আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
156 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (16 points)
আসসালামু আলাইকুম,
প্রশ্ন ১) শিরক বাদে যে কোনো গুনাহ তওবা না করে মারা গেলে আল্লাহ্ ক্ষমা চাইলে ক্ষমা করতেও পারে। এটা কি সঠিক?
প্রশ্ন ২)  হক কেউ নষ্ট করলে আল্লাহ্ তাকে কোনোদিনও কোনো অবস্থাতেই ক্ষমা করবে না, এটাও কি সঠিক?
প্রশ্ন ৩) নাকি গুনাহ এর severity বুঝানোর জন্য এমন বলা হইছে, বিশেষ পরিস্থিতিতে আল্লাহ্ চাইলেও ক্ষমা করতে পারে?
৪) আর এতো মানুষের হক নষ্ট করা এই ব্যক্তি যদি শুধু আল্লাহর কাছে তওবা করে মারা যায়, তাহলে আল্লাহ্ মাফ করবে কিনা?
৫) যেটাই হোক, এমন ব্যক্তিদেরকে কি বলা যাবে যে এদের আল্লাহ্ মাফ করবে না, জাহান্নামে যাবে?

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا آدَمُ بْنُ أَبِي إِيَاسٍ حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي ذِئْبٍ حَدَّثَنَا سَعِيدٌ الْمَقْبُرِيُّ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم مَنْ كَانَتْ لَهُ مَظْلَمَةٌ لأَخِيهِ مِنْ عِرْضِهِ أَوْ شَيْءٍ فَلْيَتَحَلَّلْهُ مِنْهُ الْيَوْمَ قَبْلَ أَنْ لاَ يَكُونَ دِينَارٌ وَلاَ دِرْهَمٌ إِنْ كَانَ لَهُ عَمَلٌ صَالِحٌ أُخِذَ مِنْهُ بِقَدْرِ مَظْلَمَتِهِ وَإِنْ لَمْ تَكُنْ لَهُ حَسَنَاتٌ أُخِذَ مِنْ سَيِّئَاتِ صَاحِبِهِ فَحُمِلَ عَلَيْهِ

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি তার ভাইয়ের সম্ভ্রমহানি বা অন্য কোন বিষয়ে যুলুমের জন্য দায়ী থাকে, সে যেন আজই তার কাছ হতে মাফ করিয়ে নেয়, সে দিন আসার পূর্বে যে দিন তার কোন দ্বীনার বা দিরহাম থাকবে না। সে দিন তার কোন সৎকর্ম না থাকলে তার যুলুমের পরিমাণ তা তার নিকট হতে নেয়া হবে আর তার কোন সৎকর্ম না থাকলে তার প্রতিপক্ষের পাপ হতে নিয়ে তা তার উপর চাপিয়ে দেয়া হবে।
(বুখারী শরীফ ২৪৪৯.৬৫৩৪) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২২৭০, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ২২৮৭)

বান্দার হক তাওবা দ্বারা মাফ হয় না আলোচ্য মালফূযে হযরত থানবী (রহ) বলেন, ‘তবে হকসমূহ মাফ হয় না।’ এখানে হক দ্বারা উদ্দেশ্য হলো বান্দার সমস্ত হক এবং আল্লাহ তা‘আলার ঐসমস্ত হক যা আদায় করা সম্ভব। যেমন নামায ছুটে গেছে, আর সে সুস্থ আছে, নামাযের কাযা করতে পারে, সুতরাং তার নামায শুধু তাওবা দ্বারা মাফ হবে না, বরং তা কাযা করতে হবে। রোযা ও হজ্জ-যাকাত সম্পর্কেও একই কথা। তো তাওবা দ্বারা কবীরা গোনাহ মাফ হয়ে যায়, এটা সত্য, তবে শুধু তাওবা দ্বারা বান্দার কোন হক মাফ হবে না, যতক্ষণ না তা আদায় করা হবে, কিংবা হকদার নিজে তা মাফ করে দেবে। সুতরাং পিছনে বান্দার যত হক পাওনা হয়েছে সেগুলো এবং আল্লাহর যে সমস্ত হক আদায় করা সম্ভব সেগুলো আদায় করা শুরু করতে হবে। 

এ দুই প্রকার হকের ক্ষেত্রে তাওবায় কোন কাজ হবে না। শুধু তাওবা দ্বারা এ দুই প্রকার হক মাফ হবে না, বরং পিছনের সমস্ত হক আদায় করা শুরু করতে হবে। 

তাওবা করার পর চিন্তা করে করে বের করতে হবে যে, আমার উপর কী কী হক ওয়াজিব ছিলো, হোক সেটা বান্দার হক, কিংবা আল্লাহর হক। তারপর সেগুলো আদায় করা শুরু করতে হবে, যার তরীকা এই যে, একটি খাতায় তালিকা তৈরী করো যে, আমার যিম্মায় অমুক অমুক হক রয়েছে, এই পরিমাণ নামায বা রোযা রয়েছে, যাকাত রয়েছে, অমুকের অমুকের এই এই করয ও পাওনা রয়েছে। আজ থেকে আমি এগুলো আদায় করা শুরু করছি। যদি সমস্ত হক আদায় করার আগে আমার মৃত্যু এসে যায় তাহলে আমার সম্পত্তি থেকে ঐ সকল ইবাদতের ফিদয়া এবং ঐ সকল করয যেন আদায় করে দেয়া হয়। তারপর লিখতে থাকো, কখন কী পরিমাণ আদায় হলো, আর কী পরিমাণ বাকি থাকলো।

হক আদায়ের এই চেষ্টায় মশগুল থাকা অবস্থায় যদি মৃত্যু এসে যায় তাহলে তার সম্পর্কে হযরত থানবী (রহ) বলছেন, আল্লাহর রহমতের কাছে আশা করা যায় যে, বাকি হক মাফ করে দেয়া হবে। মাফ করার তরীকা এই হবে যে, কেয়ামতের দিন তিনি হকদারদের বলবেন, দেখো, আমার এই বান্দা তোমাদের হক আদায় করা শুরু করেছিলো এবং যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছিলো, কিন্তু তার যিন্দেগি খতম হয়ে যাওয়ায় হক আদায়ের কাজ সে পুরা করতে পারেনি। এখন আমি তোমাদেরকে বড় বড় নেয়ামত দিচ্ছি, তোমরা খুশী হয়ে তার হক মাফ করে দাও।

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
(০১)
এটা সঠিক।

(০২)
এটাও সঠিক। তবে তওবার পাশাপাশি হক আদায়ের চেষ্টায় মশগুল থাকা অবস্থায় মারা গেলে উপরে উল্লেখিত পদ্ধতি আল্লাহ তায়ালা অবলম্বন করে মাফ করতেও পারেন।

(০৩)
বিশেষ পরিস্থিতিতে আল্লাহ তায়ালা ক্ষমা করতে পারেন।
তবে শিরক কারীকে বিশেষ পরিস্থিতিতেও মাফ করবেননা।

(০৪)
আল্লাহ তায়ালা মাফ করবেননা।

তবে তওবার পাশাপাশি হক আদায়ের চেষ্টায় মশগুল থাকা অবস্থায় মারা গেলে উপরে উল্লেখিত পদ্ধতি আল্লাহ তায়ালা অবলম্বন করে মাফ করতেও পারেন।

(০৫)
জাহান্নামী বলা যাবেনা।
কাহারো ব্যপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়ার কাজ মানুষের নয়।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...