আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
40 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (38 points)
closed by
১. আসসালামু আলাইকুম, সালাতে সূরা পড়ার যে তারতীব বা ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হয় সেটা কি আমি যে নিয়তে/ যে ওয়াক্তের সালাত পড়ছি সেই সম্পূর্ণ সালাত জুড়ে নাকি শুধু সালাম ফিরানোর আগ পর্যন্ত ধারাবাহিক ভাবে পড়তে হয়?


২. বিতির নামাজে শেষে দুআ কুনুত পড়ার আগে কি সূরা ইখলাস ই পড়তে হয় নাকি অন্য সুরাও পড়া যায়?
৩. খারাপ পিতামাতার নেক সন্তান কি পিতামাতার জন্য সদকায়ে জারিয়া হবে?

অর্থাৎ যদি পিতামাতা খুব প্র্যাক্টিসিং মুসলিম না হয়, কিন্তু তার সন্তানেরা বুঝ পেয়ে সঠিক পথে থাকে তাহলে কি তারা পিতা মাতার জন্য সদকায়ে জারিয়া হবে?

আবার পিতা মত ধার্মিক, সৎকর্মশীল, সন্তানদের ভালো ভাবে মানুষ করার চেষ্টা অন্তত করেছে অনেক, কিন্তু সন্তান বিপথে চলে গেছে, এমন ক্ষেত্রে পিতা মাতার জন্য সন্তান কি সদকায়ে জারিয়া হবে, নাকি গুনাহের জারিয়া? এতে তো পিতামাতার দোষ নাই সেভাবে।


৪. একটা পরিস্থিতি যেমন, যদি সন্তান অসুস্থ হয় আর ধৈর্য ধারণ করে কিন্তু মাতা পরিপূর্ণ ধৈর্য ধারণ না করতে পেরে অস্থির হয়ে যায়, তবে আল্লাহ্ কার দিকটা গ্রহণ করবেন? অস্থির হবার কারণে রোগ সারবেন না? নাকি সন্তান ধৈর্য ধারণ করেছে তাই সন্তুষ্ট হবেন?
closed

1 Answer

0 votes
by (678,880 points)
selected by
 
Best answer
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 

(০১)
এক নামাজের তাকবিরে তাহরিমা বলে নামাজ শুরু করার পর শুধু সালাম ফিরানোর আগ পর্যন্ত ধারাবাহিক ভাবে পড়তে হবে।

(০২)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ

 عن سعيد بن جبير عن ابن عباس رضي الله عنهما قال كان رسول الله صلى الله عليه وسلم يوتر بثلاث يقرأ في الأولى سبح اسم ربك الأعلى وفي الثانية قل يا ايها الكافرون وفي الثالثة قل هو الله احد.

সায়ীদ ইবনে জুবাইর রাহ. হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণনা করেন, ‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিতর নামায তিন রাকাত পড়তেন, প্রথম রাকাতে সূরা আ’লা, দ্বিতীয় রাকাতে সূরা কাফিরুন এবং তৃতীয় রাকাতে সূরা ইখলাছ পড়তেন।’
 (সুনানে দারেমী ১/৩১১, হাদীস : ১৫৯৭; সুনানে তিরমিযী ১/৬১; সুনানে নাসায়ী ১/২৪৯; সুনানে ইবনে মাজাহ পৃ. ৮৩; শরহু মাআনিল আছার তহাবী ১/১৪০; মুসান্নাফ ইবনে আবী শায়বা ১/২৯৯,আল-মুহাল্লা, ইবনে হায্ম ২/৫১) ইমাম নববী ‘খুলাসা’ কিতাবে বলেন, بإسناد صحيح অর্থাৎ হাদীসটি সহীহ সনদে বর্ণিত। (নাসবুর রায়া ২/১১৯)
  
★কিছু হাদিসে ৩য় রাকাতে সূরা ফালাক ও সূরা নাস পাঠ করার কথাও আছেঃ-

عن عبد العزيز بن جريج قال سألت عائشة رضي الله عنها بأي شيء كان يوتر رسول الله صلى الله عليه وسلم؟ قال يقرأ في الأولى بسبح اسم ربك الأعلى، وفي الثانية بقل يا ايها الكافرون وفي الثالثة بقل هو الله احد والمعوذتين. قال أبو عيسى هذا حديث حسن غريب. 

