আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
85 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (36 points)
আসসালামু আলাইকুম,
আমি স্পেনের পালমা সিটিতে থাকি। এইখানে আলহামদুলিল্লাহ আজকে প্রথম বাঙালীদের মসজিদের ব্যবস্হা হয়েছে। আমার প্রশ্নগুলো হলো;
১/ এইখানে যারা বাঙালিরা আছেন তারা Muslim pro Apps এর সময়সূচি অনুসরণ করেন। যেটি মুলত শাফেয়ী মাযহাবের মত অনুযায়ী সময় নির্ধারিত। কিন্তুু এইখানে আমরা যারা আছি তারা বেশিরভাগই হানাফি মাযহাবের অনুসারী। এখন উনাদের আমি কিভাবে দলিল সহ এই বিষয়টা বোঝাবো?
২/ আমি জেনারেল লাইনের ছাত্র ছিলাম। আলহামদুলিল্লাহ আমার তেলাওয়াত শুদ্ধ মুখস্থ সূরা গুলো বিশেষ করে এবং আরও শুদ্ধ করার চেষ্টায় আছি । কিন্তুু বর্তমানে যিনি ইমাম সাহেব আছেন উনি দাখিল পাশ এবং কুরআনের হাফেজ অন্যদের কাছ থেকে শুনেছি আল্লাহই ভালো জানেন। বিষয় হলো উনার তেলাওয়াতের কিছু কিছু জায়গায় কখনো লাহনে জ্বলি কখনো বা লাহনে খফির ভুল আছে। আর এইখানে আপাতত অন্য কোনো ইমাম/আলেম নেই। কমিটির কয়েকজন আমাকে ইমামতির দায়িত্ব নিব কি না জিজ্ঞেস করেছিলেন,বর্তমান ইমাম সাহেবের তেলাওয়াতের কারণে। কিন্তুু আমি ইমামতির দায়িত্ব নেওয়ার জন্য নিজেকে যোগ্য মনে করিনা এবং জুমার নামাজের খুৎবা আমি পারি না; এমতাবস্থায় আমার করণীয় কি?
৩/ এই মসজিদেই তারাবী এবং এশার নামাজের জন্য দ্বিতীয় জামাতের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বর্তমান মুসল্লীদের ৩/৪ ভাগের ১ ভাগ মুসল্লীদের জন্য, কারণ ১ম জামাতের সময়ই উনাদের প্রত্যেকের কাজ থাকে প্রায় ১০/১২ জন একই কাজ করেন। যেটি বর্তমানে আমি পড়াচ্ছি শুধু এশার নামাজ আর তারাবীর নামজ। এইটা ঠিক হচ্ছে কি না?
এশার নামাজের ওয়াক্ত শুরু রাত ৮:১৭-এ এবং ১ম জামাত ৮:৩০-এ আর ২য় জামাত ১০:৩০-এ।
অহংকার থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাই।
লক্ষনীয় বিষয় হলো বর্তমানে পুরো মসজিদের মুসল্লীদের মধ্যে দ্বীন সম্পর্কে আমি আর ইমাম সাহেব ছাড়া কারও তেমন জ্ঞান নেই।
যদি যোগ্য আলেমের সন্ধান পান তখন উনাকেই ইমাম হিসেবে রাখা হবে। এর আগ পর্যন্ত আমার জন্য করনীয় কি?

