আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
193 views
in ব্যবসা ও চাকুরী (Business & Job) by (5 points)
edited by
আসসালামুআলাইকুম। দয়া করে পুরো প্রশ্নটি পড়ে আমাকে উত্তর দিবেন।

আমার পরিচিত একজন মহিলা তার ব্যবসার জন্য এভাবে নিজের মুখের পুরো অংশ চুল ছাড়া এবং হাতের কব্জির থেকে একটু উপরের অংশে বিউটি প্রোডাক্টস সামগ্রী অর্থাৎ কৃম, লিপস্টিক, লোশন, চোখের আইলাইনার ও হাতে মেহেদী ব্যবহার করে ভিডিও তৈরি করে ইন্টারনেটে, ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামে শেয়ার করে এবং লাইভ ভিডিও করে প্রচার করে তার নিজের বিউটি প্রোডাক্টস গুলো বিক্রি করে।

উল্লেখ্য ওই ভিডিও প্রচারের সময় ওই মহিলা তার মুখমন্ডল পুরো খোলা থাকে কিন্তু মাথার চুলগুলো পর্দা বা হিজাব দ্বারা পুরোপুরি আবৃত থাকে এবং হাতের কব্জি থেকে একটু উপরের অংশ পর্যন্ত খোলা থাকে বাকি উপরের অংশটুকু পুরো ঢাকা থাকে জামার কাপড় দিয়ে।

এভাবে ঐ মহিলার অনলাইনে ইন্টারনেটে, ফেসবুকে ও ইনস্টাগ্রামে লাইভ ভিডিও করে এবং শেয়ার করে নিজের মুখের ও হাতের বিউটি প্রোডাক্টস বিক্রি করা ওই মহিলার জন্য কি গুন্নাহর পাপের কাজ হবে?? বা হারাম হবে?? বা তার পর্দা তা নষ্ট করছে বলে গণ্য হবে?? নাকি তার জন্য জায়েজ হবে??

যদি তার জন্য এভাবে ঐ মহিলার বিউটি প্রোডাক্টস গুলো বিক্রি করা হারাম হয়ে থাকে তাহলে ঐ মহিলা কিভাবে, হালাল উপায়ে গুনাহ বা‌ পাপ ছাড়া অনলাইনে তার বিউটি প্রোডাক্টস গুলো বিক্রি করতে পারে???

উল্লেখ্য ঐ মহিলা তার বিউটি প্রোডাক্টসগুলো সে শুধুমাত্র অনলাইনেই বিক্রি করে তার নিজস্ব ব্যবসা করে।
by (5 points)
উত্তরের অপেক্ষায় রইলাম, শাইখ
by (573,870 points)
জ্বী,জবাব দেয়া হয়েছে,আলহামদুলিল্লাহ। 

1 Answer

0 votes
by (573,870 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 

প্রথমেই আমরা একটি মাসয়ালা জেনে নেইঃ
শরীয়তের বিধান মতে  নামাজ, রোজা, হজ্ব, যাকাত ইসলামে যেমন ফরজ, পর্দা  পালন করাও অনুরুপ একটি ফরজ বিধান। সুতরাং বিনা ওজরে পর্দা লঙ্গন হয় এ ধরণের সকল প্রকার কাজই হারাম। অনলাইনে মহিলাদের ছবি আপলোড দিলে হাজারো পুরুষ সেই ছবি  দেখে। বেগানা মহিলাদেরকে দেখা যেমন নাজায়িজ তেমনি তাদের ছবি দেখাও নাজায়িজ, ইন্টারনেটের ছবি হোক অথবা অন্যকোন ছবি হোক সর্বাবস্থায় তাদের ছবি দেখা নাজায়েজ। 
,
ফটো বা ছবি দেখার দ্বারা পাপের পাশাপাশী তা হ্রদয় যন্ত্রনার কারণ হয়ে দাড়ায়। উপরন্তুু দেখা ও কল্পনার দ্বারা চোখের যিনার গুনাহ হতে থাকে। তাই মহিলাদের ছবি অনলাইনে  আপলোড করা, দেখা কোন মতেই জায়িজ নয়।
ইন্টারনেটে  মহিলাদের ছবি আপলোড করলে যত বেগানা পুরুষ আপলোডকৃত ছবি দেখবে তাদের সকলের সমপরিমাণ গোনাহ আপলোডকারীর আমল নামায় যোগ হবে।
[প্রমাণ : ফাতাওয়ায়ে রাহীমিয়া-৪/১০৬, কিফায়াতুল মুফতী ৫/৩৮৮, হিদায়া ৪,/৪৫৮, মিশকাত ২ /২৮০, সুরা নূর ১৮ /৩০]
.
আমাদের ইন্টারনেটের জগতকে দেখতে হবে অফলাইনের জীবনের অবস্থা অনুপাতে। যেমন অফলাইনে বেগানা নারীদের সাথে অহেতুক কথা বলা, তাদের সাথে দেখা করা, তাদের ছবি দেখা হারাম। তেমনি অনলাইনের বিধানও তা’ই হবে।

