জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
(০১)
এর দরুন যদি শারিরিক কোনো ক্ষতি হয়,তাহলে তাহা জায়েজ হবেনা।
বিজ্ঞ মুসলিম চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী যদি সেটা শারিরিক কোনো ক্ষতি না করে, তাহলে হজ্বের সময় ঔষধ খেয়ে মাসিক বন্ধ রাখার বৈধতা রয়েছে।
বিস্তারিত জানুনঃ-
(০২)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ-
عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ: خَرَجْنَا مَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَا نَذْكُرُ إِلَّا الْحَجَّ فَلَمَّا كُنَّا بِسَرِفَ طَمِثْتُ فَدَخَلَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَأَنَا أَبْكِي فَقَالَ: «لَعَلَّكِ نَفِسْتِ؟» قُلْتُ: نَعَمْ قَالَ: «فَإِنَّ ذَلِكِ شَيْءٌ كَتَبَهُ اللَّهُ عَلَى بَنَاتِ آدَمَ فَافْعَلِي مَا يَفْعَلُ الْحَاجُّ غَيْرَ أَنْ لَا تَطُوفِي بِالْبَيْتِ حَتَّى تَطْهُرِي»
‘আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে (হজের উদ্দেশে) রওনা হলাম। তখন আমরা হজ্জ/হজ ছাড়া অন্য কিছুর (‘উমরার) তালবিয়াহ্ পড়তাম না। আমরা ‘সারিফ’ নামক স্থানে পৌঁছলে আমার ঋতুস্রাব শুরু হয়ে গেলো। এমন সময় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার কাছে আসলেন। আমি হজ্জ/হজ করতে পারবো না বিধায় কাঁদছিলাম। (কাঁদতে দেখে) তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, মনে হয় তোমার ঋতুস্রাব শুরু হয়েছে। আমি বললাম, হ্যাঁ! তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, এটা এমন বিষয় যা আল্লাহ তা‘আলা আদম-কন্যাদের জন্য নির্ধারণ করেছেন। তাই হাজীগণ যা করে তুমিও তা করতে থাকো, তবে পবিত্র না হওয়া পর্যন্ত তুমি বায়তুল্লাহর তাওয়াফ থেকে বিরত থাকো।
(বুখারী ৩০৫, মুসলিম ১২১১, আহমাদ ২৬৩৪৪,মিশকাত ২৫৭২)
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
হায়েজ অবস্থায় শুধু তাওয়াফ করা নিষিদ্ধ। বাকি হজ্বের সকল কাজ হায়েজ অবস্থায় করা যাবে। যেমন উকুফে আরাফা, উকুফে মুযদাদলিফা, সা’য়ী, পাথর নিক্ষেপ ইত্যাদি।
হায়েজ হলেও হজ্ব ভঙ্গ করবে না। বরং তাওয়াফে যিয়ারাত ছাড়া বাকি কাজগুলো আদায় করবে। হায়েজ শেষ হলে তওয়াফে যিয়ারত করে নিবে।
কোনো মহিলা তাওয়াফে যিয়ারত ওযরের কারনে না করতে পারলে চুল কাটার বিধান ও হালাল হওয়ার বিধান হলো,সে পবিত্র হওয়ার পর তওয়াফে যিয়ারত করে তারপর চুল কাটবে ও হালাল হবে।
হ্যাঁ যদি এটি তার বিদায়ী তাওয়াফ হয়,সেক্ষেত্রে (হজ্বে কিরান ও তামাত্তু' এর ক্ষেত্রে) কুরবানীর পরেই চুল কাটতে পারবে ও হালাল হতে পারবে।
বিস্তারিত জানুনঃ-
(০৩)
মহিলারা বাসায় কোনো একটি ঘরকে নির্দিষ্ট সেই ঘরে ইতেকাফ করবে।
মহিলাদের ইতেকাফ বিদ'আত নয়।
রাসুলুল্লাহ সাঃ এর স্ত্রী গনও ইতেকাফ করতেন।
হযরত আয়েশা রাযি থেকে বর্ণিত,
ﻋَﻦْ ﻋَﺎﺋِﺸَﺔَ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻬَﺎ ﺯَﻭْﺝِ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺃَﻥَّ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲَّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻛَﺎﻥَ ﻳَﻌْﺘَﻜِﻒُ ﺍﻟْﻌَﺸْﺮَ ﺍﻷَﻭَﺍﺧِﺮَ ﻣِﻦْ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ ﺣَﺘَّﻰ ﺗَﻮَﻓَّﺎﻩُ ﺍﻟﻠَّﻪُ ، ﺛُﻢَّ ﺍﻋْﺘَﻜَﻒَ ﺃَﺯْﻭَﺍﺟُﻪُ ﻣِﻦْ ﺑَﻌْﺪِﻩِ
রাসূলুল্লাহ সাঃ ইহকাল ত্যাগ করার আগ পর্যন্ত রমজানের শেষ দশে এ'তেক্বাফ করতেন।অতঃপর উনার বিবিগণ এ'তেক্বাফ করেন।(সহীহ বোখারী-২০২৬,সহীহ মুসলিম-১১৭২)
ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়ায় বর্ণিত রয়েছে-
وَالْمَرْأَةُ تَعْتَكِفُ فِي مَسْجِدِ بَيْتِهَا إذَا اعْتَكَفَتْ فِي مَسْجِدِ بَيْتِهَا فَتِلْكَ الْبُقْعَةُ فِي حَقِّهَا كَمَسْجِدِ الْجَمَاعَةِ فِي حَقِّ الرَّجُلِ لَا تَخْرُجُ مِنْهُ إلَّا لِحَاجَةِ الْإِنْسَانِ كَذَا فِي شَرْحِ الْمَبْسُوطِ لِلْإِمَامِ السَّرَخْسِي
মহিলা চাইলে রমজানের শেষ দশে এ'তেকাফে বসতে পারবে।যখন সে তার ঘরের মসজিদে এ'তেকাফে বসে যাবে,তখন এই জায়গা তার জন্য মসজিদের সমতুল্য হয়ে যাবে,যেভাবে পুরুষদের জন্য জামে মসজিদ রয়েছে।সে প্রাকৃতিক প্রয়োজন ব্যতীত ঐ জায়গা থেকে আর বের হতে পারবে না।(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/২১১)
(০৪)
হ্যাঁ, এটা সহীহ কথা।
দশ কুরআন খতম এর সওয়াব পাওয়া যাবে, এই নিয়তে কেউ সুরা ইয়াসিন তিলাওয়াতের আমল করলে তাহা বিদআত হবেনা।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ-
عَنْ أَنَسٍ ، قَالَ : قَالَ النَّبِيُّ ﷺ : إِنَّ لِكُلِّ شَيْءٍ قَلْبًا، وَقَلْبُ القُرْآنِ يس ، وَمَنْ قَرَأَ يس كَتَبَ اللَّهُ لَهُ بِقِرَاءَتِهَا قِرَاءَةَ القُرْآنِ عَشْرَ مَرَّاتٍ
অর্থাৎ, আনাস রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ ﷺ বলেছেন, প্রত্যেক বস্তুর হৃদয় থাকে, কোরআনের হৃদয় হল সূরা ইয়াসিন। যে ব্যক্তি একবার সূরা ইয়াসিন পড়বে, মহান আল্লাহ তাকে দশবার সমগ্র কুরআন পড়ার সওয়াব দান করবেন।
(জামি’ তিরমিযী (হাদীস নং ৬৩৪৬)