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 

(০১)
তারা যে মাযহাব মানছে,সেই মাযহাবই মানতে দিন। তাদেরকে বুঝানোর দরুন ফিতনা হতে পারে, ফিতনা ছড়ানো ঠিক হক হবেনা।

সুতরাং আপনি আপনার মাযহাব মোতাবেক সময়ে নামাজ আদায় করবেন।
তাদের মাযহাব অনুপাতে আসর সহ অন্যান্য সমস্ত নামাজ পড়লেও সমস্যা নেই।

তবে আসর নামাজে তাদের সময় হিসেবে ওয়াক্ত আসার আধা ঘন্টা বা পৌনে এক ঘন্টা পর আদায়ের চেষ্টা করবেন।

(০২)
মসজিদের ইমামের তিলাওয়াত শুদ্ধ হতে হবে।
কেননা তার নামাজের উপরেই সকলের নামাজের শুদ্ধতা নির্ভর করে।

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইমাম ও মুয়াযযিনের ব্যাপারে বলেছেন,
ﺍﻹﻣﺎﻡ ﺿﺎﻣﻦ ﻭﺍﻟﻤﺆﺫﻥ ﻣﺆﺗﻤﻦ، ﺍﻟﻠﻬﻢ ﺃﺭﺷﺪ ﺍﻷﺋﻤﺔ ﻭﺍﻏﻔﺮ ﻟﻠﻤﺆﺫﻧﻴﻦ
‘ইমাম হচ্ছে দায়িত্বশীল আর মুয়াজ্জিন আমানতদার, হে আল্লাহ! ইমামদের সঠিক পথ দেখান এবং মুয়াজ্জিনদেরকে ক্ষমা করুন’। (তিরিমিযী ২০৭)

★শরীয়তের বিধান হলো কুরআনে কারীম শুদ্ধ করে পড়তে পারে এমন ব্যক্তি অশুদ্ধ তিলাওয়াত কারী ইমামের পিছনে নামায পড়লে তার নামায হয় না। 

فى الفتاوى الهندية – ولا يصح اقتداء القارئ بالأمي وبالأخرس
কিরাত বিশুদ্ধ এমন ব্যক্তির নামায কেরাত অশুদ্ধ এমন ব্যক্তির পিছনে শুদ্ধ হয় না। 

ফাতাওয়া শামী- ২/৩২৪
ফাতাওয়া হিন্দিয়া-১/১৪৩-১৪৪
আলবাহরুর রায়েক-১/৬৩০-৬৩১
ফাতাওয়া তাতারখানিয়া-২/২৫৬
বাদায়েউস সানায়ে-১/৩৫২
আল হিদায়া-১/১৩০


فى الفتاوى الهندية – ولا يصح اقتداء القارئ بالأمي
 
উম্মির(অর্থাৎ যার কেরাত অশুদ্ধ) পিছনে ক্বারীর(অর্থাৎ যার ক্বিরাত বিশুদ্ধ) ইকতিদা সহীহ নেই। ফাতাওয়া শামী- ২/৩২৪, ফাতাওয়া হিন্দিয়া-১/১৪৩-১৪৪, ফাতাওয়া তাতারখানিয়া-২/২৫৬

الدر المختار وحاشية ابن عابدين (رد المحتار) (1/ 581):
"(و) لا (غير الألثغ به) أي بالألثغ (على الأصح) كما في البحر عن المجتبى، وحرر الحلبي وابن الشحنة أنه بعد بذل جهده دائماً حتماً كالأمي، فلايؤم إلا مثله
সারমর্মঃ
যে ব্যাক্তি কিরাআত শুদ্ধ পড়ার উপর শক্তি রাখেনা,সে কিরাআত শুদ্ধ পাঠ কারীর ইমাম হতে পারবেনা।
তবে তার মতো ব্যাক্তিদের ইমাম হতে পারবে।    
আরো জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,    
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার ইমাম হওয়া ছাড়া সমস্যার সমাধান দেখছিনা।

ঐ ইমাম সাহবের লাহনে জলি হয়ে গেলে তার পিছনে আপনার নামাজই সহীহ হবেনা।

(০৩)
তারাবিহ এর জন্য ২য় জামাতের ব্যবস্থা উক্ত মসজিদে করা যাবে।
তবে ঈশার নামাজের জন্য ২য় জামাত করা মাকরুহ হবে।

আপনি যেহেতু ১ম জামাতের ইমামতি করছেন,সুতরাং আপনার ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা নেই।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...