وَإِذَا سَأَلْتُمُوهُنَّ مَتَاعًا فَاسْأَلُوهُنَّ مِنْ وَرَاءِ حِجَابٍ ذَلِكُمْ أَطْهَرُ لِقُلُوبِكُمْ وَقُلُوبِهِن

অর্থ : আর তোমরা তাঁর (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর স্ত্রীগণের কাছে কিছু চাইলে পর্দার আড়াল থেকে চাইবে। এটা তোমাদের অন্তরের জন্য এবং তাঁদের অন্তরের জন্য অধিকতর পবিত্রতার কারণ। {সূরা আহযাব-৫৩।

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত
فَالْعَيْنَانِ زِنَاهُمَا النَّظَرُ، وَالْأُذُنَانِ زِنَاهُمَا الِاسْتِمَاعُ، وَاللِّسَانُ زِنَاهُ الْكَلَامُ، وَالْيَدُزِنَاهَا الْبَطْشُ، وَالرِّجْلُ زِنَاهَا الْخُطَا، وَالْقَلْبُ يَهْوَى وَيَتَمَنَّى، وَيُصَدِّقُ ذَلِكَ الْفَرْجُ وَيُكَذِّبُهُ

রাসূল সাঃ ইরশাদ করেন, চোখের জিনা হল [হারাম] দৃষ্টিপাত। কর্ণদ্বয়ের জিনা হল, [গায়রে মাহরামের যৌন উদ্দীপক] কথাবার্তা মনযোগ দিয়ে শোনা। জিহবার জিনা হল, [গায়রে মাহরামের সাথে সুড়সুড়িমূলক] কথোপকথন। হাতের জিনা হল, [গায়রে মাহরামকে] ধরা বা স্পর্শকরণ। পায়ের জিনা হল, [খারাপ উদ্দেশ্যে] চলা। অন্তর চায় এবং কামনা করে আর লজ্জাস্থান তাকে বাস্তবে রূপ দেয় [যদি জিনা করে] এবং মিথ্যা পরিণত করে [যদি অন্তরের চাওয়া অনুপাতে জিনা না করে]। {সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-২৬৫৭, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-৮৯৩২}
.
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ عَاصِمٍ، حَدَّثَنَا هَمَّامٌ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ مُوَرِّقٍ، عَنْ أَبِي الأَحْوَصِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " الْمَرْأَةُ عَوْرَةٌ فَإِذَا خَرَجَتِ اسْتَشْرَفَهَا الشَّيْطَانُ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ .

আবদুল্লাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মহিলারা হচ্ছে আওরাত (আবরণীয় বস্তু)। সে বাইরে বের হলে শাইতান তার দিকে চোখ তুলে তাকায়। — সহীহ, তিরমিজি ১১৭৩ মিশকাত (৩১০৯), ইরওয়া (২৭৩), তা’লীক আলা ইবনি খুযাইমা (১৬৮৫)
,
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন, 
নারীদের কন্ঠ যেহেতু পর্দার অন্তর্ভুক্ত, তাই প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে এভাবে ভিডিও তৈরি করে ইন্টারনেটে, ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামে শেয়ার করে এবং লাইভ ভিডিও করে প্রচার করে তার নিজের বিউটি প্রোডাক্টস গুলো বিক্রি করা জায়েজ হবেনা।
এভাবে ভিডিও ধারন করা জায়েজ হবেনা।

কারন সেই ভিডিও পুরুষ মানুষ দেখবে।
যাহা কোনোভাবেই জায়েজ নেই।   

এতে গুনাহের সহযোগিতা পাওয়া যাওয়ায় এটি জায়েজ হবেনা।

এ সংক্রান্ত আরো জানুনঃ- 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...