আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
91 views
in যাকাত ও সদকাহ (Zakat and Charity) by (12 points)
১)আমার বাবা আমার নামে ডিপিএস করতে বলেছিলেন আমার আম্মুকে, যার অর্থ প্রতিমাসে আমার বাবাই ডিপিএস এর উদ্দেশ্য করে দিয়ে থাকেন আম্মুর হাতে, এখন জাকাতের হিসেব করার সময় জাকাত দেওয়ার জন্য হাতে নগদ অর্থ না থাকায় আব্বুকে জিঙ্গেস করলাম ডিপিএস মালিক কে? আপনি নাকি আমি?উনি বললেন উনি মালিক, আর বললেন যার নামে যত অর্থ ই থাকুক না কেন, তোমাদের সব গুলার মালিক আমি।
তাহলে এই অর্থের জাকাত কে দিবে? আমার বাবা নাকি আমি??


২)আবার সেইম ভাবে আমার বিয়ের আগে আমার উদ্দেশ্য করে কিছু স্বর্ণের গহনা বানানোর জন্য টাকা দিয়েছিলো আমার বাবা, ,ঐগুলো আমার আম্মুই পড়তো আমার বিয়ের আগে, আবার মন চাইলে সময় সময় আমিও পড়তাম, আমার বাবা আমার আম্মুকে বলতো তোমারে গহনা বানাই দিলাম, এটা বানাই দিলাম ঐটা বানাই দিলাম, আবার আমাকে বলতো ওগুলো আমারে দিছে, একবার বলে আম্মুকে দিছে আবার বলে আমাকে দিছে, যদিও বিয়ের পরে ওগুলো আমাকেই দিয়ে দেওয়া হয়েছে পুরোপুরি ভাবে, তাহলে পূর্বে ঐসম্পদের আসল মালিক কে ছিলো? আমার বাবা, মা নাকি আমি? পূর্বের সময় অনুযায়ী যদি যাকাত ফরজ হয়ে থাকে তাহলে এই স্বর্ণের জাকাত কে দিবে? আমার বাবা, আমি নাকি আমার আম্মু??

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم 

(০১)
প্রশ্নের বিবরন মতে এই অর্থের জাকাত আপনার বাবা দিবে।

(০২)
শরীয়তের বিধান মতে যাকাত ফরজ হওয়ার পর যাকাত প্রদান না করলে কঠিন শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ

عن عمرو بن شعيب عن أبيه عن جده أن امرأة أتت رسول الله صلى الله عليه و سلم ومعها ابنة لها وفي يد ابنتها مسكتان غليظتان من ذهب فقال لها ” أتعطين زكاة هذا ؟ ” قالت لا قال ” أيسرك أن يسورك الله بهما يوم القيامة سوارين من نار ؟ ” قال فخلعتهما فألقتهما إلى النبي صلى الله عليه و سلم وقالت هما لله عزوجل ولرسوله

অনুবাদ- আমর বিন শুয়াইব থেকে পর্যায়ক্রমে তাঁর পিতা ও দাদার সূত্রে বর্ণিত। তিন [দাদা] বলেনঃ এক মহিলা তার কন্যাসহ রাসূল সাঃ এর খিদমতে উপস্থিত হন। তার কন্যার হাতে মোটা দুই গাছি স্বর্ণের চুড়ি [কাঁকন] ছিল। তিনি [রাসূল সাঃ] তাকে বললেনঃ তোমরা কি এটার যাকাত আদায় কর? মহিলা বলেনঃ না। রাসূল সাঃ বলেনঃ তুমি পছন্দ কর যে, কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাআলা এর পরিবর্তে তোমাকে এক জোড়া আগুনের কাঁকন পরিধান করান? রাবী বলেনঃ একথা শুনে মেয়েটি তার হাত থেকে তা খুলে নবী করীম সাঃ এর সামনে রেখে দিয়ে বললঃ এ দু’টি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের জন্য। {সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-১৫৬৩, সুনানুল কুবরা লিলবায়হাকী, হাদীস নং-৭৭৯৯, সুনানুল কুবরা লিননাসায়ী, হাদীস নং-২২৫৮, সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-২০০৫}

