আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
144 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (7 points)
আস্সালামু আলাইকুম
আমি একজন মেয়ে। আমরা ৪ ভাই বোন, বড়বোন তারপর আমি আর ছোট ২ ভাই। আমার বাবার আগে একটা হালাল ব্যবসা ছিলো।কিন্তু ব্যবসা চালানোর জন্য বিভিন্ন এনজিও থেকে ক্ষুদ্র ঋন নিত।গ্রামে এটা প্রচলিত।পাশাপাশি বেশি সমস্যায় পড়লে মানুষের থেকে সুদে টাকা আনতো।পরে আস্তে আস্তে সেটা পরিশোধ করতো।একটা সময় পর আর সব কিছু সামলাতে পারে নি।ঋনের বোঝায় জর্জরিত হয়ে যায়। আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহ যখন আমাকে দ্বীনের বুঝ দেয় তখন বুঝতে পারি সুদ দেওয়া যেমন পাপ নেওয়া ও সমান।যদি ও আমরা সুগের ব্যবসা করি না।কিন্তু সেভাবে তো টাকা নিছি।তাই আমি পড়াশোনার পাশাপাশি টিউশনের টাকা দিয়ে সেগুলো শোধ করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।প্রায় ৩ বছর ধরে আমি এ ঋন শোধ করার চেষ্টা করছি।কিন্তু যেহেতু পরিবারের উপার্জন ক্ষম কেউ নাই তাই আমার ভাইদের কে প্রবাসে পাঠানোর জন্য আবার সেইম ভাবে মানুষের কাছে ঋন করে। আমি এখনো সব ঋন শোধ করার চেষ্টা করে যাচ্ছি। ভাইদের পাঠানোর সময় এভাবে ঋন আনতে রাজি হয়েছি।ভেবেছিলাম তাহলে ওরা কাজ করে এ পাপ থেকে ইনশাআল্লাহ মুক্তি পাবো।আমার স্বামীর সাথে ও কারনে আমার সম্পর্ক খুব খারাপ। বিয়ের সময় আমার পড়াশোনা, টিউশন করানো মেনে নিলেও এখন সে আর মানতে চায় না।কিন্তু আমার বাবাকে এই ঋনের বোঝার মধ্যে ফেলে রাখতেও পারছি না।

আমার আল্লাহ ভালো জানেন আমি কতটা চেষ্টা করছি এই সুদী ঋন শোধ করার।কিন্তু কোনো ভাবে পারছি না। ৩ বছর ধরে ও শেষ করতে পারি নি।আমার আল্লাহ কি এতে আমাদের মাফ করবেন না? আমরা তো চেষ্টা করছি? আল্লাহ কি আমাদের সুদের সাথে জড়িত থাকার কারনে শাস্তি দিবেন? বা আমরা এই অবস্থায় কি করতে পারি।এই পাপ থেকে বাঁচার জন্য। যত চেষ্টা করছি বের হতে তত যেনো আরো জড়িয়ে যাচ্ছি।

1 Answer

0 votes
by (573,870 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

শরীয়তের বিধান মতে সূদ দেওয়া,গ্রহন করা,তাতে সহযোগিতা করা সবই হারাম।

কুরআনে কারীমে ইরশাদ হচ্ছে-

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اتَّقُوا اللَّهَ وَذَرُوا مَا بَقِيَ مِنَ الرِّبَا إِن كُنتُم مُّؤْمِنِينَ [٢:٢٧٨] 

হে ঈমানদারগণ,তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং সুদের যে সমস্ত বকেয়া আছে,তা পরিত্যাগ কর,যদি তোমরা ঈমানদার হয়ে থাক। [সূরা বাকারা-২৭৮] 

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَأْكُلُوا الرِّبَا أَضْعَافًا مُّضَاعَفَةً ۖ وَاتَّقُوا اللَّهَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ [٣:١٣٠] 

হে ঈমানদারগণ! তোমরা চক্রবৃদ্ধি হারে সুদ খেয়ো না। আর আল্লাহকে ভয় করতে থাক, যাতে তোমরা কল্যাণ অর্জন করতে পারো। [সুরা আলে ইমরান-১৩০] 

হাদিস শরিফে  এসেছে-

لَعَنَ رَسُولُ اللهِ ﷺ آكل الربا وموكله وكاتبه وشاهديه، وقال : هم سواء.

আল্লাহর রাসূল ﷺ সুদখোর, সুদদাতা, সুদের লেখক এবং তার উপর সাক্ষীদ্বয়কে অভিশাপ করেছেন, আর বলেছেন, ওরা সকলেই সমান। (মুসনাদে আহমাদ ৩৮০৯)

আবূ হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
الرِّبَا سَبْعُونَ حُوبًا أَيْسَرُهَا أَنْ يَنْكِحَ 
الرَّجُلُ أُمَّهُ

আবু হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত; নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, সুদ (পাপের দিক থেকে) ৭০ প্রকার। এর মধ্যে সবচেয়ে ছোট (পাপের) সুদ হল মায়ের সঙ্গে ব্যভিচার করা! (অর্থাৎ সুদ খাওয়ার গোনাহ মায়ের সাথে ব্যভিচার করার চেয়ে ৭০ গুণ বেশী।)

(ইবনে মাজাহ ২২৭৪ , হাকেম ২/৩৭, বাইহাক্বীর শুআবুল ঈমান ৫৫২০-৫৫২২, ইবনে আবী শাইবাহ ২২০০৫, সহীহ তারগীব ১৮৫৮)

অপর হাদিসে এসেছে, আব্দুল্লাহ ইবন হানযালা রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
دِرْهَمٌ رِبًا يَأْكُلُهُ الرَّجُلُ وَهُوَ يَعْلَمُ أَشَدُّ مِنْ سِتَّةٍ وَثَلَاثِينَ زَنْيَةً

জেনে-শুনে এক দিরহাম পরিমাণ সুদ খাওয়া আল্লাহর নিকট ৩৬ জন নারীর সাথে ব্যভিচারের চাইতে অধিক গুনাহের কাজ। (মুসনাদে আহমাদ ২১৪৫০)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
এক্ষেত্রে ঋন পরিশোধ এর পাশাপাশি মহান আল্লাহর কাছে খালেস দিলে তওবা করতে হবে।

উল্লেখ্য, এক্ষেত্রে তো ঋন আপনি নেননি।
আপনার বাবা/ভাই নিয়েছে।

সুতরাং এর দায়ভার আপনার উপর আসবেনা।

পরামর্শ থাকবে,স্বামীর কথা মেনে জীবন পরিচালনা করতে। 

স্বামীর নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বাবার ঋন পরিশোধ এর দায়িত্ব শরীয়ত আপনাকে দেয়নি।

এক্ষেত্রে স্বামীর নিষেধাজ্ঞাই অগ্রাধিকার পাবে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...