আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

–1 vote
104 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (1 point)
১) বিয়ের আগে থেকেই আমার প্যানিক, স্যানসেশন ও হিস্টারিক হওয়ার সমস্যা ছিলো। কিন্তু বিয়ের সময় আমার জাওজের পরিবারকে এসবের কিছুই জানানো হয়নি। বিয়ের পরে আমি হিস্টারিক হয়ে হাত পা কাঁপার শুরু করলে আমার জাওজ আম্মুকে কল করে। আম্মু তাকে বুঝায়, কিন্তু আব্বু কল দিয়ে বলে, "তুমি কি ওর সাথে রাগ করেছো? ওকে বকা দিয়েছো? ওকে রাতে জাগিয়েছো বেশি? ও কী কাজ করেছে বেশি?" প্রশ্নগুলো একজন বাবা হিসেবে করা স্বাভাবিক হলেও, আমার জাওজ ভাবে, ভবিষ্যতে যদি কখনো আমি প্যানিকড হয়ে মারা যাই, তাহলে আব্বু ওর নামে মামলা দিতে পারে। বলতে পারে, "আমিতো ভালো মেয়ে দিয়েছিলাম, তুই মেরে অসুস্থ করেছিস"। এই ভয়ে, যাতে ভবিষ্যতে কোন সমস্যায় তাকে না পরতে হয় সেজন্য আমার সমস্যাগুলো তার পরিবারকে জানায়। তার পরিবার আমার পরিবারকে জানালে দুই পরিবারে ঝামেলা বেঁধে যায়। এতে, সে আমাকে আলাদা করে ডেকে নিয়ে বিয়ে না ভাঙার জন্য অনুরোধ করে। কিন্তু বাহিরে সবার সামনে সে তার পরিবারের পরিবারের পক্ষ নেয়। বিশেষ করে, তার পরিবার যাতে তাকে ত্যায্য না করে বা সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত না করে সর্বোপরি আমি সংক্রান্ত কোন সমস্যা হলে তার পরিবার যেন তার পাশে থাকে সেজন্য সে সবাইকে বুঝায়, তার অন্য জায়গায় মেয়ে পছন্দ হয়েছিলো সেই মেয়েটাকে কেন বিয়ে করতে দিলো না।
২) আমার পরিবার শুরু থেকেই নিজেদের অবস্থান বুঝাতে চেয়েছিলো। ওরা আমাদের সমতুল্য না, আমাদের স্ট্যাটাসের সাথে ওদের যায়না। আমি যদি সহশিক্ষায় না যেতাম, তবে কখনোই এমন জায়গায় আত্মীয়তা করতে হতো না তাদের। আমার পরিবারের এমন মনোভাব আমার পছন্দ হয়নি। তাছাড়া, এই ঝামেলায় আমার স্বামীর পক্ষে থাকাই বেশি যুক্তিযুক্ত লেগেছে আমার কাছে। আমি নিজের ব্যাক্তিগত সমস্যার জন্য তাকে বিপদে ফেলতে চাইনি।
৩) প্রায় দেড়মাসের মতো আমি ওদের বাড়িতে ছিলাম। আমার বাসার কোন মানুষের সাথে কোনরকম যোগাযোগ করতে দেয়া হয়নি আমাকে। কিন্তু, ওই পরিবার প্রতিটা মুহুর্তে আমার পরিবারকে অভিশাপ হতে শুরু করে নানারকম গালিগালাজ করতো। নিজের পরিবারের জন্য অপমানজনক কথা শুনাটা আমার পক্ষে কষ্টকর ছিলো। উপরন্তু, আমার জাওজ তার পরিবারের পক্ষে থাকার জন্য আমার সাথে খুব একটা ভালো করে মিশতো না। খোঁটা দিতো, বডি শেমিং করতো। তার পরিবারের জন্য এমন করছে ভাবলেও, যখন পরিবারের কেগ আশেপাশে থাকতো না তখনও খোঁটা দিলে নিজেকে অসহায় লাগতো। বাসর রাতে আমি তার সাথে নারীসুলভ অভিমান দেখিয়েছি, সেই জড়তা থেকে ভাবতাম, হয়তো আমার প্রতি তার মনটা এখনো নরম হয়নি তাই এমন করছে।
৪) খোঁটা দেয়ার অভ্যাস থাকলেও, তার মাঝে একটা ভালোবাসাকাতর মানুষ দেখতে পেতাম। পরিবারের কেউ তাকে খুব একটা আগলে রাখেনা। মনে হতো আরেকটু বেশি ভালোবাসলে হয়তো তার কাছে যাওয়া যাবে। কিন্তু তার কাছে গেলে সে আরো দূরে সরাতো। অজুহাত, তার পরিবার। (আমি বুঝতে পারিনা তার পরিবারের কারণে আমার থেকে দূরে ছিলো নাকি আমার আচরণে অসন্তুষ্ট হয়ে) স্ত্রী হিসেবে তার কাছে যেতে চাইতাম, কিন্তু যখন সে দূরে সরাতো, তখন নিজের প্রতি একটা ঘৃণা কাজ করতো। মনে হতো চলে গেলেই সে ভালো থাকবে।
