মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ
يَا أَيُّهَا الَّذِيْنَ آمَنُوْا لِمَ تَقُوْلُوْنَ مَا لاَ تَفْعَلُوْنَ، كَبُرَ مَقْتًا عِنْدَ اللهِ أَنْ تَقُوْلُوْا مَا لاَ تَفْعَلُوْنَ ‘
হে ঈমানদারগণ! তোমরা এমন কথা কেন বল, যা তোমরা কর না? আল্লাহর নিকট বড় ক্রোধের বিষয় এই যে, তোমরা বল এমন কথা, যা তোমরা কর না (ছফ ২-৩)।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم رَأَيْتُ لَيْلَةَ أُسْرِىَ بِى رِجَالاً تُقْرَضُ شِفَاهُهُمْ بِمَقَارِيضَ مِنْ نَارٍ فَقُلْتُ يَا جِبْرِيلُ مَنْ هَؤُلاَءِ قَالَ خُطَبَاءُ مِنْ أُمَّتِكَ الَّذِيْنَ يَأْمُرُوْنَ النَّاسَ بِالْبِرِّ وَيَنْسَوْنَ أَنْفُسَهُمْ وَهُمْ يَتْلُوْنَ الْكِتَابَ أَفَلاَ يَعْقِلُوْنَ.
আনাস ইবনু মালিক বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, যে রাতে আমাকে মি‘রাজে নিয়ে যাওয়া হল, সে রাতে কতগুলি লোককে দেখলাম, যাদের ঠোট আগুনের কাঁচি দ্বারা কেটে দেয়া হচ্ছে। আমি বললাম, হে জিবরাঈল! এরা কারা? তিনি বললেন, এরা আপনার উম্মতের বক্তা, যারা মানুষকে ভাল কাজের আদেশ করত, কিন্তু নিজেরা আমল করত না। তারা কুরআন তেলাওয়াত করত, তারা কুরআন চর্চা করত না’ (ইবনু হিববান, তারগীব, হা/৩৩২৮)।
عَنْ جُنْدُبِ بْنِ عَبْدِ اللهِ الْأَزْدِي صَاحِبُ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم رضي الله عنه عَنْ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ مَثَلُ الَّذِي يُعَلِّمُ النَّاسَ الْخَيْرَ وَيَنْسَى نَفْسَهُ كَمَثَلِ السِّرَاجِ يُضِيءُ لِلنَّاسِ وَيُحْرِقُ نَفْسَهُ.
জুনদুব ইবনু আব্দুল্লাহ আযদী বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, সে ব্যক্তি উদাহরণ যে ব্যক্তি মানুষকে কল্যাণের দাওয়াত দেয়, নিজে আমল করে না। সে সেই মোমবাতির মত, যে মোমবাতির মত। যে মোমবাতি মানুষকে আলো দেয় এবং নিজেকে জ্বালিয়ে দেয়’ (তাবারানী, তারগীব, হা/৩৩৩১)।
وَعَنْ أَبِي زَيدٍ أُسَامَةَ بنِ حَارِثَةَ رَضِيَ الله عَنهُمَا، قَالَ : سَمِعتُ رَسُولَ الله ﷺ، يَقُولُ: «يُؤْتَى بالرَّجُلِ يَوْمَ القيَامَةِ فَيُلْقَى في النَّارِ، فَتَنْدَلِقُ أقْتَابُ بَطْنِهِ فَيدُورُ بِهَا كَمَا يَدُورُ الحِمَارُ في الرَّحَى، فَيَجْتَمِعُ إِلَيْه أهْلُ النَّارِ، فَيَقُولُونَ : يَا فُلانُ، مَا لَكَ ؟ أَلَمْ تَكُ تَأمُرُ بالمعْرُوفِ وَتنهَى عَنِ المُنْكَرِ ؟ فَيقُولُ : بَلَى، كُنْتُ آمُرُ بِالمَعْرُوفِ وَلا آتِيهِ، وأنْهَى عَنِ المُنْكَرِ وَآتِيهِ». مُتَّفَقٌ عَلَيهِ
আবু যায়দ উসামাহ ইবনে যায়দ ইবনে হারেসাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি, কিয়ামতের দিন এক ব্যক্তিকে আনা হবে। অতঃপর তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে। সেখানে তার নাড়ি-ভুঁড়ি বের হয়ে যাবে এবং সে তার চারিপাশে এমনভাবে ঘুরতে থাকবে, যেমন গাধা তার চাকির চারিপাশে ঘুরতে থাকে। তখন জাহান্নামীরা তার কাছে একত্রিত হয়ে তাকে বলবে, ওহে অমুক! তোমার এ অবস্থা কেন? তুমি না (আমাদেরকে) সৎ কাজের আদেশ, আর অসৎ কাজে বাধা দান করতে?’ সে বলবে, অবশ্যই। আমি (তোমাদেরকে) সৎকাজের আদেশ দিতাম; কিন্তু আমি তা নিজে করতাম না এবং অসৎ কাজে বাধা দান করতাম; অথচ আমি নিজেই তা করতাম!’’ [বুখারি৩২৬৭, ৭০৯৮, মুসলিম ২৯৮৯, আহমদ ২১২৭৭, ২১২৮৭, ২১২৯৩, ২১৩১২]
,
অন্যকে উপদেশ দেয়া বা নিষেধ করা আর নিজে সে অনুযায়ী আমল না করা বা বিরত না থাকা নিন্দনীয় হলেও এর অর্থ এটা নয় যে, কোনো বিষয় নিজের মাঝে আমল না থাকলে অন্যকে বলাই যাবে না।
,
এমনটি ধারণা করা ঠিক নয়। অন্যকে আমলের বা বিরত থাকার উপদেশ দিবে, সাথে সাথে নিজেও আমলের চেষ্টা করবে।
★সুতরাং কাউকে কোন কাজে নিষেধ করার আগে সে কাজটি নিজেকে ছাড়তেই হবে, বিষয়টি এমন নয়।
বরং অন্যকে উপদেশ দেওয়ার সাথে সাথে সে কাজটা যদি কেহ নিজেও করে থাকে, তবে নিজেকেও ছাড়ার আপ্রাম চেষ্টা করতে হবে।