আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
1,156 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (4 points)
edited by
আসসালামুআলাইকুম।

ফতোয়াতে দেখলাম যে হারাম কাজের শুরুতে বিসমিল্লাহ বলা প্রসংগে।এই ব্যপারে কয়েকটা প্রশ্ন

১-পরীক্ষার শুরুর সময়,অনেকে,বিসমিল্লাহ বলে শুরু করে।।অনেকসময় পরীক্ষায় এক জন আর একজনের থেকে দেখে।লিখে।।কিন্তু বিসমিল্লাহ তো বলা হয় পরীক্ষার জন্য।যখন দেখে লেখে তখন,তো আর বলে না।। এক্ষেত্রে কি কুফরি হবে?

২-কারো বাসায় গ্যাস লাইন বৈধ কিন্তু আপাতত নতুন চুলা পাশ হচ্ছে না।সেক্ষেত্রর অতিরিক্ত চুলা ব্যবহার করে সেখানে পানি গরম করে।। অন্য পানির সাথে মিশিয়ে গোসল করার সময় বিসমিল্লাহ বলা কি কুফরি হবে?

৩-অনেকসময় আমরা ভ্রমনে যাই।ভ্রমনে যাওয়ার সময় আয়াতুল কুরসী পড়ি বা যাত্রা সুন্দর হয়ার জন্য,দোয়া করি।সেক্ষেত্রে ভ্রমনে যাওয়ার সময় বা গিয়ে কোন হারাম কাজ হলে।কি কুফরি হবে?

৪-যে বিষয়ে হালাল,হারাম নিয়ে সন্দেহ আছে বা হারাম কিছু বিষয় নিয়ে মহান আল্লাহর কা৭ছে দোয়া করলে কি কুফরি হবে?

আর আমরা অনেক কাজ অনেক সময় করি যে গুলো অকাট্য হারাম না মিশ্রিত কাজ কিন্তু অভ্যাসগতভাবে  মনে মনে বিসমিল্লাহ বলে থাকি কিন্তু উপহাসের জন্য বলি থাকি এমন ভুলেও না।।।এক্ষেত্রে কি কুফরি হবে

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
edited by
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


কোনোভাবেই হারাম জিনিস খাওয়া যাবেনা,হারাম কাজ করা যাবেনা।

রাসূল সা. বলেন:

«إِنَّ اللهَ طَيِّبٌ لَا يَقْبَلُ إِلَّا طَيِّبًا، وَإِنَّ اللهَ أَمَرَ الْمُؤْمِنِينَ بِمَا أَمَرَ بِهِ الْمُرْسَلِينَ، فَقَالَ: (يَا أَيُّهَا الرُّسُلُ كُلُوا مِنَ الطَّيِّبَاتِ وَاعْمَلُوا صَالِحًا، إِنِّي بِمَا تَعْمَلُونَ عَلِيمٌ) [المؤمنون: 51] وَقَالَ: (يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا كُلُوا مِنْ طَيِّبَاتِ مَا رَزَقْنَاكُمْ) [البقرة: 172] ثُمَّ ذَكَرَ الرَّجُلَ يُطِيلُ السَّفَرَ أَشْعَثَ أَغْبَرَ، يَمُدُّ يَدَيْهِ إِلَى السَّمَاءِ، يَا رَبِّ، يَا رَبِّ، وَمَطْعَمُهُ حَرَامٌ، وَمَشْرَبُهُ حَرَامٌ، وَمَلْبَسُهُ حَرَامٌ، وَغُذِيَ بِالْحَرَامِ، فَأَنَّى يُسْتَجَابُ لِذَلِكَ؟»

‘‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআল পবিত্র। তিনি শুধু পবিত্র বস্ত্তই গ্রহণ করেন। তিনি মুমিনদের সেই আদেশই দিয়েছেন, যে আদেশ তিনি দিয়েছিলেন রাসূলগণের।’’ আল্লাহ তা’আলা বলেন : ‘‘হে ইমানদারগণ! তোমরা পবিত্র বস্ত্ত-সামগ্রী আহার কর, যেগুলো আমি তোমাদেরকে রুযী হিসেবে দান করেছি।’’ অতঃপর রাসূল সা. এমন এক ব্যক্তির কথা উল্লেখ করলেন, যে দীর্ঘ সফরে থাকা অবস্থায় এলোমেলো চুল ও ধূলি-ধুসরিত ক্লান্ত-শ্রান্ত বদনে আকাশের দিকে আল্লাহর দরবারে হাত তুলে প্রার্থনা করে ডাকছেঃ হে আমার প্রভূ! হে আমার প্রভূ! অথচ সে যা খায় তা হারাম, যা পান করে তা হারাম, যা পরিধান করে তা হারাম এবং হারামের দ্বারা সে পুষ্টি অর্জন করে। তার প্রার্থনা কিভাবে কবুল হবে?’
(সহীহ মুসলিম, হাদীস নং- ১০১৫)