عن عبد الله بن شداد بن الهاد أنه قال دخلنا على عائشة زوج النبي صلى الله عليه و سلم فقالت ” دخل علي رسول الله صلى الله عليه و سلم فرأى في يدي فتخات ( خواتيم كبار ) من ورق فقال ” ما هذا يا عائشة ” ؟ فقلت صنعتهن أتزين لك يارسول الله قال ” أتؤدين زكاتهن ؟ ” قلت لا أو ماشاء الله قال ” هو حسبك من النار “

হযরত আব্দুল্লাহ বিন শাদ্দাদ ইবনুল হাদ থেকে বর্ণিত। তিন বলেন, আমরা রাসূল সাঃ এর স্ত্রী হযরত আয়শা রাঃ এর খেদমতে উপস্থিত হই। তখন তিনি বলেন, একদা রাসূল সাঃ আমার নিকট উপস্থিত হয়ে আমার তাতে রূপার বড় বড় আংটি দেখতে পান। তিনি বলেন, হে আয়শা! এটা কি? আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আপনার উদ্দেশ্যে রূপচর্চা করার জন্য তা বানিয়েছি। তিনি জিজ্ঞাসা করেনঃ তুমি কি এর যাকাত পরিশোধ করে থাক? আমি বললাম, না অথবা আল্লাহ পাকে যা ইচ্ছে ছিল। রাসূল সাঃ বললেনঃ তোমাকে দোযখে নিয়ে যাওয়ার জন্য এটাই যথেষ্ট। {সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-১৫৬৫, সুনানে সুগরা লিলবায়হাকী, হাদীস নং-১২৩৩, সুনানে বায়হাকী কুবরা, হাদীস নং-৭৩৩৮, সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-১৯৭৪, মুস্তাদরাকে হাকেম, হাদীস নং-১৪৩৭}

শরীয়তের বিধান অনুযায়ী হেবা পূর্ণ হওয়ার জন্য কবজা তথা হস্তগত হওয়া শর্ত।

★প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে বিয়ের সময় যেহেতু উক্ত গহনা আপনার হাতে তুলে দিয়েছে,আপনার মালিকানায় দিয়ে দিয়েছে, সুতরাং এসব গহনার পূর্ণ মালিকানা আপনার।
,
বিবাহের এক বছর পূর্ণ হয়ে থাকলে নেসাব পরিমান সমদের মালিক হয়ে থাকলে উক্ত গহনার যাকাত আপনাকে দিতে হবে।

উক্ত গহনা গুলোর বর্তমান বাজার মূল্য (এখন সেটি বাজারে বিক্রয় করতে গেলে কত টাকা দাম আসতে পারে)  হিসেব করে শতকরা আড়াই পার্সেন্ট যাকাত আদায় করতে হবে।  

বিবাহের পূর্বে ঐ গহনা গুলির মালিক আপনার মা ছিলো।
এক্ষেত্রে আপনার মা নেসাব পরিমান সম্পদের মালিক হয়ে থাকলে পূর্বের বছর গুলির যাকাত আপনার মায়ের উপর আবশ্যক হবে।  

হাদীস শরীফে এসেছেঃ
  
عن عثمان وابن عمر وابن عباس رضي اللّٰہ عنہم أنہم قالوا: لا تجوز صدقۃ حتی تقبض۔ (رواہ البیہقي ۶؍۱۷۰، إعلاء السنن ۱۶؍۹۱ رقم: ۵۲۶۴ دار الکتب العلمیۃ بیروت)
সারমর্মঃ
হযরত উসমান রাঃ ,ইবনে ওমর রাঃ ইবনে আব্বাস রাঃ বলেন ছদকাহ জায়েজ নেই,কবজা করার আগ পর্যন্ত।  

عن معاذ بن جبل وشریح رضي اللّٰہ عنہما أنہما کانا لا یجیزانہا حتی تقبض‘‘ اہـ۔ (رواہ البیہقي ۶؍۱۷۰، إعلاء السنن ۱۶؍۹۱ رقم: ۵۲۶۵ دار الکتب العلمیۃ بیروت)
সারমর্মঃ
হযরত মুয়াজ বিন জাবাল রাঃ এবং হযরত শুরাইহ রাঃ হেবার পূর্ণ হওয়ার ইজাযত দেননা কবজা করার আগ পর্যন্ত।   

আরো জানুনঃ 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...