৫) আমার পরিবার কিছুতেই নরম হয়নি, দেড় মাসে নরম হওয়াটা স্বাভাবিকও না অবশ্য। এর মধ্যে, আমার পরিবার ছাড়া আমাকে রাখলেও, সে সন্তুষ্ট হতে পারেনি মনে হয়। সে রোজ বলতো, আমার পরিবার আমাকে চায়না, কোনরকমে তার ঘাড়ের মধ্যে চাপিয়ে দিয়েছে, তারা কোন খোঁজ নিচ্ছেনা। আমার এক মামা কথা বলতো, ওই মামার থেকে ৩ লাখ টাকা নিয়ে দিতে বলতো, তাহলে ব্যবসা করে আমাকে নিয়ে আলাদা থাকতে পারবে। আবার সে-ই বলতো, দরবার হলে আমাকে ছেড়ে দেয়া তার জন্য কোন ব্যাপার না, মোহরানা আদায় করার মতো সামর্থ্য তার যথেষ্টই আছে। আমার ভাশুরের সাথে যতোটা কথা বলতাম, বা আমার শশুরবাড়ির লোকজন, তাদেরকে আমি নরমই দেখেছি। আমার জাওজের ব্যাপারেও মনে হতো, সে সবাইকে নিয়ে হাসিখুশি থাকতে চায়। কিন্তু এই ঝামেলাতে সে আসলেই কী চাইছিলো, এটা একটা রহস্যের মতো।
৬) আমি ২য়বার প্যানিকড হয়ে গেলে ও জিডি করার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু, থানা জিডি নেয়নি। তখন পুলিশ বলে তোমার বউকে বলো সে খোলা তালাক দিয়ে চলে যাক। আমার পরিবারে ফেরার মতো মুখ ছিলোনা, সিদ্ধান্ত নেই চাকরি নিয়ে কোথাও চলে যাবো, কিন্তু এই বাড়িতে থাকবোনা। ও বললো, যাওয়ার দরকার নেই, তুমি থাকো, মোহরানা কমিয়ে নিলে আইনিভাবে আটকাতে পারবেনা। সবার সামনে মোহরানা শোধ করেছে এমন একটা মিথ্যা দলিলে সাক্ষর রেখে নতুন করে কাবিননামা তৈরী করে। কিন্তু মিথ্যা দলিলে সাক্ষর করার কারণে আমি রেগে যাই। সে তখন খুব ভালোমানুষি দেখিয়ে আমার রাগকে নিয়ন্ত্রণ করালেও আমি আমার বাবার প্রতি এতোটা মিথ্যাচার হতে দিতে পারিনি। সেখান থেকে আমার মেজাজ বিগড়ে যেতে থাকে। তখন পরিবারের সামান্য কথাতেও আমার আকাশচুম্বী রাগ হতো। সামান্য খোঁটাও সহ্য হতো না। আমি এতো অসুস্থ হয়ে পরি যে  ৬ দিন বিছানার বাহিরে যাওয়াও অসম্ভব হয়ে পরে। তারপর বললাম, আমি চলে যাবো। আমাকে বাসায় পাঠিয়ে দিন। আমি ভাইকে নিয়েছি, সে ভাইয়ের সাথে আসতে দেয়নি। তখন, "আমি তার স্ত্রী নই, সে আমার স্বামী নয়" মর্মে আরেকটা দলিলে সাক্ষর করায়। পরদিন আমি বাসায় আসি, কিন্তু আমার পরিবার জানতে পারলে কাগজ ক্যানসেল করানোর জন্য জোরাজুরি করতে থাকে। তারপর এই কাগজ ক্যানসেল করিয়ে আনি। কাগজ ক্যানসেল করার সময় সে বলছিলো, আমার প্রতি দয়া হয়েছে তার, একটা অসহায় মেয়েকে এভাবে রাখতে ভালো লাগেনি, মানবতা থেকে ক্যানসেল করাতে এসেছে৷ কিন্তু এছাড়া তাকে যথেষ্ট আন্তরিক মনে হয়েছে। সবথেকে বড় কথা, সেবার প্রথম তার চোখে মায়া দেখেছি।
৭) আমার পরিবার ক্যানসেল করানো কাগজ দেখে, এতে কাজির সিগনেচার না থাকায় কাবিননামা বাতিল হয়েছে। পরে তাকে আসতে বলা হয়। কিন্তু তার কথা ছিলো, আমার বাবা যেন তার বাবাকে কল করে ক্ষমা চায়। এটা আমার বাবার পক্ষে করা সম্ভব না বলে, আমার পরিবার কোর্টে যেতে চায়। পারিবারিকভাবে বসে ব্যাপারটা মীমাংসা করার জন্য অনেক চেষ্টা করা হলেও তাদের পরিবার বসতে রাজি হয়নি। শেষ পর্যন্ত সে দেশ ছেড়ে চলে যায়। যাওয়ার সময় আমাকে বলে, তোকে মায়া করে ভুল করেছি।
৮) ৪ মাস অপেক্ষায় থাকার পর, আমার পরিবার নিষ্ঠুর আচরণের শর্তে সংসার ভেঙে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। আমিও তাকে মাফ করতে পারবোনা বলে কাগজে প্রয়োজনীয় সিগনেচার দিয়েছি। কিন্তু আমি নিজের কাজগুলোর জন্যও লজ্জিত। আমার মনে হচ্ছে, একটা মানুষ বিভ্রান্ত হয়ে ভুল করেছে হয়তো। ওকে বুঝালে বুঝানো যাবে, ওর ভয়গুলো কাটালে কাটানো যাবে। এখানে নিষ্ঠুর আচরণের শর্ত পূরণ হয়েছে কী না আমি জানিনা। আমার পরিবার বিয়ে করাতে চাইছে, কিন্তু একজন মেয়ে হিসেবে সংসারে হিকমত অবলম্বন করতে না পারার কারণে আমি আল্লাহর কাছে লজ্জিত। তার প্রতি বিশ্বাস কিংবা করুণা, কোনটাই অনুভব করছি না আমি। কিন্তু নতুন কোন সংসার শুরু করার অনুমতি কী পাবো আমি? আল্লাহর কাছে কী এই সংসারের বৈধতা শেষ হয়েছে?

