বিসমিহি তা'আলা
জবাবঃ-
কাউকে অপরাধী প্রমাণ করতে হলে, শরয়ীভাবে বিচারিক প্রক্রিয়ায় তাকে অপরাধী সাব্যস্ত করতে হবে।
যেমন- কারো কোনো মাল চুরি হল।সে বিশেষ কোনো কারণে একজনকে সন্দেহ করল।
শরীয়তের ফায়সালা হল,
সে ব্যক্তি ক্বাযী বা বিচারকের নিকট গিয়ে ঐ ব্যক্তির নামে তার মাল চুরি করার অভিযোগ দাখিল করবে।
তখন কাযী সাহেব বাদীকে দু্ইজন ন্যায়পরায়ণ সাক্ষী পেশ করার আহবান জানাবেন।যদি বাদী দুইজন সাক্ষী পেশ করতে অপারগ হয়,তখন কাযী সাহেব বিবাদী কে আল্লাহর নামে নির্দোষী বলে শপথ করতে বলবেন।যদি বিবাদী শপথ করে নেয় তখন কাযী সাহেব বিবাদীর শপথের ভিত্তিতে তাকে নির্দোষ বলে রায় প্রদাণ করবেন।
যেমন হাদীসে এসেছে-
ইবনে আব্বাস রাযি থেকে বর্ণিত
ﻋﻦ ﺍﺑﻦ ﻋﺒﺎﺱ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻬﻤﺎ ﺃﻥ ﺍﻟﻨﺒﻲ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻗﺎﻝ : ( ﻟَﻮْ ﻳُﻌْﻄَﻰ ﺍﻟﻨَّﺎﺱُ ﺑِﺪَﻋْﻮَﺍﻫُﻢْ ﻟَﺎﺩَّﻋَﻰ ﻧَﺎﺱٌ ﺩِﻣَﺎﺀَ ﺭِﺟَﺎﻝٍ ﻭَﺃَﻣْﻮَﺍﻟَﻬُﻢْ ، ﻭَﻟَﻜِﻦَّ ﺍﻟْﻴَﻤِﻴﻦَ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟْﻤُﺪَّﻋَﻰ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ) .
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন, যদি লোকজন-কে তার স্রেফ দাবীর পরিপ্রেক্ষিতে উক্ত জিনিষ দিয়ে দেওয়া হয়। তাহলে লোকজন তার অপর ভাইয়ের রক্ত এবং সম্পদ-কে (নিজ বলে) দাবী করতেও কুণ্ঠা করবে ।এ জন্যই (দাবীর পক্ষে)প্রমাণ পেশ করা বাদীর দায়িত্ব এবং(প্রমাণ পেশ না হলে) শপথ গ্রহণ করা বিবাদীর দায়িত্ব।
সহীহ মুসলিম-১৭১১
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন
ﻭﻗﺪ ﻗﺎﻝ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ : ( ﺍﻟْﺒَﻴِّﻨَﺔُ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟْﻤُﺪَّﻋِﻲ ، ﻭَﺍﻟْﻴَﻤِﻴﻦُ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟْﻤُﺪَّﻋَﻰ ﻋَﻠَﻴْﻪِ )
বাদী উপর প্রমাণ পেশ করা এবং বিবাদীর জন্য শপথ গ্রহণ করা আসবে।
সুনানে তিরমিযি-১৩৪১
অন্য বর্ণনায় এসেছে
: ( ﻭﻟﻜﻦ ﺍﻟﺒﻴﻨﺔ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﻤﺪﻋﻲ ، ﻭﺍﻟﻴﻤﻴﻦ ﻋﻠﻰ ﻣﻦ ﺃﻧﻜﺮ )
বাদী উপর প্রমাণ পেশ করা এবং বিবাদীর জন্য শপথ গ্রহণ করা আসবে।(বায়হাক্বী)
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
আপনারা শুধুমাত্র সন্দেহর বশবর্তী হয়ে আপনাদের ড্রাইবারকে চুর সাব্যস্ত করতে পারবেন না।বরং চুর সাব্যস্ত করতে হলে প্রমাণ লাগবে।প্রমাণ ব্যতীত তাকে চুর সাব্যস্ত করতে পারবেন না।
প্রশ্ন হতে পারে,গাড়ী তো ড্রাইবারের দায়িত্বে ছিলো।সে ছাড়া সাধারণত অন্য কেউ গাড়ীর ভিতরে হস্তক্ষেপ করতে পারবে না।প্রতিউত্তরে বলা যায় যে,হয়তো তার বেখেয়ালিতে অন্য কেউ ফায়দা গ্রহণ করে ফেলেছে।
তাছাড়া অন্যদিকে চিন্তা করলে আরেকটা জিনিষ ফুটে উঠে যে, ড্রাইবার এর নিকট উক্ত মাল আমানত হিসেবে ছিল, আর আমানতের মালে যামানত নেই।তথা আমানতের মালে কোনোপ্রকার ক্ষতি হলে সেই আমানতের ক্ষতিপূরণ আমানতদার কে দিতে হয় না।সুতরাং আপনাদের ড্রাইবারের বেতন কেটে রাখতে পারবেন না।
আল্লাহ-ই ভালো জানেন।
উত্তর লিখনে
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ, IOM.
পরিচালক
ইসলামিক রিচার্স কাউন্সিল বাংলাদেশ