আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
107 views
in যাকাত ও সদকাহ (Zakat and Charity) by (1 point)
reshown by
আসসালামু আলাইকুম।
১)আমার বিয়ে হয়েছে দেড় বছর হলো।আমার বিয়েতে আমার খালা আর মামা ৪০ হাজার টাকা দেন সংসারের আসবাব কেনার জন্য। সেই টাকা এক বছর ধরে আমার কাছে ছিল না। কিছু টাকা দিয়ে আসবাব কিনেছি। আর কিছু আমার কলেজের পাওয়া পরিশোধ করেছি। ১ বছর ধরে ৬/৭ হাজার টাকা রয়ে গেছে আমার কাছে। যেহেতু নতুন সংসার তাই প্রতিনিয়তই সংসারের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতে হচ্ছে। যখন যেটা লাগে সেই টাকা থেকেই কিনছি।এখন এই টাকার উপর কি যাকাত দিতে হবে?
২)আমার বিয়ের সময় কিছু স্বর্ণের গহনা পেয়েছি।বিয়েতে স্বর্ণের গহনা যা পেয়েছি সেগুলো কোনটা কত ক্যারেট কিংবা কি পরিমাণে আছে জানিনা, যেহেতু বিভিন্ন আত্নীয় দিয়েছেন। এতটুকু জানি যে ২ থেকে আড়াই ভড়ি হবে।বেশিরভাগ স্বর্ণই আমার কাছে নেই। শুধু বিয়ের দিন পড়েছি তারপর থেকেই শ্বাশুড়ির কাছে। শ্বাশুড়ি গ্রামে থাকেন আমি হাজবেন্ডের সাথে ঢাকায় থাকি। হয়তো ঈদের আগের দিন গ্রামে যাব। সেক্ষেত্রে আমি স্বর্ণ কতটুকু আছে সেটা মাপার সুযোগ হয়তো ঈদের আগে পাব না। যদি নেসাব পরিমাণ হয়ে থাকে তাহলে ঈদের পর কি যাকাত আদায় করা যাবে?

৩)আমি হাজবেন্ড বা বাবার কাছ থেকে যে হাত খরচ পাই মাঝে মাঝে সেখান থেকে খরচ না করে ৫০০০ এর মতো টাকা জমিয়েছি একটা জিনিস কেনার উদ্দেশ্যে। এই পুরো টাকা এক বছর ধরে নেই আমার কাছে। যখন লাগে ওখান থেকে খরচ করি। আবার টাকা পেলে আবার রাখি। তাই সঠিক জানিনা কতদিন থেকে এটা আমার কাছে আছে। এই টাকার উপর কি যাকাত হবে? হলেও কত টাকা কিভাবে হিসাব করব?

1 Answer

0 votes
by (574,260 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

শরীয়তের বিধান অনুযায়ী স্বর্ণের ক্ষেত্রে যাকাতের নিসাব হল বিশ মিসকাল। -সুনানে আবু দাউদ ১/২২১; মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক  হাদীস ৭০৭৭, ৭০৮২
আধুনিক হিসাবে সাড়ে সাত ভরি।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا بَكْرُ بْنُ خَلَفٍ وَمُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى قَالَا حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللهِ بْنُ مُوسَى أَنْبَأَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ إِسْمَعِيلَ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ وَاقِدٍ عَنْ ابْنِ عُمَرَ وَعَائِشَةَ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَأْخُذُ مِنْ كُلِّ عِشْرِينَ دِينَارًا فَصَاعِدًا نِصْفَ دِينَارٍ وَمِنْ الْأَرْبَعِينَ دِينَارًا دِينَارًا

ইবনু ‘উমার ও ‘আয়িশাহ্ (রাঃ)  থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রতি বিশ দিনার বা তার চেয়ে কিছু বেশি হলে অর্ধ দিনার এবং চল্লিশ দিনারে এক দিনার (যাকাত) গ্রহণ করতেন।

ইবনে মাজাহ ১৭৯১ ইরওয়াহ ৮১৩।
দারাকুতনী ১৮৭৯, ১৮৯২।

সাড়ে ৫২ ভরি রুপা হলে তার উপর যাকাত ফরজ। 
হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 
عن أبي سعيد الْخُدْرِي رضي الله عنه قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم : «ليس فيما دون خمس أَوَاقٍ صدقة، ولا فيما دون خمس ذَوْدٍ صدقة، ولا فيما دُونَ خمسة أَوْسُقٍ صدقة».  
[صحيح] - [متفق عليه]

আবূ সা‘ঈদ আল-খুদরী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “পাঁচ উকিয়ার কম রৌপ্যমুদ্রায় যাকাত নেই এবং পাঁচটি উটের কমের ওপর যাকাত নেই। পাঁচ ওয়াসাক এর কম শষ্যের ওপর যাকাত নেই।”
(বুখারী,মুসলিম)

শরীয়তের বিধান হলো যদি কাহারো কাছে সোনা-রুপা, টাকা-পয়সা কিংবা বাণিজ্য-দ্রব্য- এগুলোর কোনোটি পৃথকভাবে পূর্ণ  নিসাব পরিমাণ না থাকে, কিন্তু এসবের একাধিক সামগ্রী এ পরিমাণ রয়েছে, যা একত্র করলে সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপার সমমূল্য বা তার চেয়ে বেশি হয় তাহলে এক্ষেত্রে সকল সম্পদ হিসাব করে যাকাত দিতে হবে।
(মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক হাদীস ৭০৬৬,৭০৮১; মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা ৬/৩৯৩)

আরো জানুনঃ  

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নের বিবরন মতে দেড় বছর হলো আপনার বিবাহ হয়েছে।
বিয়েতে আপনার মামা খালা যেই টাকা দিয়েছে,তাহা হতে প্রয়োজন পূরনের পর ৬/৭ হাজার টাকা আপনার কাছে রয়ে গেছে।
আপনি বিয়ের সময় ২ থেকে আড়াই ভরি স্বর্ণের গহনা পেয়েছেন।
হাজবেন্ড বা বাবার কাছ থেকে পাওয়া টাকা হতে ৫০০০ টাকা জমিয়েছেন।

সব কিছু বিবেচনা করে আপনার উপর আরো অর্ধ বছর পূর্বেই যাকাত ফরজ হয়েছে।

প্রশ্নের বিবরণ মতে আপনাকে টাকার পাশাপাশি স্বর্ণের ওপর ও যাকাত দিতে হবে।

এক্ষেত্রে আপনি উক্ত স্বর্ণের বর্তমান বাজার মুল্য ধরে আপনার মালিকানায় থাকা টাকার সাথে যোগ করবেন।
এরপর পুরোটার শতকরা আড়াই পার্সেন্ট (৪০ ভাগের এক ভাগ) যাকাত হিসেবে প্রদান করবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...