাই এটা ভেবে যে আমারো তো খুব বেশি জ্ঞান নেই তো কোনো ভুল কথা বলে ফেললে তার জন্য যদি সে ভুল রাস্তায় চলে যায় তাতে আমারো গুনাহ হবে। কিন্তু সাথে আমি ওকে আইওএমের ফরজে আইন কোর্স করার কথা বলি যদি ইসলামের বেসিক জিনিস গুলো জানা থাকে তাহলে ও নিজে ঠিক ভুল বুঝতে পারবে নিজেকে সঠিক রাস্তায় রাখতে পারবে এবং আস্তে আস্তে দ্বীনের প্রতি ভালোবাসা বৃদ্ধি পাবে।সে এই কোর্স করতে রাজি হয়েছে। আমার প্রশ্ন হচ্ছে যে ও হলে থেকে পড়াশোনা করছে যদিও নেক নিয়তে কিন্তু তাও সহশিক্ষা হারাম তো এখন ওর জন্য করনীয় কি মেডিকেল পড়াশোনা ছেড়ে দেওয়া নাকি ইসলাম মেইনটেইন করে কনটিনিউ করা ইসলামে এই ব্যপারে কি বিধান দেওয়া হয়েছে?

(৩) আমি যেহেতু জেনারেল এর তাই মাযহাব নিয়ে ওতো ধারনা নেই।আমি আসলে কনফিউজড হয়ে যাই কোনটা সঠিক কোনটা ভুল ভেবে পাই না।আমার প্রশ্ন হচ্ছে ইসলামে কোনো একটা মাযহাব মানা কি খুবই জরুরি? আল্লাহ, রাসুল আর কোরআন কি যথেস্ট নয়? কেউ যদি এতো বিবাদে না গিয়ে শুধু এই তিনটা নিয়ে জীবন কাটাতে চায় তাহলে কি সেটা সম্ভব? আবার বিভিন্ন ইসলামিক কাজ এক এক মাযহাবে এক এক কথা বলা হয় যেমন সাহু সিজদা,কাযা নামাজ,বিতর নামাজ এইসব ব্যপারে আহলে মাযহাব একটা বললে হানাফী মাযহাবে অন্য নিয়ম বলে সেক্ষেত্রে এই ইবাদত গুলো কিভাবে নির্ভুলভাবে করতে পারি?

(৪) আবু ত্ত্বহা আদনান ওনার একটা ভিডিওতে দেখেছিলাম যে কোনো মজলিসে বসে যদি কোনো আপত্তিকর কথা বা গিবত হয়ে থাকে তাহলে সেই মজলিস শেষ একটা দুআ পড়ার কথা বলেছিলেন তিনি এই দুআটা সেই মজলিসে করা গিবত বা গুনাহের কোনো কথা বলা হয়ে থাকলে তার কাফফারা হিসেবে কাজ করবে। কিন্তু আমার দুআ টা মনে নেই আমি সেই দুআ টা জানতে চাই।এমন কোনো দুআ আছে থাকলে সেটা কোন দুআ।

(৫) মাগরিবের পর আওয়াবীনের নামাজ পড়া কি ফজিলত পূর্ণ নাকি বিদআত?

1 Answer

0 votes
by (718,080 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
(১) উসীলা গ্রহণ করে দু'আ করা জায়েয।চায় জীবিত মানুষের হোক বা মৃত মানুষের,চায় ব্যক্তির ব্যক্তিত্বর উসীলা হোক বা নেককাজের।সব-ই জায়েয।সকল প্রকার উসীলার সারমর্ম একটাই হবে।সেটা হল,যা উসীলা গ্রহণ করা হচ্ছে,তার উপর আল্লাহর যে বিশেষ রহম আর ফজল রয়েছে,তার উসীলা গ্রহণ করে করে দু'আ করা।কোনো ব্যক্তি বিশেষের ব্যক্তিত্বের উসীলা গ্রহণ করে দু'আ করা যাবে না। এরকম আকিদা-বিশ্বাস রেখে দু'আ করা শিরকের পর্যায়ভুক্ত।তবে উক্ত ব্যক্তির নেককাজের উসীলা গ্রহণ করে দু'আ করা যাবে।যেমন গুহায় আটকে যাওয়া তিন ব্যক্তি তারা তাদের নেককাজের উসীলা গ্রহণ করে নাজাত পেয়েছিলো।
এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- 1956  

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
আল্লাহর রাসূল সাঃ এর ব্যক্তিত্বের উসিলা গ্রহণ করে দুআ করা জায়েয। এছাড়া অন্যান্যদের উসিলা গ্রহণ করে দুআ করার অর্থ এই যে, উক্ত ব্যক্তিবর্গের নেক কাজের উসিলা গ্রহণ করা হবে। তবে কোনো ব্যক্তি বিশেষের উসিলা গ্রহণ করে দুআ করা যাবে না। 

(২) আপনার ঐ বান্ধবীর যেহেতু ইচ্ছা আছে যে, সে ইসলাম ও দেশ এবং মুসলমানের খেদমত করবে, তাই তার জন্য সহশিক্ষা গ্রহণ নাজায়েয হবে না। সে নিজ চক্ষুকে হেফাজতে রেখে গায়রে মাহরাম থেকে নিজেকে নিরাপদ দূরত্বে রেখে শিক্ষাগ্রহণ চালিয়ে যাবে। এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- 434 

(৩) আল্লাহ,রাসূল, কুরআন এই তিনটি নিয়ে আপনার মত জনসাধারণ নিজ ইবাদত পরিচালনা করতে পারবে না। বরং এক্ষেত্রে যেকোনো একজন ইমামের অনুসরণ অত্যাবশ্যক। তাই আপনি যেকোনো একজন ইমামের অনুসরণ করবেন। এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- 402 

(৪) আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত,
وَعَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ مَنْ جَلَسَ فِي مَجْلِسٍ فَكَثُرَ فِيهِ لَغَطُهُ فَقَالَ قَبْلَ أَنْ يَقُومَ مِنْ مَجْلِسِهِ ذَلِكَ : سُبْحَانَكَ اللَّهُمَّ وَبِحَمْدِكَ أَشْهَدُ أنْ لاَ إلهَ إِلاَّ أنْتَ أَسْتَغْفِرُكَ وَأَتُوبُ إلَيْكَ، إِلاَّ غُفِرَ لَهُ مَا كَانَ فِي مَجْلِسِهِ ذَلِكَ رواه الترمذي، وقال حديث حسن صحيح
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি এমন সভায় বসে, যাতে খুব বেশি হৈ-হল্লা হয়, অতঃপর যদি উক্ত সভা ত্যাগ করে চলে যাওয়ার আগে এই দু’আ পড়ে, ’’সুবহা-নাকাল্লা-হুম্মা অবিহামদিকা আশহাদু আল্লা ইলা-হা ইল্লা আন্তা আস্তাগফিরুকা অ আতূবু ইলাইক্। (অর্থাৎ, তোমার পবিত্রতা বর্ণনা করি হে আল্লাহ! তোমার প্রশংসার সাথে। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, তুমি ছাড়া কোন সত্য উপাস্য নেই। আমি তোমার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করছি এবং তোমার দিকে তওবা (প্রত্যাবর্তন) করছি।) তাহলে উক্ত মজলিসে কৃত অপরাধ তার জন্য ক্ষমা ক’রে দেওয়া হয়। (তিরমিযী- ৩৪৩৩)

(৫) এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- 4467 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...