আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
106 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (13 points)

আর এভাবেই আমি তোমার ওপর আরবী ভাষায় কুরআন নাযিল করেছি যাতে তুমি মূল জনপদ ও তার আশপাশের বাসিন্দাদেরকে সতর্ক করতে পার, আর যাতে ‘একত্রিত হওয়ার দিন’ এর ব্যাপারে সতর্ক করতে পার, যাতে কোন সন্দেহ নেই, একদল থাকবে জান্নাতে আরেক দল জ্বলন্ত আগুনে।

- সূরা শূরাঃ ৪২.৭

 

  • মুহাম্মাদ সাঃ কি শুধু মক্কা ও তার চতুর্থদিকের মানুষের জন্য ? কারণ' এখানে "আরবী ভাষায় কুরআন নাযিল করেছি" - আরবি ভাষা তো শুধু আরবরাই ব্যাবহার করত। 

1 Answer

0 votes
by (575,580 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
আপনি যেই আয়াতটি উল্লেখ করেছেন,তাহা হলো,
মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ- 

وَ کَذٰلِکَ اَوۡحَیۡنَاۤ اِلَیۡکَ قُرۡاٰنًا عَرَبِیًّا لِّتُنۡذِرَ اُمَّ الۡقُرٰی وَ مَنۡ حَوۡلَہَا وَ تُنۡذِرَ یَوۡمَ الۡجَمۡعِ لَا رَیۡبَ فِیۡہِ ؕ فَرِیۡقٌ فِی الۡجَنَّۃِ وَ فَرِیۡقٌ فِی السَّعِیۡرِ ﴿۷﴾ 

আর এভাবে আমরা আপনার প্রতি কুরআন নাযিল করেছি আরবী ভাষায়, যাতে আপনি মক্কা ও তার চারদিকের জনগণকে সতর্ক করতে পারেন এবং সতর্ক করতে পারেন কিয়ামতের দিন সম্পর্কে, যাতে কোন সন্দেহ নেই। একদল থাকবে জান্নাতে আরেক দল জলন্ত আগুনে।
(সুরা আশ শূরা ০৭)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
উক্ত আয়াতের ব্যখ্যাঃ- যেহেতু মক্কা শহর দুনিয়ার সকল জনপদ ও শহরের মূল ও ভিত্তি,মক্কা মুকাররমা পুরো দুনিয়া Middle এ অবস্থান করছে,আর এর এর আশেপাশ দিয়েই যেহেতু পুরো দুনিয়া ঘিরে রয়েছে,
তাই আয়াতে উক্ত বাক্য ব্যবহার করা হয়েছে।

কুরআন শুধু মাত্র আরবদের জন্যই,বা রাসুলুল্লাহ সাঃ শুধু আরবদের জন্যই এসেছেন,এটা বুঝানো কোনোক্রমেই উদ্দেশ্য নয়।

রাসুলুল্লাহ সাঃ সমস্ত জিন-ইনসানের নিকট প্রেরিত হয়েছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ﴿

قُلْ يَا أَيُّهَا النَّاسُ  إِنِّي رَسُولُ اللَّهِ إِلَيْكُمْ جَمِيعًا﴾ 

‘‘হে মুহাম্মাদ! বলো, হে মানব সম্প্রদায়, আমি তোমাদের সকলের জন্য আল্লাহর রসূল হিসাবে এসেছি’’। (সূরা আরাফ: ১৫৮)

আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,

﴿وَمَا أَرْسَلْنَاكَ إِلَّا كَافَّةً لِّلنَّاسِ بَشِيرًا وَنَذِيرًا وَلَٰكِنَّ أَكْثَرَ النَّاسِ لَا يَعْلَمُونَ﴾

‘‘আর আমি তো তোমাকে সমগ্র মানব জাতির জন্য সুসংবাদদাতা ও ভীতি প্রদর্শনকারী রূপে পাঠিয়েছি। কিন্তু বেশীর ভাগ লোক জানেনা’’। (সূরা সাবা: ২৮) আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,

