আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
299 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (37 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ

উস্তাদ,

এক অবিবাহিত বোন স্বপ্নে দেখেছেন যে,
১) একদিন রাতের বেলা উনি উনাদের বাড়িতে ঘরের ভিতর বসে আছেন কিন্তু দরজা খোলা ছিল আর উনার আম্মা দরজার বাহিরে ছিল। হঠাৎ দেখলেন যে কিছুটা দূরে উনাদের বাড়ির সীমানা ঘেষে একটি কালো শয়তান বা ভূত দাড়িয়ে আছে। এটা দেখে উনি ভয় পেয়ে যান এবং দরজার  বাহিরে থাকা নিজের আম্মাকে তারাতারি ঘরের ভিতর ঢুকে দরজা দিতে বলেন। কিন্তু আম্মা ঘুরে ঢুকার পর দরজা দেয়ার আগেই শয়তান ঘরে ঢুকে যায় এবং বোন যেই চৌকিতে বসা ছিলেন সেটা তে উঠে যায়। এটা দেখে ঐ বোন তারাতারি আয়াতুল কুরসি পড়া শুরু করে দেন এবং শয়তান টি চলে যায়।

২) আরেকদিন স্বপ্নে দেখেন যে, উনার আম্মা ও আরও কয়েকজনের সাথে উঠানে রাতের বেলা ছিলেন। পরে পাশে একটি কালো বড় আকৃতির হিংস্রপ্রানী দেখে ভয়ে সবাই ঘরে ঢুকতে শুরু করেন কিন্তু বোনটি ঘরে ঢুকার সময় হিংস্র প্রাণিটি বোনের পায়ে ধরে ফেলে। ফলে উনি আর ঘরে ঢুকতে পারছেন না। উনি চিৎকার করতেছিলেন ছাড়াবার জন্য কিন্তু উনার চিৎকার উনার আম্মা সহ কেউই শুনছেন না।

৩) অন্য আরো দুইদিন স্বপ্নে দেখেন যে,
উনি কবরস্থানে আছেন। আর উনার মনে হচ্ছিল যে, উনার ভাই মারা গিয়েছেন সেই কবর এখানে আছে। আর উনি আক্ষেপ করতেছিলেন তার ভাইয়ের মারা যাওয়ার কারণে।

৪) আরেকদিন উনি স্বপ্নে দেখেন যে, উনার ভাই সাইকেল চালাতে গিয়ে একসিডেন্ট করেছে। ফলে লোকজন তার ভাইকে এজন্য দোষারোপ করছে যে, তুমি ই এর জন্য দায়ী।আর তার পরিবার বলছে উনার ভাইয়ের পক্ষে। উল্লেখ্য যে, বাস্তবে এইদিন দিনের বেলা উনার ভাই ঢাকা গিয়েছিলেন কাজে, আর রাতের বেলার বোন এই স্বপ্ন দেখেন।

উক্ত স্বপ্নগুলোর ব্যাখ্যা জানালে ভাল হয়।
জাজাকাল্লাহু খইরন

1 Answer

0 votes
by (575,580 points)
উত্তর
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


ইসলামী দৃষ্টিতে স্বপ্ন তিন প্রকার। 
,
১. যা আল্লাহর পক্ষ থেকে বান্দাহকে দেখানো হয় যা কল্যানকর হয়।

২. শয়তানের পক্ষ হতে দেখানো হয় যাতে মানুষ খারাপ, মন্দ ভয়ংকর কিছু দেখে থাকে।
তবে শয়তান স্বপ্ন দেখানোর দ্বারা মানুষের কোন ক্ষতি করতে পারেনা।
,
 ভয়ংকর স্বপ্ন দেখলে দুশ্চিন্তার কোন কারন নেই। শয়তান মানুষকে দুশ্চিন্তায় ফেলার জন্যই এমন সব আজব আজব জিনিস দেখায়। এমনটা দেখলে ঘুম থেকে জেগে বাম দিকে থুথু ফেলে আস্তাগফিরুল্লাহ বলতে হয়। 

৩. মানুষের কল্পনা। অর্থাৎ মানুষ যা কল্পনা করে স্বপ্নে তা দেখতে পায়। 
,
হাদীস শরীফে এসেছে  

خَالِدُ بْنُ مَخْلَدٍ حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا سَلَمَةَ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا قَتَادَةَ يَقُوْلُ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلميَقُوْلُ الرُّؤْيَا مِنْ اللهِ وَالْحُلْمُ مِنْ الشَّيْطَانِ فَإِذَا رَأٰى أَحَدُكُمْ شَيْئًا يَكْرَهُه“فَلْيَنْفِثْ حِينَ يَسْتَيْقِظُ ثَلاَثَ مَرَّاتٍ وَيَتَعَوَّذْ مِنْ شَرِّهَا فَإِنَّهَا لاَ تَضُرُّه“وَقَالَ أَبُو سَلَمَةَ وَإِنْ كُنْتُ لأَرَى الرُّؤْيَا أَثْقَلَ عَلَيَّ مِنَ الْجَبَلِ فَمَا هُوَ إِلاَّ أَنْ سَمِعْتُ هٰذَا الْحَدِيثَ فَمَا أُبَالِيهَا.

