আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ উস্তাদ।
আমার স্বামী বিয়ের আগে নিজেকে দ্বীনদার হিসাবে পরিচয় দেন এবং এবং তার কথাবার্তায় আমাদেরও মনে হয় সে দ্বীনদার। আমি শুধু তার দ্বীনদারিত্ব দেখেই বিয়ে করি। এবং আমি কিভাবে দ্বীন পালন করতে চাই সবকিছু ডিটেইলস বলি। দ্বীন পালনে দুনিয়া যতটুকু লাগবে ততটুকু। সবকিছু উনি পালন করবেন এবং আমাকে সাহায্য করবেন কথা দিয়েই বিয়ে করেন
কিন্তু বিয়ের কিছুদিন পর থেকে বুজতে শুরু করি উনি অনেক বেশি দুনিয়াবি উনার দ্বীনদারিত্ব শুধু ৫ ওয়াক্ত ফরয সালাতের ভিতর সীমাবদ্ধ। আমি সবসময় তাকে নসিহত করি কিন্তু সে দুনিয়াকে অনেক বেশি গুরুত্ব দেই। এই যে রমাদান চলছে এই মাসের বিশেষ কোনো গুরুত্ব আমি তার ভিতরে দেখি না। অন্যান্য মাসের মত কাটাচ্ছেন শুধু রোজাটা থাকছেন। তারাবীহ পড়ে না, কুরআন তিলাওয়াত করে না, ইফতারে দোয়া করে না, তাহাজ্জুদ পড়ে না, সাহরী খেয়ে সময় থাকলে ঘুমিয়ে পড়ে, পরে উঠে ফযর পড়ে। এগুলো দেখে আমি খুব কষ্ট পায়। উনার প্রতি আমার অনিহা, ঘৃণা সৃষ্টি হচ্ছে। আমাদের ৪ মাসের একটা বাচ্চা আছে। বাবু হওয়াতে বাবার বাড়ি ছিলাম। উনার সাথে উত্তমভাবে রমাদান পালন করার জন্য সেই খুলনা থেকে চট্টগ্রাম চলে আসছি রমাদান এর দুইদিন আগে। এবং উনাকে বলেছিলাম এইবার রমাদান যেন আমাদের জীবনের সেরা রমাদান হয় সেই ভাবে পালন করতে চাই। কিন্তু উনিও করছে না, আমাকেও হেল্প করে না। আমি নতুন মা, একা বাচ্চা নিয়ে হিমশিম খেয়ে যায়। উনার আদব কায়দাও ভালো না। আমার সন্তান তার বাবা থেকে কি শিখবে এই সব নানা বিষয় নিয়ে খুব মন খারাপ থাকে আমার। উনার সাথে আমার দ্বিতীয় রমাদান, প্রথম রমাদানও সেইমভাবে কাটাই। প্রথমবার এমন ভাবে রমাদান কাটানো দেখে আমি খুব আহত হয়। একজন দ্বীনদার মানুষ কিভাবে এমন হেলায় ফেলায় রমাদান কাঁটাই। ভেবেছিলাম এইবার উত্তমভাবে কাটাবো কিন্তু হচ্ছে না। অনেক বুঝিয়েছি ভালোবেসে,রাগ করে অভিমান করে, কিন্তু উনি উনার জায়গাতেই আছেন।
উনি খাই বেশি,স্ত্রী সহবাস করে বেশি,ঘুমাই বেশি। সবকিছু নফসের খাইসরত মিটানোর জন্য। কোনকিছুতেই সুন্নাহ অনুসরণ করে করে না। সুন্নাত নামাযও ঠিক মতো পড়ে না বেশিরভাগ দিনই পড়ে না। এই রমাদান উনি কত জঘন্যভাবে কাটাচ্ছেন ভাবলেই কলিজা ফেটে যায়। এতো দিন ভাবছি আস্তে আস্তে ঠিক হবে কিন্তু আরো খারাপ হচ্ছে। বাচ্চারা তো বাবা মার থেকে শিখে আমার বাচ্চা কি শিখবে তার বাবার থেকে। আমি একা তাকে কিভাবে সঠিক তারবিয়া দিবো। উনি আমার বিশ্বাস ভেঙ্গে দিছে। এইসব নানা চিন্তাই আমি আমার স্বামীর প্রতি কোন আগ্রহ পায় না। তার ডাকে সাড়া ইচ্ছা করে না। উনার কোনো কাজ করে দিতে ইচ্ছে করে না। রাগ উঠে।নিজের অজান্তেই উনার অনেক হক্ব নষ্ট করছি। আমি রমাদানটাও উত্তম ভাবে কাটাতে পারছি না। এখন আমার করনীয় কি? আমি কিভাবে নিজের মনকে শান্ত করবো? কি করলে আল্লাহ আমার উপর অখুশি হবেন না?