﴿تَبَارَكَ الَّذِي نَزَّلَ الْفُرْقَانَ عَلَىٰ عَبْدِهِ لِيَكُونَ لِلْعَالَمِينَ نَذِيرًا﴾

‘‘বড়ই বরকত সম্পন্ন তিনি, যিনি তারঁ বান্দার উপর নাযিল করেছেন এ ফুরকান। যাতে সে সমগ্র সৃষ্টির জন্য সতর্ককারী হন’’। (সূরা ফুরকান: ১)

আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন, ﴿وَمَا أَرْسَلْنَاكَ إِلَّا رَحْمَةً لِّلْعَالَمِينَ﴾ ‘‘হে মুহাম্মাদ! আমি তোমাকে সৃষ্টিজগতের জন্য আমার রহমত স্বরূপ পাঠিয়েছি’’। (সূরা আন্বীয়া: ১০৭) আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَإِذْ صَرَفْنَا إِلَيْكَ نَفَرًا مِّنَ الْجِنِّ يَسْتَمِعُونَ الْقُرْآنَ فَلَمَّا حَضَرُوهُ قَالُوا أَنصِتُوا فَلَمَّا قُضِيَ وَلَّوْا إِلَىٰ قَوْمِهِم مُّنذِرِينَ﴾

 ‘‘আর যখন আমি জিনদের একটি দলকে তোমার কাছে নিয়ে পাঠিয়েছিলাম, যাতে তারা কুরআন শোনে। যখন তারা সেখানে পৌঁছলো তখন পরস্পরকে বললো, চুপ করো। যখন তা পাঠ করা শেষ হলো তখন তারা সতর্ককারী হয়ে নিজ নিজ কওমের কাছে ফিরে গেল’’। (সূরা আহকাফ: ২৯)

সুতরাং কুরআন-সুন্নাহ ও ইজমা দ্বারা সাব্যস্ত যে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সমগ্র মানব ও জিন জাতির নিকট প্রেরিত হয়েছেন।

মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া  সাল্লামের দাওয়াত জিন-ইনসান সকলের জন্যই। জাতি-বর্ণ নির্বিশেষে সকলের জন্যই তার দাওয়াত। সুতরাং কেউ যেন এটি মনে না করে যে, ইসলামের কোনো হুকুম শুধু আরবদের জন্যই খাস। বরং কুরআনে মুসলিম, কাফের, মুমিন, মুনাফেক, নেককার, বদকার, সৎকর্মশীল, যালেম এবং কুরআন-হাদীছে উল্লেখিত অন্যান্য বিভিন্ন নামের প্রত্যেকের জন্য আলাদা আলাদা হুকুম উল্লেখ করা হয়েছে। কুরআন ও হাদীছে শরী‘আতের কোনো হুকুমই আরবদের জন্য খাস করে নাযিল হয়নি। 

আরবদের জন্য খাস করে শরী‘আতের কোনো হুকুমই প্রদান করা হয়নি। কেননা তার দাওয়াত ছিল সমস্ত সৃষ্টির জন্য। তবে আরবদের ভাষায় এবং কুরাইশদের ভাষায় কুরআন নাযিল হয়েছে। যাতে করে তিনি আরবদের জন্য এর তাবলীগ করতে পারেন। তাই তিনি প্রথমে আরবদের মাঝে তাবলীগ করেছেন। অতঃপর আরবদের মাধ্যমে সমস্ত জাতির কাছে দীনের দাওয়াত পৌঁছিয়ে দিয়েছেন। আল্লাহ তা‘আলা তার নবীকে সর্বপ্রথম তাবলীগ করার আদেশ দিয়েছেন এবং পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে পার্শ্ববর্তী লোকদের নিকট তাবলীগ করার আদেশ করেছেন। ইসলামের জন্য জিহাদ করার ক্ষেত্রেও তিনি প্রথমে পার্শ্ববর্তী কাফেরদেরকে অতঃপর অন্যান্য কাফেরদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করার আদেশ করেছেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...