আবূ ক্বাতাদাহ হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে বলতে শুনেছিঃ ভাল স্বপ্ন আল্লাহর পক্ষ থেকে হয়, আর মন্দ স্বপ্ন হয় শয়তানের তরফ থেকে। সুতরাং তোমাদের কেউ যদি এমন কিছু স্বপ্ন দেখে যা তার কাছে খারাপ লাগে, তা হলে সে যখন ঘুম থেকে জেগে ওঠে তখন সে যেন তিনবার থুথু ফেলে এবং এর ক্ষতি থেকে আশ্রয় চায়। কেননা, তা হলে এটা তার কোন ক্ষতি করতে পারবে না। 

আবূ সালামাহ বলেনঃ আমি যখন এমন স্বপ্ন দেখি যা আমার কাছে পাহাড়ের চেয়ে ভারি মনে হয়, তখন এ হাদীস শোনার ফলে আমি তার কোন পরোয়াই করি না। [বুখারী ৫৭৪৭ মুসলিম পর্ব ৪২/হাঃ ২২৬১, আহমাদ ২২৭০৭] 
,
★দুঃস্বপ্ন দেখলে এটি কাহারো কাছে বলা ঠিক নয়,শয়তানের অনিষ্ট ও কুমন্ত্রণা থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করতে হবে। এবং এর জন্য আউজুবিল্লাহি মিনাশ শাইতানির রাজীম পড়তে হবে। কারণ, খারাপ স্বপ্ন শয়তানের কুপ্রভাবে হয়ে থাকে।
ঘুম ভাঙার পর বাঁ দিকে তিনবার থুথু নিক্ষেপ করতে হবে। 
,
বিস্তারিত জানুনঃ 
,

★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই বোন,
(১.৪)
প্রশ্নে উল্লেখিত স্বপ্ন এটি শয়তানের পক্ষ থেকে দেখানো হয়েছে।
বাস্তবতার সাথে এর কোনো মিল নাই।
তবে এই স্বপ্ন আপনি কাহারো কাছে বলবেননা।
শয়তানের অনিষ্ট ও কুমন্ত্রণা থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করতে হবে।

(০২)
ইবনে সিরীন [রহ] বলেন- যদি কেউ স্বপ্নে হিংস্র প্রাণী দেখে, তবে মনে করতে হবে, তা শয়তান এবং তাকে প্ররোচিত করতে উদ্যত হয়ে আছে। এজন্য তাকে দীনি কাজে মনোনিবেশ করতে হবে। যদি কেউ হিংস্র প্রাণীর মাধ্যমে আঘাত প্রাপ্ত হয়, তাহলে শয়তান তার ওপর চড়াও হয়ে গেছে। সে রিপু ও জৈব তাড়নার বশবর্তী হয়ে পড়বে এবং নিস্কৃতির চেষ্টা করবে। সূত্র : আর-রুইয়াতু ওয়াত-তাবীর, ইবনে সিরীন [রহ] 
,
সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ব্যাক্তি দ্বীনি কাজে মনোনিবেশ করবেন।
,
(০৩)

ومن رای انہ مات…………ان رای شیئا من ہیئۃ الاموات کالغسل والکفن فذالک زیادۃ فی نقص دینہ (تعطیر الانام ۲۹۱؍ج۲؍باب المیم،موت،مطبوعہ مصر)

যার সারমর্ম হলো কেহ স্বপ্নে দেখে যে সে মারা গিয়েছে,,বা মৃতদের হালত,কাফন গোসল ইত্যাদি  দেখে,তাহলে সেটি নিজের দ্বীনের কমতি মনে করতে হবে।
,
ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়্যাহ তে এসেছে যে স্বপ্নে মৃত মানুষ দেখা এটি কবরের কথা স্বরন করে দেওয়ার জন্য।
(ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়্যাহ ২৯/১৬০)

★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে উক্ত বোন নিজের আমলের কমতি মনে করবে।

নিজ আমল বাড়িয়ে দিবে,দ্বীনদার লোকদের সাথে উঠাবসা করবে,পবিত্র হালতে থাকতে হবে,অহংকার থেকে বেঁচে থাকতে হবে। 
বেশি বেশি কুরআন তেলাওয়াত, যিকির আযকার,ফরজ সহ নফল নামাজ পড়তে হবে। 
দান ছদকাহ করতে হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...