কোরবানি বিষয়ক মাসআলা

Question

আসসালামুয়ালাইকুম


আমার শাশুড়ি ছাগলের গোশ খাইনা। তার জন্য আমার আমার স্বামী গরুর কুরবানী দিতে চাই ভাগে। আমাদের একটু আর্থিক সমস্যা এজন্য আমি তাকে পরামর্শ দিয়েছিলাম যে ছোট্ট দেখে একটা ছাগল কোরবানির দিতে গরুর কোরবানির ভাগাতে পেরে উঠতে ছিলাম না একটা ছাগলের অন্তত গরুর ভাঙ্গার তুলনায় একটু কম পড়বে যাতে কোরবানিটা হয় এই উদ্দেশ্যে। আমার স্বামীর মনের উদ্দেশ্য থাকে সে চাকরি করে সে সারা বছর কোরবানি না দিলে মান সম্মানের একটা বিষয় থাকে, তারপর তার মা গরুর গোশ ছাড়া ছাগলের গোস খায় না সেজন্য তার গরু কোরবানি দেয়া লাগবে এই ধরনের উদ্দেশ্য নিয়ে সে কুরবানীতে নামে কিন্তু আমি তাকে পরামর্শ নিয়েছিলাম আমার শাশুড়ির উদ্দেশ্যে তাকে ২ কেজি গরুর গোশ কিনে এনে দিতে সে যেহেতু খায় না আর কোরবানির নিয়ত করতে বলছিলাম এক আল্লার নামে সে তার মাকে খাওয়ানোর উদ্দেশ্যে ছাগল কোরবানি দিতে চায় না।


আমার স্বামী দুই ভাই মিলে একভাগ কোরবানি দিতে চাই এটা কতটুকু যুক্তি যত ইসলামের শরীয়ত অনুযায়ী?

দুই ভাই মিলে একভাগ নিয়ে সেটা তার বাবার নামে কোরবানি দিতে চাই এটা কতটুকু সঠিক শরীয়তের বিধান অনুযায়ী?

Answer 1

জবাবঃ-

وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 

بسم الله الرحمن الرحيم

https://www.ifatwa.info/48120/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ- 

গরু,মহিষ,উট,এসব প্রানীতে সর্বোচ্চ সাত ভাগে কুরবানী দেয় যায়।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

  

حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا مَالِكٌ، ح وَحَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، - وَاللَّفْظُ لَهُ - قَالَ قَرَأْتُ عَلَى مَالِكٍ عَنْ أَبِي الزُّبَيْرِ عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ قَالَ نَحَرْنَا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَامَ الْحُدَيْبِيَةِ الْبَدَنَةَ عَنْ سَبْعَةٍ وَالْبَقَرَةَ عَنْ سَبْعَةٍ .

জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, হুদাইবিয়ার বছর (৬ষ্ঠ হিজরী) আমরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–এর সাথে প্রতি সাতজনের পক্ষ থেকে একটি উট এবং প্রতি সাতজনের পক্ষ থেকে একটি গরু কুরবানী করেছি। (মুসলিম  ৩০৭৬.ই.ফা. ৩০৫১, ই.সে. ৩০৪৮)

وَحَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، أَخْبَرَنَا أَبُو خَيْثَمَةَ، عَنْ أَبِي الزُّبَيْرِ، عَنْ جَابِرٍ، ح. وَحَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ يُونُسَ، حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ، حَدَّثَنَا أَبُو الزُّبَيْرِ، عَنْ جَابِرٍ، قَالَ خَرَجْنَا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مُهِلِّينَ بِالْحَجِّ فَأَمَرَنَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنْ نَشْتَرِكَ فِي الإِبِلِ وَالْبَقَرِ كُلُّ سَبْعَةٍ مِنَّا فِي بَدَنَةٍ .

জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমরা হাজ্জের ইহরাম বেঁধে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে রওনা হলাম। তিনি আমাদেরকে প্রতিটি উট বা গরু সাতজনে মিলে কুরবানী করার নির্দেশ দিলেন। (মুসলিম ৩০৭৭.ই.ফা. ৩০৫২, ই.সে. ৩০৪৯)

শরীয়তের বিধান হলো যদি কেউ আল্লাহ তাআলার হুকুম পালনের উদ্দেশ্যে কুরবানী না করে শুধু গোশত খাওয়ার নিয়তে কুরবানী করে তাহলে তার কুরবানী সহীহ হবে না। তাকে অংশীদার বানালে শরীকদের কারো কুরবানী হবে না। তাই অত্যন্ত সতর্কতার সাথে শরীক নির্বাচন করতে হবে। (বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০৮, কাযীখান ৩/৩৪৯)

فتاوی شامی (6/ 326)

'' قد علم أن الشرط قصد القربة من الكل''۔

সারমর্মঃ

জানা গেলো যে সকলের হতে আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের নিয়ত করা শর্ত।

الفتاوى الهندية (5/ 304)

'' وإن كان كل واحد منهم صبياً أو كان شريك السبع من يريد اللحم أو كان نصرانياً ونحو ذلك لا يجوز للآخرين أيضاً، كذا في السراجية

সারমর্মঃ

যদি সাত শরীকের মধ্যে এমন কেউ থাকে,যে গোশত খাওয়ার নিয়ত করে,অথবা নাসারা থাকে,তাহলে অন্যদের থেকেও কুরবানী জায়েজ হবেনা।

(إن کان شریک الستة نصرانیا أو مریدا اللحم لم یجز عن واحد منہم لأن الإراقة لاتتجزأ ۔ (الدرالمختار، کتاب الأضحیة: ۹/۴۷۲، ط: زکریا) ۔

সারমর্মঃ

যদি ছয় শরীকের মধ্যে কেহ নাসারা হয়,বা গোশত খাওয়ার নিয়ত করে,তাহলে কাহারো থেকেই কুরবানী জায়েজ হবেনা। 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,

প্রশ্নের বিবরন মতে আপনার স্বামী গোশত খাওয়ার নিয়তে কুরবানী দিবেনা।

প্রয়োজনে কুরবানীর পশু জবাইয়ের আগে হলেও নিয়ত সংশোধন করে শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের নিয়তে কুরবানী দিবে।

নিয়ত শুদ্ধ করে নিবে।

আপনার স্বামী দুই ভাই মিলে একভাগ নিয়ে সেটা তার বাবার নামে কোরবানি দিলে এক্ষেত্রে তার বাবার নামে কুরবানী আদায় হবে।

কিন্তু তার নিজের ওয়াজিব কুরবানী আদায় হবেনা। এক্ষেত্রে পুনরায় কুরবানী করা তার উপর আবশ্যক হবে।

আপনার স্বামী কুরবানীর দিন গুলোতে নিজের নামে কুরবানী আদায় না করলে সেক্ষেত্রে পরবর্তীতে একটি কুরবানীর পশুর মূল্য গরিব মিসকিনদের মাঝে দান করে দিতে হবে।