আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
44 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (3 points)
আসসালামু আলাইকুম,
১. আমি কয়েকদিন আগে স্বপ্নে দেখেছি, সাদা চেহারার কতোগুলো ছেলে আমার ক্ষতি করার জন্য ধাওয়া করতে করতে একটা জঙ্গলে নিয়ে গেছে। ঘন জঙ্গল অন্ধকার যেখানে আমি কখনো যাইনি, দেখিওনি।
আবার কাল স্বপ্নে দেখেছি, আবারও কতগুলো ছেলে আমার ক্ষতি করার জন্য ধাওয়া করেছে। আমি শুধু পালানোর চেষ্টা করি। এর আগেও এই স্বপ্ন দেখেছি কি না মনে নাই। বোধয় দেখেছি। কিন্তু প্রতিবারই ছেলেগুলোর থেকে পালাতে গিয়ে আমি ধরা পড়ে যাই। কিন্তু ছেলেগুলো কোন ক্ষতি করার আগে স্বপ্ন ভেঙে যায়। স্বপ্নে প্রচুর পরিমাণে ভয় পাই এবং ভয়ে ঘুম ভেঙে যায়।

২. আবার কয়েকদিন আগে স্বপ্ন দেখেছি, আমি নাপাকির উপর দিয়ে হাঁটতেছি। তারপর ভয়ংকর খারাপ লোকের শ্রমিক হিসেবে কাজ করেছি। কাজ না করলে মেরে ফেলবে। কিন্তু তারপরেও কাজ শেষে তারা আমার শরীরের ভেতর মোটা লোহা ঢুকিয়ে মেরে ফেলে এবং কফিনে ভরে ফেলতেছে কিন্তু কফিনে ভরার আগেই ঘুম ভেঙে যায় (কফিনটা খুব সম্ভবত স্বর্ণের ছিলো)। এছাড়াও অনেক খারাপ স্বপ্ন দেখি অনেক মাস ধরে (যেকোন খারাপ স্বপ্ন দেখলেই আমার শরীর অবশ হয়ে যায়, শরীর ব্যথা করে, জ্বলে)

স্বপ্ন রাতে, দিনে, ভোর রাতে, সন্ধ্যা রাতে অর্থাৎ যখন ঘুমাই তখনই দেখি। এই স্বপ্নেগুলোর ব্যাখ্যা কী হতে পারে?

আমার কিছু সমস্যার কারণে রুকইয়াহ করতেছি। কিন্তু এই সমস্যা ঠিক হচ্ছে না।

আমি স্বপ্নগুলোর ব্যাখ্যা জানতে চাই

1 Answer

0 votes
by (682,440 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

ইসলামী দৃষ্টিতে স্বপ্ন তিন প্রকার। 
,
১. যা আল্লাহর পক্ষ থেকে বান্দাহকে দেখানো হয় যা কল্যানকর হয়।

২. শয়তানের পক্ষ হতে দেখানো হয় যাতে মানুষ খারাপ, মন্দ ভয়ংকর কিছু দেখে থাকে।
তবে শয়তান স্বপ্ন দেখানোর দ্বারা মানুষের কোন ক্ষতি করতে পারেনা।
,
ভয়ংকর স্বপ্ন দেখলে দুশ্চিন্তার কোন কারন নেই। শয়তান মানুষকে দুশ্চিন্তায় ফেলার জন্যই এমন সব আজব আজব জিনিস দেখায়। এমনটা দেখলে ঘুম থেকে জেগে বাম দিকে থুথু ফেলে আস্তাগফিরুল্লাহ বলতে হয়। 

৩. মানুষের কল্পনা। অর্থাৎ মানুষ যা কল্পনা করে স্বপ্নে তা দেখতে পায়। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ، عَنْ مَالِكٍ، عَنْ إِسْحَاقَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي طَلْحَةَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " الرُّؤْيَا الْحَسَنَةُ مِنَ الرَّجُلِ الصَّالِحِ جُزْءٌ مِنْ سِتَّةٍ وَأَرْبَعِينَ جُزْءًا مِنَ النُّبُوَّةِ ".

আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা (রহঃ) ... আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ নেককার লোকের ভাল স্বপ্ন নবুয়তের ছেচল্লিশ ভাগের এক ভাগ।
(বুখারী শরীফ ৬৫১২)

حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ يُونُسَ، حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ، حَدَّثَنَا يَحْيَى ـ هُوَ ابْنُ سَعِيدٍ ـ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا سَلَمَةَ، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا قَتَادَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " الرُّؤْيَا مِنَ اللَّهِ، وَالْحُلْمُ مِنَ الشَّيْطَانِ ".

আহমাদ ইবনু ইউনুস (রহঃ) ... আবূ কাতাদা (রাঃ) সূত্রে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ ভাল স্বপ্ন আল্লাহর পক্ষ থেকে হয়ে থাকে আর অশুভ স্বপ্ন শয়তানের পক্ষ থেকে হয়ে থাকে।
(৬৫১৩)

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، حَدَّثَنِي ابْنُ الْهَادِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ خَبَّابٍ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، أَنَّهُ سَمِعَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " إِذَا رَأَى أَحَدُكُمْ رُؤْيَا يُحِبُّهَا فَإِنَّمَا هِيَ مِنَ اللَّهِ، فَلْيَحْمَدِ اللَّهَ عَلَيْهَا، وَلْيُحَدِّثْ بِهَا، وَإِذَا رَأَى غَيْرَ ذَلِكَ مِمَّا يَكْرَهُ، فَإِنَّمَا هِيَ مِنَ الشَّيْطَانِ، فَلْيَسْتَعِذْ مِنْ شَرِّهَا، وَلاَ يَذْكُرْهَا لأَحَدٍ، فَإِنَّهَا لاَ تَضُرُّهُ ".

আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) ... আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছেন, যখন তোমাদের কেউ এমন স্বপ্ন দেখে, যা সে পছন্দ করে, তাহলে তা আল্লাহর পক্ষ থেকে। তাই সে যেন এর উপর আল্লাহর প্রশংসা করে এবং অন্যের কাছে তা বর্ণনা করে। আর যদি এর বিপরীত অপছন্দনীয় কিছু দেখে, তাহলে তা শয়তানের পক্ষ থেকে। তাই সে যেন এর অনিষ্টতা থেকে আল্লাহর আশ্রয় চায়। আর কারো কাছে যেন তা বর্ণনা না করে। তাহলে এ স্বপ্ন তার কোন ক্ষতি সাধন করবে না।
(বুখারী শরীফ ৬৫১৪)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন!
প্রশ্নে উল্লেখিত দুটি স্বপ্নই ভয়ানক স্বপ্নের অন্তর্ভুক্ত। 
আপনি এ স্বপ্নের কথা কাউকে বলবেননা। 
বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহর কাছে পানাহ চাইবেন,রাতে ঘুমানো আগে অযু করে পবিত্র কাপড়,পবিত্র বিছানায় তিন কুল পড়ে শরীরে ফুক দিয়ে আয়াতুল কুরসি পড়ে ঘুমাবেন।
একাকী ও পূর্ণ অন্ধকার রুমে না ঘুমানোর চেষ্টা করবেন।

আপনার জন্য করণীয় হল,
ইসলামের প্রত্যেকটি বিধানকে গুরুত্ব সহকারে মেনে চলুন।

বিশেষকরে সঠিক সময়ে সালাত আদায় করুন এবং চাইলে কিছুটা দান-সদকাহ করতে পারেন।

কেননা হাদীসে এসেছে....
হযরত কা'ব ইবনে উজরাহ রাযি থেকে বর্ণিত,
ﻭﻋﻦ ﻛﻌﺐ ﺑﻦ ﻋﺠﺮﺓ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ﻗﺎﻝ : ﻗﺎﻝ ﻟﻲ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ : ( ﻭﺍﻟﺼﺪﻗﺔُ ﺗُﻄْﻔِﺊُ ﺍﻟﺨﻄﻴﺌﺔ ﻛﻤﺎ ﻳُﻄْﻔِﺊُ ﺍﻟﻤﺎﺀُ ﺍﻟﻨﺎﺭَ ) ﺍﻟﺘﺮﻣﺬﻱ ( 614 )
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাহিসসালাম আমাকে বলেছেন,সদকাহ ভূলভ্রান্তিকে এমনভাবে মিটিয়ে দেয় যেভাবে পানি আগুনকে মিটিয়ে দেয়। (তিরমিযি-৬১৪)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...