আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
46 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (2 points)
আমি জানতে পেরেছি যে একটি Hadith আছে যে মানুষ যদি বাধ্য হয়ে কোনো গুনাহ করে তাহলে তাতে তার গুনাহ থাকে না হালাল হয়ে যায়। এটি কি সহীহ হাদীস? শেইখ আলবানি এবং ইমাম ইবন হাজার এর মত কি এই hadith এর বিষয়ে?

এখানে বাধ্য বলতে কি বুঝানো হয়েছে? শুধু অন্য কোনো মানুষ বাধ্য করলে? নাকি নফসের কারণে বাধ্য হওয়া এবং অন্য আরো কারণে (সব কারণে উদাহরণ দেওয়া সম্ভব নয় দয়া করে বুঝে নিন) বাধ্য হওয়া o er আওতায় পড়বে?

 যেমন কেউ যদি সিগারেট বা হস্তমৈথূন e অভ্যস্ত হয় এবং ছাড়ার চেষ্টা করে কিন্তু অনেক দিন পর গুরতর মানসিক চাপ যার কারনে মনে হয় শরীর ফেটে পড়বে । সে ক্ষেত্রে তা হালাল হবে?

1 Answer

0 votes
by (678,880 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
"মানুষ যদি বাধ্য হয়ে কোনো গুনাহ করে তাহলে তাতে তার গুনাহ থাকে না হালাল হয়ে যায়"

★এটা সম্পূর্ণ ভুল ও বানোয়াট কথা। কোনো হাদীসেই এমন কথা নেই।

কেউ যদি সিগারেট বা হস্তমৈথূন এ  অভ্যস্ত হয় এবং ছাড়ার চেষ্টা করে কিন্তু অনেক দিন পর গুরতর মানসিক চাপ যার কারনে মনে হয় শরীর ফেটে পড়বে । সে ক্ষেত্রেও তা হালাল হবেনা।

তবে বিশেষ প্রয়োজনে জীবন বাঁচাতে অবৈধ খাবার সহ কিছু নির্দিষ্ট কাজের অনুমতি শরীয়তে রয়েছে।

সে সংক্রান্ত বিস্তারিতঃ-

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ- 
فَمَنِ اضۡطُرَّ غَیۡرَ بَاغٍ وَّ لَا عَادٍ فَاِنَّ اللّٰہَ غَفُوۡرٌ رَّحِیۡمٌ ﴿۱۱۵﴾ 

কিন্তু কেউ অবাধ্য বা সীমালংঘনকারী না হয়ে অনন্যোপায় হলে আল্লাহ্ তো ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
(সুরা নাহাল ১১৫)

 فَمَنِ اضۡطُرَّ فِیۡ مَخۡمَصَۃٍ غَیۡرَ مُتَجَانِفٍ لِّاِثۡمٍ ۙ فَاِنَّ اللّٰہَ غَفُوۡرٌ رَّحِیۡمٌ ﴿۳﴾ 

অতঃপর কেউ পাপের দিকে না ঝুঁকে ক্ষুধার তাড়নায় বাধ্য হলে তবে নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
(সুরা মায়েদা ০৩)

জীবন বাঁচাতে অবৈধ খাবার যখন বৈধ : জীবন বাঁচাতে প্রয়োজনে হারাম বস্তুও হালাল হয়ে যায়। মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ মৃত জন্তু, রক্ত, শূকরের গোশত এবং যার ওপর (জবাই করার সময়) আল্লাহ ছাড়া অন্যের নাম উচ্চারিত হয়েছে তা তোমাদের জন্য হারাম করেছেন। কিন্তু যে অনন্যোপায় অথচ নাফরমান কিংবা সীমা লঙ্ঘনকারী নয়, তার কোনো পাপ হবে না।

নিশ্চয়ই আল্লাহ অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৭৩)
জীবন বাঁচাতে মৃত বস্তু খাওয়া : জীবন বাঁচাতে মৃত বস্তু খাওয়ার ব্যাপারে একটি ঘটনা হাদিসের কিতাবে পাওয়া যায়। জাবের ইবনে সামুরা (রা.) থেকে বর্ণিত, এক ব্যক্তি তার পরিবার-পরিজন নিয়ে হাররা নামক স্থানে যাত্রাবিরতি করল। অন্য এক ব্যক্তি তাকে বলল, আমার একটি উট হারিয়ে গেছে।

তুমি তা পেলে ধরে রাখবে। সে উটটি পেয়ে গেল। কিন্তু মালিককে পেল না। উটটি অসুস্থ হয়ে পড়লে তার স্ত্রী তাকে বলল, এটা জবাই করো, কিন্তু সে জবাই করতে সম্মত হলো না। উটটি মারা গেলে তার স্ত্রী বলল, এর চামড়া ছাড়াও।
তাহলে এর গোশত ও চর্বি আগুনে জ্বালিয়ে খেতে পারব। স্বামী বলল, রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে প্রশ্ন করে দেখি। সে তাঁর কাছে এসে এ সম্পর্কে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, তোমার কাছে এমন কিছু কি আছে, যা তোমাকে মুর্দা খাওয়া থেকে মুখাপেক্ষিহীন করতে পারে? সে বলল, না। তিনি বলেন, তবে তা খাও। বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর উটের মালিক ফিরে এলে সে তাকে ঘটনা অবহিত করল। সে বলল, তুমি জবাই করলে না কেন? সে বলল, তোমার উট জবাই করতে লজ্জাবোধ করেছি। (আবু দাউদ, হাদিস : ৩৮১৬)

