আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
114 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (4 points)
আস সালামু আলাইকুম।
সম্মানিত ওস্তাজের নিকট আমার কিছু বিষয়ে জানার ছিলো। অগ্রিম জাজাকাল্লহু খইর।

১)আমি একজন সরকারি চাকুরীজীবী। প্রতি বছর আমাদের বৈশাখী ভাতা প্রদান করা হয়। একজন মুসলিম হিসেবে এই বৈশাখী ভাতা গ্রহণ করা উচিত হবে কিনা?
২) সাদাকাতুল ফিতর ঈদের আগে ও টাকা দিয়ে আদায় করা যাবে কিনা এমন ব্যক্তিকে যিনি অর্থ পেলে অধিক উপকৃত হবেন?

৩) সিয়াম অবস্থায় স্বামি এবং স্ত্রী তাদের ঠোঁটের ভেজা অংশে চুমু দিলে তাতে সিয়ামের কোনো ক্ষতি হবে কিনা?

৪) কোনো পুরুষ ব্যক্তিকে মুসাফির থাকা অবস্থায় তারাবিহ সালাত কিভাবে আদায় করতে হবে, জামায়াতে নাকি একাকি? কোনটা উত্তম?

৫) ঈদ আমাদের মুসলিমদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব এবং আনন্দ ভাগাভাগির মাধ্যম, আলহামদুলিল্লাহ। এইজন্য ঈদে আমরা আমাদের পরিবারে মুখে কিছু উচ্চারন না করে কেক কাটি, বেলুন,  ফুল দিয়ে ঘর সাজাই। প্রতিবেশি শিশুদের চকলেট, বেলুন উপহার দেই আমাদের ঈদকে আরো আনন্দঘন করার জন্য। কিন্তু আমার আব্বু এতে কিছুটা আপত্তি জানিয়ে বলেন বেলুন ফোলানো, কেক কাটা এগুলো বিজাতীয় সংস্কৃতি। এভাবে এই কাজ করে আমরা বিজাতীয় সংস্কৃতির অনুসারী হয়ে যাচ্ছি কিনা?

৬) অনেকে বলেন ইশার সালাত বিলম্ব করে আদায় করা উত্তম। এক্ষেত্রে তারা কিছু দলিলও পেশ করেন। কিন্তু আজানের সাথে সাথে নাকি বিলম্ব করে অধিক রাতে আদায় করা উত্তম?

৭) প্রায় মাস দেড়েক আগে আমার মিসক্যারেজ হয়। এখন আমি শারীরিকভাবে ভীষণ দুর্বল। ২/৪ রাকায়াত সালাত আদায় করতেও কোমড়ে খুব ব্যথা হয় বসে থাকতে। মাথা ঘুড়ায় আর ঘুম ঘুম ভাব থাকে সারাক্ষন। সালাত আদায়, কুরআন তিলাওয়াতের জন্য বেশি সময় বসে থাকতে পারি না। এইজন্য ভীষণ মনঃকষ্টে ভুগছি। খুব কান্নাকাটি করি ইবাদাত করার তৌফিক চেয়ে। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী শরীর ঠিক হওয়ার ঔষধ খাচ্ছি। কিন্তু তবুও শরীর খুব দুর্বল। এক্ষেত্রে আমি যদি শুধু ফরজ ইবাদাত, তারাবিহ সালাত, ইস্তেগফার, কারো হক্ব নষ্ট না করি, অধিক দান সাদাকাহ করি আর কোনো নফল ইবাদাত করতে না পারি তাতে আমি রমাদানের পুরো ফায়দা পাওয়ার আশা রাখতে পারি?  অন্যান্য বছরগুলোতে আলহামদুলিল্লাহ কিয়ামুল লাইল, অন্যান্য নফল সালাত, কুরআন তিলাওয়াত করতে পারতাম সারারাত জেগে (আল্লাহ কবুল করার মালিক)

1 Answer

0 votes
by (559,140 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 

(০১)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

وَعَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ جَدِّه رَضِىَ اللهُ عَنْهُمْ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ:لَيْسَ مِنَّا مَنْ تَشَبَّهَ بِغَيْرِنَا لَا تَشَبَّهُوا بِالْيَهُودِ وَلَا بِالنَّصَارٰى فَإِنَّ تَسْلِيمَ الْيَهُودِ الْإِشَارَةُ بِالْأَصَابِعِ وَتَسْلِيمَ النَّصَارَى الْإِشَارَةُ بِالْأَكُفِّ. رَوَاهُ التِّرْمِذِىُّ