আবদুল আযীয ইবনে জুরাইজ বলেন, ‘আমি (উম্মুল মু’মিনীন) আয়েশা সিদ্দীকা রা.কে জিজ্ঞাস করেছি, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিতর নামাযে কী কী সূরা পাঠ করতেন? উম্মুল মু’মিনীন বলেছেন, তিনি প্রথম রাকাতে সূরা আ’লা, দ্বিতীয় রাকাতে সূরা কাফিরুন এবং তৃতীয় রাকাতে সূরা ইখলাছ ও ‘মুআওয়াযাতাইন’ (ফালাক ও নাস) পাঠ করতেন।’ 

(সুনানে আবু দাউদ ১/২০১; সুনানে তিরমিযী পৃ. ৬১; সুনানে ইবনে মাজাহ পৃ. ৭৩; মুসনাদে আহমদ ৬/২২৭)

 ‘عن عمرة عن عائشة رضي الله عنها أن رسول الله صلى الله عليه وسلم كان يوتر بثلاث. يقرأ في الركعة الأولى بسبح اسم ربك الأعلى، وفي الثانية قل يا ايها الكافرون وفي الثالثة قل هو الله احد وقل اعوذ برب الفلق وقل اعوذ برب الناس. هذا حديث صحيح على شرط الشيخين ولم يخرجاه. وقال الذهبي رواه ثقات عنه، وهو على شرط خ ـ م.

আমরা বিনতে আবদুর রহমান উম্মুল মু’মিনীন আয়েশা রা. থেকে বর্ণনা করেন, ‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিতর নামায তিন রাকাত পড়তেন। প্রথম রাকাতে সূরা আ’লা, দ্বিতীয় রাকাতে সূরা কাফিরুন এবং তৃতীয় রাকাতে সূরা ইখলাছ, সূরা ফালাক ও সূরা নাস পাঠ করতেন।’ 
(আলমুসতাদরাক ১/৩০৫)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
বিতির নামাজে শেষে দুআ কুনুত পড়ার আগে সূরা ইখলাস ই পড়তে হবে,অন্য সুরা পড়া যাবেনা,বিষয়টি এমন নহে।

এক্ষেত্রে আপনার ইচ্ছা,যেকোনো সুরা পড়া যাবে। কোনো সমস্যা নেই।
তবে উপরোক্ত হাদীস অনুযায়ী প্রত্যেক রাকাতে তিলাওয়াত করলে সুন্নাত আদায় হবে।

(০৩)
যদি পিতামাতা খুব প্র্যাক্টিসিং মুসলিম না হয়, কিন্তু তার সন্তানেরা বুঝ পেয়ে সঠিক পথে থাকে,দ্বীন মেনে চলে, তাহলে তারা পিতা মাতার জন্য সদকায়ে জারিয়া হবে।

★পিতা মাতা ধার্মিক, সৎকর্মশীল, সন্তানদের ভালো ভাবে মানুষ করার চেষ্টা করেছে অনেক, কিন্তু সন্তান বিপথে চলে গেছে, এমন ক্ষেত্রে পিতা মাতা সন্তানের বাল্যকাল থেকেই সাধ্যমতো সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে গিয়ে থাকলে,শাসন করে থাকলে, এতে যেহেতু পিতামাতার দোষ নেই,সুতরাং এমতাবস্থায় তার জন্য তার সন্তান গুনাহের জারিয়া হবেনা।

(০৪)
এমতাবস্থায় যেহেতু সন্তান ধৈর্য ধারণ করেছে, তাই আল্লাহ তায়ালা সন্তুষ্ট হবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...