জীবন বাঁচাতে আবশ্যিক বিষয় ছেড়ে দেওয়া : জীবন বাঁচানোর জন্য ওয়াজিব ছেড়ে দেওয়ার অবকাশ আছে। জাবের (রা.) বলেন, একবার আমরা কোনো এক সফরে বের হলে আমাদের মধ্যকার একজনের মাথা পাথরের আঘাতে ফেটে যায়। ওই অবস্থায় তার স্বপ্নদোষ হলে সে সাথীদের জিজ্ঞেস করল, তোমরা কি আমার জন্য তায়াম্মুমের সুযোগ গ্রহণের অনুমতি পাও? তারা বলল, যেহেতু তুমি পানি ব্যবহার করতে সক্ষম, তাই তোমাকে তায়াম্মুম করার সুযোগ দেওয়া যায় না। অতএব সে গোসল করল। ফলে সে মৃত্যুবরণ করল। আমরা নবী (সা.)-এর কাছে এলে তাঁকে বিষয়টি জানানো হলো। তিনি বলেন, এরা অন্যায়ভাবে তাকে হত্যা করেছে। আল্লাহ এদের ধ্বংস করুন। তাদের যখন (সমাধান) জানা ছিল না, তারা কেন জিজ্ঞেস করে তা জেনে নিল না। কারণ অজ্ঞতার প্রতিষেধক হচ্ছে জিজ্ঞেস করা। ওই লোকটির জন্য তায়াম্মুম করাই যথেষ্ট ছিল। আর জখমের স্থানে ব্যান্ডেজ করে তার ওপর মাসাহ করে শরীরের অন্যান্য স্থান ধুয়ে ফেললেই যথেষ্ট হতো। (আবু দাউদ, হাদিস : ৩৩৬)

জীবন বাঁচাতে মুখে কুফরি শব্দ উচ্চারণ : জীবন বাঁচাতে প্রয়োজনে মুখে কুফরি শব্দ উচ্চারণ করার অবকাশ আছে। পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘কেউ ঈমান আনার পর আল্লাহকে অস্বীকার করলে এবং কুফরির জন্য হূদয় উম্মুক্ত রাখলে তার ওপর আপতিত হবে আল্লাহর গজব। এবং তার জন্য আছে মহাশাস্তি। তবে ওই ব্যক্তির জন্য নয়, যাকে কুফরির জন্য বাধ্য করা হয়; কিন্তু তার অন্তর ঈমানে অবিচল।’ (সুরা : নাহল, আয়াত : ১০৭)

জীবন বাঁচাতে মদ্যপান : কোনো ব্যক্তি যদি এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন হয় যে তার কাছে মদ ছাড়া আর কোনো খাবার বা পানীয় নেই এবং তার জীবন হুমকির মুখে পড়ে যায়, তাহলে ওই ব্যক্তির জন্য বিশেষ পরিস্থিতিতে মদ্যপান করা বৈধ। তবে শর্ত হলো, তৃপ্তির সঙ্গে তা পান করবে না। বরং জীবন বাঁচাতে যতটুকু প্রয়োজন ততটুকু গ্রহণ করবে। এ বিষয়ে চার মাজহাবের ইমামরা একমত। (ফাতাওয়া হিন্দিয়া : ৫/৪১২)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (2 points)
কেউ যদি সিগারেট বা হস্তমৈথূন এ অভ্যস্ত হয় এবং ছাড়ার চেষ্টা করে কিন্তু অনেক দিন পর গুরতর মানসিক চাপ যার কারনে মনে হয় শরীর ফেটে পড়বে । সে ক্ষেত্রেও তা হালাল হবেনা।
বুঝলাম হালাল হবেনা। কিন্তু এটা তো গুনাহ করার জন্য করছেনা। সে ক্ষেত্রে গুনাহ কি কম হবে?
by (2 points)
কেউ হস্তমৈথূন এ অভ্যস্ত হয় এবং ছাড়ার চেষ্টা করে কিন্তু অনেক দিন পর গুরতর মানসিক চাপ যার কারনে মনে হয় শরীর ফেটে পড়বে । 
বুঝলাম হালাল হবেনা। কিন্তু এটা তো গুনাহ করার জন্য করছেনা। সে ক্ষেত্রে গুনাহ কি কম হবে?
by (678,880 points)
গুনাহ হবে।
কম হবে কিনা,সেটা মহান আল্লাহ তায়ালা নির্ধারন করবেন।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...