আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
166 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (28 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ।
১/
আমার বেডরুমের সেল্ফের চারটি তাক আছে।  ফ্লোর থেকে উপর পর্যন্ত...
সেল্ফের সব বইগুলা ইসলামিক। কুরআনের আয়াত লেখা আছে। এখন যদি বইগুলা সেল্ফে রেখে আমি আমার রুমের বিছানায় ঘুমালে কি আমার গুনাহ হবে? যেহেতু সেল্ফের নিচ থেকে উপর পর্যন্তই বই ইসলামিক।

২/
উত্তর দক্ষিণ দিক দিয়ে আমার বিছানা রাখা। পশ্চিম দিক দিয়ে শুয়া হয় না প্রায়ই। এখন যদি উত্তর দিক দিয়ে শুই তাহলে বুকসেল্ফ পায়ের দিকে পড়বে। এতে কি গুনাহ হবে?  উল্লেখ্য সেল্ফে কুরআন থেকে নিয়ে সব রাখা হয়।
৩/
আম্মা মকসুদুল মুমিন বই পড়তেন। এখন আমি কোনভাবেই উনারে কনভিন্স করাতে পারছি না। আহকামুন নিসা রাহে বেলায়েত দিয়েছি উনার ঐ বইটি পছন্দ। উনাকে বেহেশতি জেওর পড়াতে চাচ্ছি। এটা কি ভালো হবে?  কোন লেখক বা প্রকাশনী থেকে নিব বলে দিলে একটু ভালো হয়।

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
কুরআনের অসম্মানী হয়,এমন কোনো কাজ করা যাবেনা।
সেটি আদবের খেলাফ।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

وَعَنْ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ قَالَ: قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ: إِنَّ اللهَ يَرْفَعُ بِهٰذَا الْكِتَابِ أَقْوَامًا وَيَضَعُ بِه اٰخَرِينَ

উমার ইবনুল খাত্ত্বাব (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ তা‘আলা এ কিতাব কুরআনের মাধ্যমে কোন কোন জাতিকে উন্নতি দান করেন। আবার অন্যদেরকে করেন অবনত।

(মুসলিম ৮১৭, ইবনু মাজাহ ২১৮, আহমাদ ২৩২, দারিমী ৩৪০৮, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৫১২৫, শু‘আবূল ঈমান ২৪২৮, সহীহাহ্ ২২৩৯।)

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রাযি থেকে বর্ণিত রয়েছে।
ﻋﻦ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻠﻪ ﺑﻦ ﻋﻤﺮ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻬﻤﺎ ﻋﻦ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ : ( ﺃﻧﻪ ﻛﺎﻥ ﻳﻨﻬﻰ ﺃﻥ ﻳﺴﺎﻓﺮ ﺑﺎﻟﻘﺮﺁﻥ ﺇﻟﻰ ﺃﺭﺽ ﺍﻟﻌﺪﻭ؛ ﻣﺨﺎﻓﺔ ﺃﻥ ﻳﻨﺎﻟﻪ ﺍﻟﻌﺪﻭ )

রাসূলুল্লাহ সাঃ কুরআন সাথে নিয়ে শত্রু দেশে সফর করতে নিষেধ করেছেন।যাতেকরে শত্রুরা কুরআনকে নিয়ে গিয়ে কোনোপ্রকার অসম্মান না করতে পারে।(মুয়াত্তা মালিক-৫/২,মুসনাদু আহমাদ-২/৬,৬৩, সুনানু নাসাঈ-৮৫,সুনানু ইবনি মা'জাহ২৮৮০)

তাই কুরআন,কুরআনের যেকোনো আয়াত সম্বলিত কিতাব,লেখার সর্বোচ্চ সম্মান করা উচিত।
,  
আদবের সম্পর্ক উরফ তথা সমাজের সাথে।
যেটাকে সমাজ বেয়াদবি মনে করে,সেটা বেয়াদবি।
আর যেটাকে সমাজ আদবের মধ্যেই গননা করে,সেটা জায়েজ,আদবের মধ্যেই সেটি পড়া।
(কিতাবুন নাওয়াজেল ১৫/৬৫)
,

الأدب: ہو الطریقۃ الحسنۃ في المعاشرۃ وغیرہا۔ (بذل المجہود ۱۳؍۲۰۵ بیروت)
সারমর্মঃ সামাজিক ভাবে যেটাকে সুন্দর তরীকা বলা হয়,সেটিই আদব।

ولا تقعدوا علی مکان أرفع مما علیہ القرآن۔ (حیاۃ المسلمین ۵۴ إدارۃ إسلامیات لاہور بحوالہ: فتاویٰ محمودیہ ۳؍۵۲۹ ڈابھیل)
এমন জায়গায় তোমরা বসোনা,যেই জায়গা কুরআন থেকে উঁচুতে। 

کرہ مد رجلیہ في نوم أو غیرہ إلیہا أو إلیٰ مصحف۔ (شامي، کتاب الصلاۃ / مطلب في أحکام المسجد ۱؍۶۵۶ کراچی)
وقال ابن حجر المکي: والأولی أن لا یستدبرہ۔ (الفتاوی الحدیثیۃ مطلب في
حکم مد الرجل للمصحف أو کتب العلم ۳۰۷ دار إحیاء التراث العربي بیروت)
সারমর্মঃ কুরআনের দিকে পা দেওয়া মাকরুহ।  
,
وضع المصحف تحت رأسہ في السفر للحفظ لا بأس بہ، وبغیر الحفظ یکرہ۔ (الفتاویٰ الہندیۃ، کتاب الکراہیۃ / الباب الرابع ۵؍۳۲۲ زکریا)
সারমর্মঃ  কুরআন হেফাজতের লক্ষ্যে সফররের হালতে  মাথার নিচে কুরআন রাখা সমস্যাকর নয়।  

,
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত পদ্ধতিতে ঘুমালে এটিকে সমাজে বেয়াদবি মনে করা হয়না।
তাই এক্ষেত্রে আপনার গুনাহ হবেনা।

(০২)
সরাসরি বইগুলোর দিকে পা দেওয়া,যদি আপনাদের সমাজে বেয়াদবি মনে না করা হয়,তাহলে  এটি মাকরুহ নয়।
অন্যথায় অর্থাৎ আপনাদের সমাজে যদি এটাকে বেয়াদবী মনে করে,তাহলে তাহা মাকরুহ হবে।

তবে সেলফে যেহেতু কুরআন রাখা আছে,তাই আপনি সেদিকে কোমো ক্রমেই পা দিবেননা।

যদি অগত্যা যদি সেদিকে পা দিতেই হয়,সেক্ষেত্রে সেলফে পর্দা দিবে বা কোনো কাপড় ইত্যাদি দিয়ে ঢেকে দিবেন।

(০৩)
হ্যাঁ, এটা ভালো হবে।
এক্ষেত্রে যেকোনো প্রকাশনী হতেই আপনি বেহেশতি যিওর সংগ্রহ করতে পারেন।
সমস্যা নেই।

ইসলামিয়া কুতুবখানা-ঢাকা থেকেও নিতে পারেন।
অনুবাদক মাওলানা আহমদ মাইমূন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...