দেশের বাহিরে মাহরাম সহ পড়তে যাওয়া

Question

আসসালামুআলাইকুম।  আমি পর্তুগাল পড়তে যেতে চাচ্ছি( mbbs পরার ট্রাই করবো)। আমার স্বামী সেখানে থাকে।  আমার স্বামীর জন্য ৪ মাসের মধ্যে আসা কষ্টকর( আসবে না বললেই চলে), ৭/৮+ মাস পরপর আসতে চাচ্ছে। কিন্তু আমার তার কথা মনে পরলেই খারাপ লাগে কান্না চলে আসে, আমার স্বামীর ও কষ্ট হয়। সেখানের ইসলামিক পরিবেশ নিয়ে জানতে চাওয়ায় তিনি বললেন দ্বীন পালনে কোন সমস্যা হয় না। যার যার মতো সে থাকে। সর্বোচ্চ ওদের  কিউরিয়াসিটি থাকতে পারে ধর্ম সম্পর্কে জানার জন্য   । আর যৌন হয়রানিমূলক কিছু করতে চায়লে সাথে সাথে পুলিশে কমপ্লেইন দিলে ধরে নিয়ে যাবে। আইন ব্যাবস্থা অনেক ভালো। এখন সেখানে পড়তে যাওয়া কি আমার জন্য ঠিক হবে?
( আমার দেশে মেডিকেলে পড়ার ইচ্ছা ছিলো এবং এর মাধ্যমে দ্বীনের খেদমত করার ইচ্ছা ছিলো এবং নিজেকে আমি ওইভাবেই গুছিয়ে নিচ্ছিলাম,  কিন্তু দেশের মেডিকেলে চান্স হয়নি। ভার্সিটির ফ্রি মিক্সিং এর অবস্থা শুনে সেখানো পড়ার কোন ইচ্ছা হচ্ছেনা। কিন্তু আমার স্বামীর কাছে থেকেই আমি মেডিকেলে পড়তে পারবো। পরবর্তীতে কোর্স শেষে  কোন ইসলামিক কান্ট্রিতে বা বাংলাদেশে চলে আসবো। এতোদিনে আমার স্বামী ও পাসপোর্ট পেয়ে যাবে তখন ২ জন একসাথেই থাকতে পারবো ইনশাআল্লাহ । এমনিতে আমি পরিপূর্ণ পর্দা করি। আমার স্বামীও আমার পর্দার ব্যাপারে অনেক সচেতন। আমরা এখনো খুজ নিচ্ছি সেখানে পর্দা করে পড়াশুনা করতে কোন সমস্যা হবে কিনা।  সমস্যা হলে পড়বো না।)

Answer 1

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ-

আলহামদুলিল্লাহ!

মুসলিম অমুসলিম যে কারো কাছ থেকে জাগতিক শিক্ষা গ্রহণ করা যাবে। অমুসলিমের কাছ থেকে বৈধ হালাল টাকা গ্রহণ করতেও বাধা নাই। তবে সুদ বা মদ বিক্রয় বাবৎ অর্জিত টাকা গ্রহণ করা জায়েয হবে না।

অমুসলিম দেশে বসবাস, স্থায়ী হোক বা অস্থায়ী হোক, যখন এ এমন আলোচনা আসে, তখন তাদের ধর্মীয় নিয়ম নীতি বা তাদের সংস্কৃতি নিয়ে প্রশ্ন আসে?

তাছাড়া হাদীসে এসেছে,

আবু দাঊদ শরীফে হযরত সামুরা ইব্ন জুনদুব (রা.) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ স. ইরশাদ করেন :

ﻣﻦ ﺟﺎﻣﻊ ﺍﻟﻤﺸﺮﻛﻴﻦ ﻭﺳﻜﻦ ﻣﻌﻪ، ﻓﺎﻧﻪ ﻣﺜﻠﻪ –

“যে ব্যক্তি অমুলিমদের সাথে চলাফেরা করবে এবং তাদের সাথে বসবাস করবে, সেও তাদের অনুরূপ হবে”। (আবু দাঊদ, কিতাবুদ্দাহায়া)

হযরত জারীর ইব্ন আব্দুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ স. ইরশাদ করেন :

ﺍﻧﺎ ﺑﺮﻳﺊ ﻣﻦ ﻛﻞ ﻣﺴﻠﻢ ﻳﻘﻴﻢ ﺑﻴﻦ ﺍﻇﻬﺮ ﺍﻟﻤﺸﺮﻛﻴﻦ، ﻗﺎﻟﻮﺍ ﻳﺎ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ! ﻟﻢ؟ ﻗﺎﻝ ﻻ ﺗﺮﺉ ﺍﻱ ﻧﺎﺭﻫﻤﺎ -

“সেসব মুসলমানদের ব্যাপারে আমার কোন দায়-দায়িত্ব নেই, যারা অমুসলিমদের সাথে বসবাস করে। সাহাবায়ে কিরাম জিজ্ঞাসা করলেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ! এর কারণ কি? তিনি উত্তরে বললেন, ইসলামের অগ্নি এবং কুফরীর অগ্নি উভয়টি এক সাথে থাকতে পারেনা। কোনটি মুসলমানের আগুন, কোনটি অমুসলিমের আগুন তোমরা তা পার্থক্য করতে পারবেনা”।

বিস্তারিত জানতে.......

মুফতী তাকী উসমানী রাহ কর্তৃক লিখিত-ফেকহী মাক্বালাত (১/২৪৩) দেখা যেতে পারে।

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!

আপনি যদি অন্তরে কাফিরদের দ্বীনের দাওয়াত প্রদানের নিয়ত রাখেন, তাহলে অমুসলিম দেশে যেতে পারবেন।এমনকি স্থায়ীভাবে থাকার বন্দোবস্তও করতে পারবেন। কেননা অনেক সাহাবা তাবেইন অমুসলিমদের মধ্যে এজন্য এসে বসবাস শুরু করেছিলেন,যেন তাদের নিকট  ইসলামের বাণী পৌছানো যায়।

সুতরাং আপনি এবং আপনার স্বামী, আপনারা উভয় যদি দ্বীন প্রচারের প্রত্যয় নিয়ে দৃঢ়সংকল্প নিয়ে সেখানে বসবাস করতে চান, তাহলে আপনাদের জন্য অবশ্যই রুখসত থাকবে।