আমর ইবনু শু‘আয়ব তাঁর পিতার মাধ্যমে তাঁর পিতামহ হতে বর্ণনা করেন যে, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আমাদের ছাড়া অন্য জাতির সাথে সাদৃশ্য করে সে আমাদের অন্তর্ভুক্ত নয়। তোমরা ইয়াহূদী ও খ্রিষ্টানদের সাথে সাদৃশ্য করো না। কেননা ইয়াহূদীরা অঙ্গুলির ইশারায় সালাম দেয়, আর খ্রিষ্টানরা হাতের তালু দ্বারা সালাম করে।

(হাদীসটির হুকুম হাসান : তিরমিযী ২৬৯৫, সিলসিলাতুস্ সহীহাহ্ ২১৯৪, আল জামি‘উস্ সগীর ৯৫৬৫, সহীহুল জামি‘ ৫৪৩৪, আল মু‘জামুল আওসাত্ব ৭৩৮০, ইরওয়া ১২৭০, সহীহ আত্ তারগীব ওয়াত্ তারহীব ২৭২৩।)
,
 قَالَ رَسُولُ اللَّهِ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : " مَنْ تَشَبَّهَ بِقَوْمٍ فَهُوَ مِنْهُمْ " 
আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি কোন সম্প্রদায়ের সাদৃশ্য গ্রহণ করবে, সে তাদেরই অন্তরভুক্ত (হয়ে যাবে)।
(হাদিস টির হুকুম হাসান : আবূ দাঊদ ৪০৩১, মুসনাদে আহমাদে এরূপ শব্দে হাদীসটি নেই; আল জামি‘উস্ সগীর ১১০৯৪, সহীহুল জামি‘ ৬১৪৯, ইরওয়া ২৬৯১।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে একজন মুসলিম হিসেনে এই বৈশাখী ভাতা গ্রহণ করা জায়েয হবে না।কেননা বিজাতীয় উৎসবে কোনো মুসলমানের কাছ থেকে অপর মুসলমানের জন্য হাদিয়া গ্রহণ জায়েয হবে না।

এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/1382

(০২)
হ্যাঁ, আদায় করা যাবে।
তবে রমজান মাসে আদায় করবেন।
রমজানের পূর্বে নয়।

(০৩)
এতে সেই পানি গলায় চলে গেলে রোযা ভেঙ্গে যাবে।

আর সেই পানি ফেলে দিলে রোযার ক্ষতি হবেনা।

এ সংক্রান্ত বিস্তারিত জানুনঃ- 
https://ifatwa.info/27476/

(০৪)
এক্ষেত্রে যদি সময় সুযোগ মিলে,সেক্ষেত্রে তারাবিহ পড়ে নেয়া উত্তম।
জামায়াতে আদায়ে ছওয়াব বেশি মিলবে।
তবে একাকীও আদায় করতে পারবে।

সময় সুযোগ না মিললে তারাবিহ আদায় না করা জায়েজ আছে।

(০৫)
এটি তাদের ধর্মীয় সংস্কৃতি নয়।
তারপরেও কেহ যদি এ থেকেও সতর্কতামূলক বেঁচে থাকে,সেটি অনেক উত্তম হবে।

(০৬)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: لَوْلاَ أَنْ أَشُقَّ عَلَى أُمَّتِي لأَمَرْتُهُمْ أَنْ يُؤَخِّرُوا العِشَاءَ إِلَى ثُلُثِ اللَّيْلِ أَوْ نِصْفِهِ.

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, উম্মতের কষ্ট হওয়ার ভয় যদি আমার না হত তাহলে আমি তাদেরকে আদেশ করতাম, তারা যেন ইশার নামায রাতের এক তৃতীয়াংশ বা অর্ধেক পর্যন্ত বিলম্বিত করে। {সুনানে তিরমিজী-১/২৩, হাদীস নং-১৬৭}

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
ঈশার নামাজ কোন সময় পড়া উত্তম,সে সংক্রান্ত যেহেতু স্পষ্ট হাদীস রয়েছে, তাই ইশার নামাজ এক তৃতীয়াংশ পর্যন্ত বিলম্বিত করে পড়া মুস্তাহাব।

আরো জানুনঃ- 

(০৭)
হ্যাঁ,আপনি এভাবে রমাদানের পুরো ফায়দা পাওয়ার আশা রাখতে পারেন।
তবে পরামর্শ থাকবে, প্রত্যেহ অল্প করে হলেও কুরআন তিলাওয়াত করার।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...