ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া
রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাব
https://ifatwa.info/41307/
নং ফাতওয়াতে উল্লেখ রয়েছে যে,
অসুস্থ ব্যক্তির রোযা রাখা নিয়ে
কিছু মাসয়ালা জেনে নেইঃ
রোযার কারণে যে রোগ বৃদ্ধি পায়
বা রোগ-ভোগ দীর্ঘ হওয়ার প্রবল আশঙ্কা থাকে সে রোগে রোযা ভাঙ্গার অবকাশ আছে। উল্লেখ্য, আশঙ্কা যদি সুস্পষ্ট
হয় তাহলে তো কথা নেই। নতুবা একজন অভিজ্ঞ ও দ্বীনদার চিকিৎসকের মতামতের প্রয়োজন হবে।-আলমুহীতুল
বুরহানী ৩/৩৫৯; আদ্দুররুল মুখতার ২/৪২২
রোগের কারণে ডাক্তার যদি বলে, এ রোজার কারণে
রোগের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে বা সুস্থতা বিলম্বিত হতে পারে, তাহলে রোজা ভাঙা
যায়। কিন্তু সামান্য অসুখ, যেমন—মাথাব্যথা, সর্দি,
কাশি অনুরূপ কোনো সাধারণ রোগ-বালাইয়ের কারণে রোজা ভঙ্গ করা জায়েজ
নয়। মনে রাখতে হবে, রোগের কারণে যেসব রোজা ভঙ্গ হয়, সেগুলো পরে একটির
বদলে একটি করে কাজা করে নিতে হবে।
রোজা পালনে রোগ বৃদ্ধি পেলে পরহেজগারি
মনে করে রোজা পালন করা অনুচিত। এ অবস্থায় রোজা ভঙ্গ করা জরুরি। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমরা তোমাদের
নিজেদের হত্যা কোরো না। নিঃসন্দেহে আল্লাহ তোমাদের প্রতি অতিশয় দয়ালু।’ (সুরা : নিসা, আয়াত : ২৯)
ইমাম কুরতুবী রহঃ বলেন (২/২৭৬):
"রোগীর অবস্থা দুটো:
১। মোটেই রোযা রাখার সক্ষমতা না
থাকা; তার জন্য রোযা না-রাখা ওয়াজিব।
২। কিছু শারীরিক ক্ষতি ও কষ্টের
সাথে রোযা রাখতে সক্ষম হওয়া। এ ব্যক্তির জন্য রোযা না-রাখা মুস্তাহাব। এমতাবস্থায় কেবল
অজ্ঞ লোকই রোযা রাখে।"
বার্ধক্যজনিত কারণে রোযা রাখতে সক্ষম
না হলে রোযা না রাখার অনুমতি রয়েছে। এক্ষেত্রে প্রত্যেক রোযার পরিবর্তে একজন গরীবকে
দুবেলা খাবার খাওয়াবে অথবা পৌনে দু কেজি গমের মূল্য সদকা করবে।
আল্লাহ তাআলা বলেন-
وَعَلَى
الَّذِينَ يُطِيقُونَهُ فِدْيَةٌ طَعَامُ مِسْكِينٍ
আর যাদের রোযা রাখা অত্যন্ত কষ্টকর
তারা ফিদয়া-একজন মিসকীনকে খাবার প্রদান করবে।-সূরা বাকারা : ১৮৪; আলমুহীতুল বুরহানী
৩/৩৬১; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২০৭
যে বৃদ্ধ বা অসুস্থ ব্যক্তির রোযা
রাখার সামর্থ্য নেই এবং পরবর্তীতে কাযা করতে পারবে এমন সম্ভাবনাও নেই এমন ব্যক্তি রোযার
পরিবর্তে ফিদয়া প্রদান করবে।-সূরা বাকারা : ১৮৪
ছাবেত বুনানী রাহ. বলেন, আনাস ইবনে মালেক
রা. যখন বার্ধক্যের কারণে রোযা রাখতে সক্ষম ছিলেন না তখন তিনি রোযা না রেখে (ফিদয়া)
খাবার দান করতেন।-মুসান্নাফে আবদুর রাযযযাক, হাদীস : ৭৫৭০
ইকরিমা রাহ. বলেন, ‘‘আমার মা প্রচন্ড তৃষ্ণা-রোগে আক্রান্ত ছিলেন এবং রোযা রাখতে সক্ষম ছিলেন না। তাঁর
সম্পর্কে আমি তাউস রাহ.কে জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি বললেন, ‘প্রতি দিনের
পরিবর্তে মিসকীনকে এক মুদ (বর্তমান হিসাবে পৌনে দুই কেজি) পরিমাণ গম প্রদান করবে’।’’-মুসান্নাফে
আবদুর রাযযাক, হাদীস : ৭৫৮১
এক রোযার পরিবর্তে এক ফিদয়া ফরয হয়। এক ফিদয়া হল, কোনো মিসকীনকে দু বেলা পেট ভরে খানা খাওয়ানো অথবা এর মূল্য প্রদান
করা।
হযরত সায়ীদ ইবনে মুসাইয়্যিব রাহ.
বলেন-
وَعَلَى
الَّذِينَ يُطِيقُونَهُ فِدْيَةٌ طَعَامُ مِسْكِينٍ
এই আয়াত রোযা রাখতে অক্ষম বৃদ্ধের
জন্য প্রযোজ্য।-মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, হাদীস : ৭৫৮৫; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৩৬৯; আদ্দুররুল মুখতার ২/৪২৬
★ সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে অসুস্থতা
যদি খুবই বেশী হয়ে থাকে তাহলে তার জন্য রোজা ভেঙ্গে ফেলা জায়েজ হয়েছে এবং পরবর্তীতে
শুধু কাযা আদায় করে দিলেই হবে, কাফফারা দেওয়া লাগবে না।