নু'মান ইবনে বশির রাযি থেকে বর্ণিত

 ﺇِﻥَّ ﺍﻟْﺤَﻠَﺎﻝَ ﺑَﻴِّﻦٌ ، ﻭَﺇِﻥَّ ﺍﻟْﺤَﺮَﺍﻡَ ﺑَﻴِّﻦٌ، ﻭَﺑَﻴْﻨَﻬُﻤَﺎ ﻣُﺸْﺘَﺒِﻬَﺎﺕٌ ﻟَﺎ ﻳَﻌْﻠَﻤُﻬُﻦَّ ﻛَﺜِﻴﺮٌ ﻣِﻦَ ﺍﻟﻨَّﺎﺱِ ، ﻓَﻤَﻦِ ﺍﺗَّﻘَﻰ ﺍﻟﺸُّﺒُﻬَﺎﺕِ ﺍﺳْﺘَﺒْﺮَﺃَ ﻟِﺪِﻳﻨِﻪِ ، ﻭَﻋِﺮْﺿِﻪِ ، ﻭَﻣَﻦْ ﻭَﻗَﻊَ ﻓِﻲ ﺍﻟﺸُّﺒُﻬَﺎﺕِ ﻭَﻗَﻊَ ﻓِﻲ ﺍﻟْﺤَﺮَﺍﻡِ ، ﻛَﺎﻟﺮَّﺍﻋِﻲ ﻳَﺮْﻋَﻰ ﺣَﻮْﻝَ ﺍﻟْﺤِﻤَﻰ ، ﻳُﻮﺷِﻚُ ﺃَﻥْ ﻳَﺮْﺗَﻊَ ﻓِﻴﻪِ ، ﺃَﻟَﺎ ﻭَﺇِﻥَّ ﻟِﻜُﻞِّ ﻣَﻠِﻚٍ ﺣِﻤًﻰ ، ﺃَﻟَﺎ ﻭَﺇِﻥَّ ﺣِﻤَﻰ ﺍﻟﻠﻪِ ﻣَﺤَﺎﺭِﻣُﻪُ

নিশ্চয়ই হালাল স্পষ্ট এবং হারামও স্পষ্ট, আর এ উভয়ের মাঝে রয়েছে সন্দেহজনক বিষয়, অনেক লোকই সেগুলো জানে না। যে ব্যক্তি এসব সন্দেহজনক বিষয় থেকে দূরে থাকে সে তার দ্বীন ও মর্যাদাকে নিরাপদে রাখে, আর যে লোক সন্দেহজনক বিষয়ে পতিত হবে সে হারামের মধ্যে লিপ্ত হয়ে পড়বে। যেমন কোন রাখাল সংরক্ষিত চারণভূমির পাশে পশু চরায়, আশংকা রয়েছে সে পশু তার ভেতরে গিয়ে ঘাস খাবে। সাবধান! প্রত্যেক রাজারই সংরক্ষিত এলাকা থাকে, সাবধান আল্লাহর সংরক্ষিত এলাকা হলো তার হারামকৃত বিষয়গুলো। জেনে, রেখো, দেহের মধ্যে এক টুকরা গোশত আছে। যখন তা সুস্থ থাকে তখন সমস্ত দেহই সুস্থ থাকে। আর যখন তা নষ্ট হয়ে যায় তখন সমস্ত দেহই নষ্ট হয়ে যায়। স্মরণ রেখো, তা হলো 'কালব' হৃদয়।(সহীহ মুসলিম-১৫৯৯)
,
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই বোন, 
https://ifatwa.info/9340/  তে বলা হয়েছেঃ
যেই খাবারটি হারাম।সেটা খাওয়া যাবে না, খেলে গোনাহ হবে।এরকম খাবারে বিসমিল্লাহ বললে আল্লাহর সাথে ঠাট্টা বিদ্রুপ হবে,এমনটা জানার পরও যদি কেউ হারাম খাবারকে বিসমিল্লাহ বলে ভক্ষণ করে নেয়,তাহলে এটার দ্বারা অবশ্যই সে কাফির হয়ে যাবে।নতুবা গোনাহ হলেও সে কাফির হবে না।
,

