আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
114 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (6 points)
আসসালামু আ'লাইকুম। আগেই আন্তরিক ক্ষমা প্রার্থনা করছি অনেক বড় লিখার কারণে, আফওয়ান।
উস্তাদ, আমি চাকুরী করবো না দেখে আমার পরিবার বিশেষ করে আমার মাহরাম অভিভাবক খুবই নাখোশ। তার উপর আমার অসুস্থতা আছে, আমার বয়স ২৭+, পরিবার থেকে বিয়ে দেখা হয় না, কারোরই তেমন চেষ্টা নাই, বিয়েও তেমন আসে না, আসলেও উনারা খুব একটা গায়ে লাগায় না গোছের হয়ে গেছে ব্যাপারটা। দো'আ করতে বললে বা আমি কষ্ট পাচ্ছি এমন কিছু বুঝলে মা-বোনরা বলে 'কপালে যখন বিয়ে লিখা থাকবে তখন আপনা-আপনিই হবে, বা খারাপ বিয়ে হওয়ার চেয়ে না হওয়াই ভালো', কিংবা কখনো বলে 'বিয়ে না হলে কি হয়'!! আমার ধারণা উনারা বসে আছেন কেউ এসে জোর করে নিতে চাইলে দিয়ে দিবেন, নাহয় যেভাবে পরে আছি সেভাবেই পরে থাকবো। বাবাকে কোন একটা প্রস্তাব সম্পর্কে জানাতে গেলে উনে রেগে বলেন, 'অসুস্থতা মেনে কেউ নিতে চাইলে কানা-খুঁড়া একটার কাছে দিয়ে দিলেই হয়!উনি ভাববে না আমাকে নিয়ে, আমি যা খুশি তাই যেন করি'।এরকম কথা একদিন-দু'দিন না,প্রায় সময়ই উনি বলেন এবং পুরোটা ক্ষোভ এজন্য যে এত পড়েও কেন আমি চাকরী করবো না বলি। ফ্যামিলির মানুষজন থেকে এই কথাগুলো শুনে আমি রীতিমতো আতকে উঠি যে এত সহজ ও সাবলীলভাবে এই কথাগুলো কিভাবে বলা যায়! আমি বিশ্বাস করি আল্লাহ আমার জন্য যে ফয়সালা করবেন সেটাই সর্বোৎকৃষ্ট ফয়সালা, সেটা আমি বিনাদ্বিধায় মেনে নিবো ইন শা আল্লাহ, কিন্তু দো'আ আর চেষ্টা তো করতেই হবে,এরপর যে হালতে রাখেন তাতেই আলহামদুলিল্লাহ্।

উনাদের গা ছাড়া ভাব দেখে মায়ের অনুমতি নিয়ে আমি একটা অনলাইন ইসলামিক ম্যাট্রোমনি সাইডে বায়ো দেই। সেখান থেকে একজন আগ্রহ প্রকাশ করে। যেহেতু দ্বীনের ব্যাপার নিয়ে আমার পরিবার কোন কথাই বলবে না, কারণ এটার গুরুত্বই উনারা বুঝেন না।ছেলের দ্বীনদারিতা যাচাই করার কথা বললে উল্টো আরো রাগ করেন, বিভিন্ন কটু কথা শুনান তাই বাধ্য হয়ে আমি ছেলেকে ২৪/২৫ টা প্রশ্ন লিখে ই-মেইলে জিজ্ঞেস করি দ্বীনদারিতা বুঝার জন্য। মেইল করার কথা বোনরা ও মা জানেন,তাদের পুরোটাই বলি। সমস্যা যেটা হয়েছে ছেলের দ্বীনদারিতা আমাকে খুব আকৃষ্ট করতে পারে নি। তবে আপাতত আমার অসুস্থতার ব্যাপার জানার পর বলছে এতে উনার কোন সমস্যা নাই, আমার পর্দার ব্যাপারে খুব ভালো রেসপন্স করেছেন, সবটুকু সাপোর্ট দেওয়ার কথা জানিয়েছেন এবং আমার চাকুরী করতে না চাওয়ার ব্যাপারে বলেছেন উনি উনার আহলিয়াকে দিয়ে চাকরী করাতে চান না কখনোই। অসুস্থতা, পর্দা এবং চাকরী- এই তিনটার সমন্বয় আমাকে এই বিয়ের ব্যাপারে পজিটিভলি ভাবাচ্ছে আলহামদুলিল্লাহ্। কিন্তু আমি শঙ্কিত ছেলের দ্বীনদারিতা নিয়ে। ছেলের ভাষ্যমতে উনার দ্বীনদারিতার বর্ণনা দেই-

-সপ্তাহে ২দিন মসজিদের জামাতে ৫ ওয়াক্ত নামাজ জামাতে পরতে পারেন।বাকি ৫দিন ২ওয়াক্ত নামাজ মসজিদে জামাতে পড়েন আর বাদবাকি ৩ ওয়াক্ত অফিসে উনি ইমাম হয়ে কয়েকজনকে নিয়ে পড়েন।

-কুরআন এখনো পুরোপুরি সহীহ না, মাঝে কয়েকবার বিভিন্ন জায়গায় শিখার চেষ্টা করেছেন,কিছুটা উন্নতি হয়েছেও।নামাজের সূরাগুলো সহীহ শুদ্ধ করে নিয়েছেন। কিন্তু অফিস বা অন্যান্য ব্যস্ততার জন্য শেখা হয়ে উঠে নি, বলেছেন খুব শীঘ্রই আবার শুরু করবেন ইনশাআল্লাহ্

