বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আরবী দু'টি শব্দ রয়েছে।
(১)ক্বাদীম(২)হাদীস
দর্শন বিদ্যার আলোকে এই দু'টি শব্দের ব্যখ্যা নিম্নরূপ--
ক্বাদীম অর্থ,যা পুরাতন,অনেক পুরাতন।যার কোনো শুরু নেই।এবং যার শেষও নেই।অর্থাৎ যা চিরকাল থাকবে,তাকেই ক্বাদীম বলা হয়ে থাকে।
হাদীস অর্থ,যা নবসৃষ্ট,যাকে তৈরী করা হয়েছে।অর্থাৎ যার শুরু আছে।যার শুরু আছে,তার শেষও আছে।অর্থা যা চিরস্থায়ী নয়।একদিন যা শেষ হয়ে যাবে।
আল্লাহ এবং আল্লাহর সমস্ত সিফাত,ক্বাদীম।যা চিরঞ্জীবী, যার শুরুও নেই এবং শেষও নেই।আল্লাহ ব্যতীত সমস্ত জিনিষ হাদীস অর্থাৎ যার শুরু রয়েছে।আর যার শুরু রয়েছে,তার শেষও আছে।
এবার মূল আলোচনায় আসা যাক,
কুরআন আল্লাহর সিফাত না আল্লাহর সৃষ্ট মাখলুক?কোনটা
এ প্রশ্নের জবাবে বলবো,
আল্লাহর অনেক সিফাত রয়েছে।এই সিফাত সমূহের মধ্যে উল্লেখযোগ্য প্রসিদ্ধ যে সিফাত রয়েছে,সেগুলোর অধিকাংশই আমরা হাদীসে বর্ণিত ৯৯টা সিফাতি নামে দেখতে পাই।
আল্লাহর সিফাত হল,কালাম।তথা আল্লাহ বক্তা,আল্লাহ কথা বলেন,আদেশ নাযিল করে,ইত্যাদি।
আমরা যদি কুরআন কে আল্লাহর সিফাতে কালাম মনে করি,তাহলে আল্লাহ যেভাবে ক্বাদীম,কুরআনও ঠিক সেভাবে ক্বাদীম।যা কখনো শেষ হবে না, ধংস হবে না।
আর যদি আমরা কুরআনকে আল্লাহর তৈরীকৃত কোনো জিনিষ মনে করি,তাহলে এর অর্থ হবে,কুরআন নবসৃষ্ট, যার শুরু রয়েছে,এবং যা একদিন ধংস হয়ে যাবে।
সুতরাং কুরআন হল,আল্লাহর সিফাতে কালামের অংশ যা ক্বাদীম,হাদীস নয়।
(২)
عَنْ مُعَاوِيَةَ بْنِ أَبِي سُفْيَانَ، أَنَّهُ قَامَ فِينَا فَقَالَ: أَلَا إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَامَ فِينَا فَقَالَ: أَلَا إِنَّ مَنْ قَبْلَكُمْ مِنْ أَهْلِ الْكِتَابِ افْتَرَقُوا عَلَى ثِنْتَيْنِ وَسَبْعِينَ مِلَّةً، وَإِنَّ هَذِهِ الْمِلَّةَ سَتَفْتَرِقُ عَلَى ثَلَاثٍ وَسَبْعِينَ: ثِنْتَانِ وَسَبْعُونَ فِي النَّارِ، وَوَاحِدَةٌ فِي الْجَنَّةِ، وَهِيَ الْجَمَاعَةُ زَادَ ابْنُ يَحْيَى، وَعَمْرٌو فِي حَدِيثَيْهِمَا وَإِنَّهُ سَيَخْرُجُ مِنْ أُمَّتِي أَقْوَامٌ تَجَارَى بِهِمْ تِلْكَ الْأَهْوَاءُ، كَمَا يَتَجَارَى الْكَلْبُ لِصَاحِبِهِ وَقَالَ عَمْرٌو: الْكَلْبُ بِصَاحِبِهِ لَا يَبْقَى مِنْهُ عِرْقٌ وَلَا مَفْصِلٌ إِلَّا دَخَلَهُ حسن
মু‘আবিয়াহ ইবনু আবূ সুফিয়ান (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি দাঁড়িয়ে বললেন, জেনে রাখো! তোমাদের পূর্ববর্তী আহলে কিতাব বাহাত্তর দলে বিভক্ত হয়েছে এবং এ উম্মত অদূর ভবিষ্যতে তিয়াত্তর দলে বিভক্ত হবে। এর মধ্যে বাহাত্তর দল জাহান্নামে যাবে এবং একটি জান্নাতে যাবে। আর সে দল হচ্ছে আল-জামা‘আত। ইবনু ইয়াহইয়া ও আমর (রহঃ) বলেন, ‘‘বিষয়টি হলো, আমার উম্মাতের মধ্যে এমন এমন দলের আর্বিভাব ঘটবে যাদের সর্বশরীরে (বিদ‘আতের) প্রবৃত্তি এমনভাবে অনুপ্রবেশ করবে যেমন পাগলা কুকুর কামড়ালে জলাতঙ্ক রোগীর সর্বশরীরে সঞ্চারিত হয়।(সুনানে আবি-দাউদ-৪৫৯৭)
প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
নবীজি সঃ বলেছেন ৭৩ তা দল এর মধ্যে ১ দল জান্নাতি এবং বাদ বাকি ৭২তা দল জাহান্নামি।সেই ৭২তা দল এর মধ্যে কেউ কি কখনো জান্নাতে যেতে পারবে?
উক্ত প্রশ্নের জবাবে মোল্লা আলী কারী রাহ লিখেন,
(كُلُّهُمْ فِي النَّارِ) : لِأَنَّهُمْ يَتَعَرَّضُونَ لِمَا يُدْخِلُهُمُ النَّارَ فَكُفَّارُهُمْ مُرْتَكِبُونَ مَا هُوَ سَبَبٌ فِي دُخُولِهَا الْمُؤَبَّدَةِ عَلَيْهِمْ وَمُبْتَدِعَتُهُمْ مُسْتَحِقَّةٌ لِدُخُولِهَا إِلَّا أَنْ يَعْفُوَ اللَّهُ عَنْهُمْ
এই ৭২ দলের মধ্যে যারা কাফির পর্যায়ের তারা চিরস্থায়ী জাহান্নামী হবে। আর যারা বেদ'আতি তারা আল্লাহ চাহে তো চিরস্থায়ী জাহান্নামি হবে না।(মিশকাত-১৭১)