1 Answer

0 votes
by (583,410 points)
বিসমিলাহির রাহমানির রাহিম
জবাবঃ- 
"আমি তার স্ত্রী নই, সে আমার স্বামী নয়" মর্মে আরেকটা দলিলে সাক্ষর করায়।

এই কাগজে যদি আপনি সাক্ষর করেন, আর আপনার তালাকের অধিকার থাকে, তাহলে তালাক হয়ে যাবে।তাছাড়া যদি সেও সাক্ষর করে, তাহলেও তালাক হয়ে যাবে। তিন হায়েয গত হলে, আপনি অন্যত্র বিয়ে বসতে পারবেন।

অতীব জরুরী ও সাধারণ মাস'আলা মাসাঈল আয়ত্বে না থাকার কারণে দৈনন্দিন জীবনে দ্বীন-ইসলাম পালন করতে, যে সমস্ত দ্বীনি ভাই-বোন থমকে দাড়ান,এবং যাদের দ্বীনি ইলম অর্জনের কাছাকাছি কোনো নির্ভরযোগ্য মাধ্যম নেই, মূলত তাদেরকে দিকনির্দেশনা দিতেই আমাদের এ ক্ষুদ্র প্রয়াস .....
মুহতারাম/মুহতারামাহ!
দ্বীনের পরিধি অনেক ব্যাপক, সকল বিষয়ে আলোচনা করা বা দিকনির্দেশনা দেওয়া স্বল্প পরিসরের এই ভার্চুয়ালি মাধ্যম দ্বারা আমাদের পক্ষে সম্ভব নাও হতে পারে। চেষ্টা করলেও প্রশ্নকারীর পিপাসা মিটানো সম্ভব হবে না। প্রত্যেক বিষয়ে আমরা শুধুমাত্র সামান্য আলোকপাত করে থাকি।
উপরোক্ত প্রশ্নটির ব্যাপারে উলামায় কেরামের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে। মতবিরোধপূর্ন প্রশ্নগুলো উত্তর দেওয়ার জন্য স্থান, কাল, পাত্র অনেক কিছুই জানার প্রয়োজন হয়। যেটা অনলাইনে জানা সম্ভব হয় না।
তাই এই প্রশ্নগুলোর উত্তরের জন্য আপনার এলাকার সংশ্লিষ্ট উলামায় কেরামের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করা আপনার জন্য কল্যাণকর হবে বলেই আমাদের ধারণা।
তাছাড়া ইলম অর্জনের জন্য সফর করা অত্যান্ত  জরুরী। এবং কষ্ট করে ইলম অর্জন করাই আমাদের  আকাবির আসলাফদের রীতি ও নীতি। এদিকেই কুরআনের এই আয়াত ইঙ্গিত দিচ্ছে,
ۚفَلَوْلَا نَفَرَ مِن كُلِّ فِرْقَةٍ مِّنْهُمْ طَائِفَةٌ لِّيَتَفَقَّهُوا فِي الدِّينِ وَلِيُنذِرُوا قَوْمَهُمْ إِذَا رَجَعُوا إِلَيْهِمْ لَعَلَّهُمْ يَحْذَرُونَ
তাদের প্রত্যেক দলের একটি অংশ কেন বের হলো না, যাতে দ্বীনের জ্ঞান লাভ করে এবং সংবাদ দান করে স্ব-জাতিকে, যখন তারা তাদের কাছে প্রত্যাবর্তন করবে, যেন তারা বাঁচতে পারে।(সূরা তাওবাহ-১২২)


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
আপনি বিস্তারিত জানতে স্ব-শরীরে কোনো দারুল ইফতায় যোগাযোগ করবেন।
প্রশ্ন করার জন্য আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ।আল্লাহ তা'আলা আপনার ইলম অর্জনের স্পৃহাকে আরোও বাড়িয়ে দিক, আমীন!!


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...