-নজরের হেফাজতের সর্বোচ্চ চেষ্টা করেন, কিন্তু গ্রামে গেলে নন মাহরাম পুরোপুরি মেনটেইন করতে পারেন না।তর্ক এড়িয়ে যাওয়ার জন্য নাকি নন মাহরাম কারোর জবাব অল্পতে দিয়ে এড়িয়ে যান। তবে আমার যেটা মনে হয় উনি স্ট্রংলি নন মাহরাম মানার কথা বলতেও পারেন না,আল্লাহু আ'লাম।

-এখন যে চাকরী করছে সেটার ইনকামে কোন হারামের মিশ্রণ নাই, কিন্তু উনার ইচ্ছা সাউথ কোরিয়া গিয়ে কিছু ইনকাম করে আরব কান্ট্রির দিকে মুভ করা, এটা সম্ভব না হলে দেশে ফিরে এসে ব্যবসা করা।                                                   যদিও এটা ভবিষ্যত আলোচনা, কিন্তু আমি বা আমার পরিবারের কেউই আমাদের নিজেদের জন্য প্রবাসী পছন্দ করি না।

-ফরজ পরিমান ইলমের কথা বলেছেন- প্রাতিষ্ঠানিক বা সিস্টেমেটিকভাবে উনার এই পরিমাণ ইলম অর্জন করা হয় নি। বিয়ে, তালাক, পারিবারিক হক্বের মাসআলা- মাসায়েলের ব্যাপারেও এরম উত্তর দিয়েছেন। মসজিদের খুতবা,বিভিন্ন আলেমদের আলোচনা থেকে টুকটাক জানা হয়েছে যতটুকু ততটুকুই জানেন। জুন-জুলাইয়ে কিছুটা ফ্রি হবেন তখন ইলম চর্চার ইচ্ছে পোষণ করেছেন।

এখন আমার প্রশ্ন দ্বীনি জায়গা থেকে উনার যে ঘাটতিগুলো রয়েছে সেগুলোকে মেনে নিয়ে আমার কি আপাতত এই প্রস্তাবে আগানো উচিত হবে? নাকি আরো অপেক্ষা করা উচিত হবে?আমি আলহামদুলিল্লাহ্ পরিপূর্ণ পর্দা করি,নন মাহরাম মেনে চলি,নজরের হেফাজত করি,সহীহ করে কুরআন পড়তে পারি এবং যতটুকু জানা আছে আমলের চেষ্টা করি,সুম্মা আলহামদুলিল্লাহ্। সবসময় আমার চেয়ে অগ্রগামী কাউকে চাই জীবনসঙ্গী হিসেবে যাতে আমি পিছলে না যাই দ্বীন থেকে, এ কারণেই আমি একটু ভয় পাচ্ছি যে পাছে না আমার সমস্যা হয়! তবে এখন পরিবারে আমাকে ঘিরে যে পরিস্থিতি চলছে এই পরিবেশেও আমি বেশি দিন ঠিক থাকতে পারবো বলে মনে হয় না, এখন আমার একটা উত্তম আশ্রয় জরুরী বলেও মনে করছি। উস্তাদ আমি পরামর্শ চাচ্ছি, আমার উপরোক্ত হালতে করনীয় কি? এগিয়ে যাওয়া নাকি আরো অপেক্ষা করা। দোআর দরখাস্জাত রইলো উস্তাদ, জাযাকাল্লাহু খইরন।

1 Answer

0 votes
by (574,470 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

বিবাহের ক্ষেত্রে রাসুল সাঃ কুফু মিলাইতে বলেছেন।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ  
 
وَعَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ : «تُنْكَحُ الْمَرْأَةُ لِأَرْبَعٍ : لِمَالِهَا وَلِحَسَبِهَا وَلِجَمَالِهَا وَلِدِينِهَا فَاظْفَرْ بِذَاتِ الدَّيْنِ تَرِبَتْ يَدَاكَ»

আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ (মূলত) চারটি গুণের কারণে নারীকে বিবাহ করা হয়- নারীর ধন-সম্পদ, অথবা বংশ-মর্যাদা, অথবা রূপ-সৌন্দর্য, অথবা তার ধর্মভীরুর কারণে। (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন) সুতরাং ধর্মভীরুকে প্রাধান্য দিয়ে বিবাহ করে সফল হও। আর যদি এরূপ না কর তাহলে তোমার দু’ হাত ধূলায় ধূসরিত হোক (ধর্মভীরু মহিলাকে প্রাধান্য না দিলে ধ্বংস অবধারিত)!
(সহীহ বুখারী ৫০৯০, মুসলিম ১৪৬৬, নাসায়ী ৩২৩০, আবূ দাঊদ ২০৪৭, ইবনু মাজাহ ১৮৫৮, আহমাদ ৯৫২১, ইরওয়া ১৭৮৩, সহীহ আল জামি‘ ৩০০৩।)

কুফু সম্পর্কে বিস্তারিত জানুনঃ  https://www.ifatwa.info/4541/

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন, 
এক্ষেত্রে বিবাহের পর শশুর বাড়িতে গিয়ে নিজের শরয়ী পর্দা, গায়রে মাহরাম মেইনটেইন এর নিশ্চয়তা পেলে, এবং পূর্ণ শরীয়ত মানার 
নিশ্চয়তা পেলে এই বিবাহে এগোতে পারেন।

আল্লাহ তায়ালা বারাকাহ দান করুন,আমিন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...