ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাব
https://ifatwa.info/86437/
নং ফাতওয়াতে উল্লেখ রয়েছে যে,
□ ইদ্দত কাকে বলে? সে সম্পর্কে
ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়ায় বর্ণিত রয়েছে..
هي
انتظار مدة معلومة يلزم المرأة بعد زوال النكاح حقيقة أو شبهة المتأكد بالدخول أو
الموت كذا في شرح النقاية للبرجندي.
ইদ্দত হল, স্বাভাবিক বিবাহ
বিচ্ছেদ বা খালওয়াতে সহীহা (তথা স্বামী-স্ত্রী সহবাসের নিকটবর্তী আচরণ বা নির্জনে বসবাস)
বা স্বামীর মৃত্যুর পর মহিলা কর্তৃক শরীয়ত নির্ধারিত কিছুটা সময় অপেক্ষা করা। (অন্য
কোথাও বিয়ে না বসা)
□ কোন কোন মহিলার উপর ইদ্দত নেই। নিম্নোক্ত চারজন
মহিলা ব্যতীত ছোটবড় সকল স্ত্রীর উপরই ইদ্দত পালন ওয়াজিব।
أربع
من النساء لا عدة عليهن: المطلقة قبل الدخول، والحربية دخلت دارنا بأمان تركت
زوجها في دار الحرب والأختان تزوجهما في عقد واحد فيفسخ بينهما والجمع بين أكثر من
أربع نسوة فيفسخ بينهن كذا في التتارخانية ناقلا عن الخزانة
চার প্রকার মহিলাদের জন্য ইদ্দত নেই।
(১) সহবাস বা খালওয়াত (তথা স্বামী-স্ত্রী নির্জনে
বসবাস) এর পূর্বে তালাক দিলে।
(২) হারবীয়্যাহ মহিলা যে দারুল ইসলামে নিরাপত্তা
নিয়ে এসেছে। যে কিনা তার স্বামীকে দারুল হরবে রেখে এসেছে। দারুল ইসলামে এসে ইসলাম গ্রহণ
করে নিলে।
(৩) দুই বোনকে এক মজলিসে বিয়ে করার পর উভয়ের মধ্যে
বিয়ে ভেঙ্গে ফেললে।
(৪) চারের অধিক বিয়ে করার পর পঞ্চম জনের বিয়ে
ভেঙ্গে দিলে। (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/৫২৬)
□ ইদ্দত দুই প্রকার (১) তালাকের ইদ্দত (২) স্বামী
মৃত্যুর ইদ্দত
(১) তালাকের ইদ্দত সাধারণত তিন হায়েয বা তিন মাসিক।
ছোট বালিকা যার হায়েয এখনো আসেনি বা বৃদ্ধা মহিলা যার হায়েয বন্ধ হয়ে গেছে,
তার ইদ্দত হল তিন মাস। আর স্ত্রী গর্ভবতী হলে উক্ত স্ত্রীর ইদ্দত হল
সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়া।
(২) স্বামী মৃত্যুবরণ করলে তখন স্ত্রীর ইদ্দত
হল চার মাস দশদিন। স্ত্রী সন্তানসম্ভাবনা হলে স্ত্রীর ইদ্দত হল এক্ষেত্রে সন্তান ভূমিষ্ঠ
হওয়া।
ইদ্দত পালন কালে স্বামীর উপর স্ত্রীর ভরণপোষণ ওয়াজিব।
★ সাজসজ্জা পরিত্যাগঃ
عَلَى
الْمَبْتُوتَةِ وَالْمُتَوَفَّى عَنْهَا زَوْجُهَا إذَا كَانَتْ بَالِغَةً
مُسْلِمَةً الْحِدَادُ فِي عِدَّتِهَا كَذَا فِي الْكَافِي
স্বামীর মৃত্যু বা তিন তালাক/এক তালাকে বায়েন এর ইদ্দত হলে, স্ত্রী খোশবু ও সাজসজ্জাকে পরিহার করবে। ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া ১/৫৩৪
□ ইদ্দত পালনকারিণীর অবস্থানঃ
عَلَى
الْمُعْتَدَّةِ أَنْ تَعْتَدَّ فِي الْمَنْزِلِ الَّذِي يُضَافُ إلَيْهَا
بِالسُّكْنَى حَالَ وُقُوعِ الْفُرْقَةِ وَالْمَوْتِ كَذَا فِي الْكَافِي.
ইদ্দত পালনকারীণী ঐ ঘরে ইদ্দত পালন করবে যেখানে সে বিবাহ বিচ্ছেদন
সময়ে বা স্বামীর মৃত্যুকালীন সময়ে অবস্থান করে আসছিলো। ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/৫৩৫
الْمُتَوَفَّى
عَنْهَا زَوْجُهَا تَخْرُجُ نَهَارًا وَبَعْضَ اللَّيْلِ وَلَا تَبِيتُ فِي غَيْرِ
مَنْزِلِهَا كَذَا فِي الْهِدَايَةِ.
স্বামী মৃত্যুর ইদ্দত হলে স্ত্রী স্বামীর বাড়ীতেই অবস্থান করবে।
বিশেষ প্রয়োজন হলে দিনে ও রাত্রের প্রাথমিক অংশে বাহিরে যেতে পারবে। ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া; ১/৫৩৪
খুসাইফ রাহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি সায়ীদ ইবনুল মুসাইয়্যিব রাহ.-কে জিজ্ঞাসা
করলাম,যে মহিলার স্বামী মারা গেছে সে (ইদ্দত অবস্থায়) কি ঘর
থেকে বের হতে পারবে? তিনি বললেন,না। -মুসান্নাফ
ইবনে আবী শাইবা, হাদীস ১৯১৯৮
সুতরাং বিনা ওজরে ঘর থেকে বাইরে যাওয়া জায়েয হবে না। আর শরীয়তের
হুকুমের লঙ্ঘন করাই পাপ। আর পাপ বলতেই ঈমানের উন্নতির পথে বাধা এবং আখেরাত ও কবরের
যিন্দেগী সুখময় হতে বাধা। মুমিনের জন্য শুধু এতটুকু কথাই কোনো ফরয-ওয়াজিব বিধান পালনের
জন্য যথেষ্ট।
অবশ্য জীবিকা কিংবা অন্য কোনো মানবিক প্রয়োজনে দিনের বেলা বাইরে
যাওয়ার অবকাশ আছে। এক্ষেত্রে প্রয়োজন শেষ হওয়ার পর আবার বাড়িতে ফিরে আসা জরুরি।
আর দিনে কোনো বিশেষ ওজরে বের হলেও রাতে অবশ্যই নিজ গৃহেই অবস্থান করতে হবে।
আরো বিস্তারিত জানুন- https://ifatwa.info/10353/
★ সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
১. উক্ত প্রশ্নটি অস্পসষ্ট। প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে কোন প্রকারের
তালাক দেওয়া হয়েছে তা উল্লেখ করা হয়নি। কারণ, যদি এক/দুই তালাকে রজয়ী দিয়ে থাকে তাহলে
সহবাসের দ্বারা আবার স্ত্রী হিসেবে ফিরে আসবে।
২. আর যদি তিন তালাক দিয়ে থাকে তাহলে তার ইদ্দত এক মাস আগ থেকেই
অর্থাৎ যেই দিন তিন তালাক দেওয়া হয়েছে সেদিন থেকেই গননা শুরু করা হবে। আর ইদ্দতের মধ্যে
সহবাস করার কারণে গোনাহগার হতে হবে।