প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে কোনো ছুরতেই কুফরী হবেনা।
তবে ২য় নং ছুরতে এবং হালাল হারাম মিশ্রিত কাজে যে অভ্যাসগত ভাবে বিসমিল্লাহ বলা হয়,উপহাস উদ্দেশ্য না হয়,তাতে কুফরি হবেনা ঠিকই,তবে  সতর্কতা মূলক বিসমিল্লাহ বলবেনা।
এটিও নাজায়েজ,গুনাহ হবে। 
কারন তাতে হারাম মিশ্রিত আছে। 
,
হারাম বা মাকরূহ কাজের শুরুতে বিসমিল্লাহ বলা হারাম বরং তা আল্লাহর সাথে ধৃষ্টতা প্রদর্শনের শামিল।
বিসমিল্লাহ বলার অর্থ উক্ত কাজে আল্লাহর সাহায্য ও বরকত কামনা করা। সুতরাং কেউ যদি আল্লাহর নিষিদ্ধ বা ঘৃণিত কাজে তার নিকট সাহায্য চায় বা বরকত কামনা করে তাহলে তা মহামহিম আল্লাহর সাথে বেয়াদবী করা হবে।

যেখানে হারাম কাজ করার আগে আল্লাহ তাআলার কথা স্বরণ করে সেখান থেকে দূরে সরে আসা আবশ্যক।
.
,
★হারাম কাজ করা,হারাম খাওয়ার ক্ষেত্রে বিধান হলোঃ
(০১) যদি উপহাস,ঠাট্রা করে বিসমিল্লাহ বলে,তাহলে এটি স্পষ্ট কুফরী।
(০২) যদি উপহাস বা ঠাট্রার নিয়ত না থাকে,তাহলে কাফের হবেনা,তবে গুনাহগার হবে।


قال الطحطاوي في حاشيته على "مراقي الفلاح"، ص5: "والإتيان بالبسملة عمل يصدر من المكلف، فلا بد أن يتصف بحكم, فتارة يكون فرضا كما عند الذبح... وتارة يكون واجبا، على القول بأنها آية من الفاتحة, وإن كان خلاف المذهب؛ لأن الأخبار الواردة فيها مع المواظبة تفيد الوجوب، وتارة يكون سنة كما في الوضوء, وأول كل أمر ذي بال، ومنه الأكل والجماع ونحوهما, وتارة يكون مباحا كما هي بين الفاتحة والسورة على الراجح, وفي ابتداء المشي والقعود مثلا؛ لأنها إنما تطلب لما فيه شرف، صونا عن اقتران اسمه تعالى بالمحقرات وتيسيرا على العبادة, فإن أتي بها في محقرات الأمور كلبس النعال على وجه التعظيم والتبرك فهو حسن. 
وتارة يكون الإتيان بها حراما، كما عند الزنا ووطء الحائض وشرب الخمر وأكل مغصوب أو مسروق قبل الاستحلال أو أداء الضمان.
والصحيح: أنه إن استحل ذلك عند فعل المعصية، كفر، وإلا؛ لا. وتلزمه التوبة، إلا إذا كان على وجه الاستخفاف، فيكفر أيضا...
واعلم أن المستحل لا يكفر إلا إذا كان المحرم حراما لعينه، وثبتت حرمته بدليل قطعي، وإلا، فلا. صرح به في الدرر عن الفتاوي في آخر كتاب الحظر" انتهى.
সারমর্মঃ যদি হারাম কাজের শুরুতে বিসমিল্লাহ বলা হালাল মনে করে,তাহলে সে কাফের হয়ে যাবে।
অন্যথায় কাফের হবেনা,তবে তওবা করা জরুরি হবে।
ঠাট্রা বিদ্রুপের নিয়তে বিসমিল্লাহ বললে কাফের হবে।    


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...