আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
157 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (1 point)
ভয় কাজ করে ইমান নিয়ে মারা যেতে পারবো তো?এই একটা প্রশ্ন কাজ করে যে ইমান নিয়ে আল্লাহর কাছে যেতে পারবো তো।শয়তান যেভাবে ওয়াসওয়াসা দেয় এই ভয়ে এই প্রশ্ন মনে কাজ করে।এটা কি কোনো ভুল??

1 Answer

0 votes
by (589,680 points)

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
হযরত সাহল ইবনে সা‘দ সাঈদী রা.-এর বর্ণনা, একবার মুশরিকদের সঙ্গে এক যুদ্ধ হল। যুদ্ধের এক পর্যায়ে উভয় দল নিজেদের ছাউনিতে চলে গেল। এমন সময় নিজেদের পক্ষে বীরবিক্রমে লড়াই করা এক ব্যক্তি সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, সে তো জাহান্নামী। এ কথা শুনে উপস্থিত একজন তাকে অনুসরণ করল। যখন সেই লড়াকু লোকটি যুদ্ধের জন্য বের হল, তখন এ অনুসরণকারীও তার সঙ্গে বের হল। একজন যখন দৌঁড়ায় তখন অপরজনও দৌড়ায়। একজন দাঁড়ালে অপরজনও দাড়িয়ে যায়। এভাবেই সে তাকে অনুসরণ করছিল। একপর্যায়ে লড়াকু লোকটি ভীষণভাবে আক্রান্ত হল। আঘাতের তীব্রতায় টিকতে না পেরে সে মাটিতে নিজের তরবারি রেখে তা দিয়েই আত্মহত্যা করল। তা দেখে অনুসরণকারী ছুটে গেল রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট। বলল, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, আপনি আল্লাহর রাসূল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞেস করলেন- কী বিষয়? সে বলল, একটু আগে আপনি যে লোকটিকে জাহান্নামী বলেছিলেন আর অন্যরা বিষয়টি মেনে নিতে পারছিল না, আমি তাদেরকে বলেছিলাম, আমি তোমাদের হয়ে তার বিষয়টি দেখছি। এরপর আমি তার পেছনে পেছনে বেরিয়ে পড়ি। যুদ্ধের একপর্যায়ে সে মারাত্মকভাবে আহত হয়ে পড়ে। তখন নিজের তরবারি দিয়েই নিজেকে সে শেষ করে দেয়। এ কথা শুনে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন-

إِنَّ الرَّجُلَ لَيَعْمَلُ عَمَلَ أَهْلِ الْجَنَّةِ فِيمَا يَبْدُو لِلنَّاسِ وَهْوَ مِنَ أَهْلِ النَّارِ وَإِنَّ الرَّجُلَ لَيَعْمَلُ عَمَلَ أَهْلِ النَّارِ فِيمَا يَبْدُو لِلنَّاسِ وَهْوَ مِنْ أَهْلِ الْجَنَّةِ.

কাউকে দেখে মনে হয়, সে জান্নাতীদের মতোই আমল করে যাচ্ছে, অথচ সে জাহান্নামী। আবার কাউকে দেখে মনে হয়, সে জাহান্নামীদের মতো কাজ করে যাচ্ছে, অথচ সে জান্নাতী। -সহীহ বুখারী, হাদীস ৪২০১

এ হাদীসের এক মর্ম তো এমন- মৃত্যুর সময় যে ঈমান নিয়ে যেতে পারবে, আখেরাতের চিরস্থায়ী সুখে সে-ই সুখী হবে। আর সারা জীবন ভালো ভালো আমল করেও যদি মৃত্যুর সময় ঈমান কারও খোয়া যায়, তাহলে যন্ত্রণাদায়ক জাহান্নামই হবে তার স্থায়ী ঠিকানা। এর পাশাপাশি এ হাদীসটি আমাদেরকে আরেকটি মহাসত্যের নির্দেশ করছে- দুনিয়ার এ জীবনে বাহ্যত একটু ভালো কাজ করেই, কিছুটা নেক আমল করেই পরকালীন শাস্তি থেকে মুক্তির বিষয়ে নিশ্চিন্ত থাকার কোনো সুযোগ নেই। একটু একটু নেক আমলের পাশাপাশি মরণটাও যদি ঈমানের সঙ্গে হয়, তাহলেই চিরসুখের নিশ্চয়তা। কিন্তু মৃত্যুর সময়টি কার কেমন যায়- কে জানে? ঈমান হারানোর আশঙ্কা তো পদে পদে। চলার পথের প্রতিটি বাঁকে শয়তান ওঁত পেতে আছে।(সুত্র-আলকাউছার)

সুতরাং ঈমান নিয়ে মৃত্যর ভয় থাকা কোনো ভূল নয়,বরং সেটাও ঈমানের একটা অংশ ও উত্তম কাজ।



(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...