আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
216 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (4 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম।
আমার স্বামী খুবই রগচটা, বদমেজাজী। সামান্য কারণে কিংবা কখনো কখনো বিনা কারণেই রেগে যায়। আমরা একই শহরে আলাদা বাসায় থাকি। মাঝে মধ্যে দেখা করি।

১. একদিন তার বাসায় থাকা অবস্থায় সামান্য কারণে সে খুব রেগে যায়। রেগে গিয়ে বলে, তোর সাথে সংসার করব না। এখান থেকে চলে যা। এক্ষুণি চলে যা বলছি নইলে কিন্তু মাইর খাবি। বের হ তাড়াতাড়ি। এসব বলে ঘরের জিনিসপত্র লাথি দিয়ে ফেলে দিচ্ছিল। তার এত রাগ দেখে আমি পরিশেষে চলে আসি আমার বাসায়। পরে তার রাগ ভালো হলে আমাকে আবার নিয়ে যায়। একমাস পর আমরা মিলিত হই।পরে অনেকদিন তাকে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করেছি। সে বলেছে, আমি তালাকের উদ্দেশ্যে বলিনি। রাগ হয়েছে তাই সে আমাকে চোখের সামনে রাখতে চায়নি। ভাইবোনদের সাথে রাগারাগি হলেও সে এরকমটা বলে তাদের।

২. আমি ইসলামের সব অনুশাসন সর্বদা মেনে চলার সর্বোচ্চ চেষ্টা করি। ইচ্ছা ছিল একজন হুজুর ছেলের সাথে বিয়ে করার। কিন্তু আমার স্বামী তেমন একটা ধার্মিক নয়। তাই সে মাঝে মাঝেই অভিমান করে বলে, একটা হুজুর দেখে বিয়ে করো/চলে যাও। প্রকৃতপক্ষে মন থেকে সে কখনোই এটা চায় না।

৩. সে আমাকে একসময় বলেছিল,  আমাকে ভালো না লাগলে বা আমার সাথে থাকতে না চাইলে যে কোন সময় চলে যেতে পারো। এই অধিকার তোমাকে দিলাম। এরকম টাইপের কথা।

এতে কি আমি তালাকের অধিকার পেয়েছি?
এরপর একদিন আমি তাকে এরকমটা বলেছিলাম, এভাবে আসলে আর সম্ভব হচ্ছে না। তুমি সিদ্ধান্ত নাও/তুমি ব্যবস্থা করো।

এছাড়াও আমার স্বামী রগচটা হওয়ায় খুব সামান্যতে রেগে গিয়ে প্রায়ই বলে, তোর সাথে আর সংসার করব না, তোকে ডিভোর্স দেব, তোর ব্যবস্থা করব খুব তাড়াতাড়ি ইত্যাদি। কিন্তু স্বাভাবিক অবস্থায় কিংবা রাগান্বিত অবস্থায় কোন সময়ই মন থেকে সে আমাকে তালাক দিতে চায় না। আমিও যত কষ্টই পাই না কেন মন থেকে কখনোই তার থেকে আলাদা হতে চাই না।

উপরোক্ত কোন কারণে কি আমাদের বিবাহবন্ধনে কোন সমস্যা হয়েছে? হলে করণীয় কি জানাবেন প্লিজ।

তালাকের মাসালাগুলো দেখার পর থেকে আমাদের বিবাহবন্ধন টিকে আছে কিনা, হারামে জড়িত আছি কিনা দিনরাত এই চিন্তায় আমার পাগলপ্রায় অবস্থা। আমার স্বামী আমার কাছে আসার আগ্রহ প্রকাশ করছে কিন্তু আমি আগ্রহ পাচ্ছি না। আমাকে সাহায্য করুন প্লিজ।

1 Answer

0 votes
by (589,140 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
وفي حالة الغضب يصدق في جميع ذلك لاحتمال الرد والسب إلا فيما يصلح للطلاق ولا يصلح للرد والشتم كقوله اعتدي واختاري وأمرك بيدك فإنه لا يصدق فيها كذا في الهداية...............  وفي الينابيع ألحق أبو يوسف - رحمه الله تعالى - بالخمسة ستة أخرى وهي الأربعة المتقدمة وزاد خالعتك والحقي بأهلك هكذا في غاية السروجي.
রাগের অবস্থায় স্বামী তালাকের নিয়তকে অস্বীকার করলে স্বামীর উক্ত বক্তব্য-কে সত্যায়ন করা হবে।কেননা সেই শব্দ সমূহে গালিগালাজ ও স্ত্রীর তালাকের আবেদন-কে  ফিরিয়ে দেয়ার অর্থ বিদ্যমান রয়েছে।তবে যেই সমস্ত শব্দাবলীতে শুধুমাত্র তালাকের অর্থ বিদ্যমান রয়েছে।গালিগালাজ বা (স্ত্রীর তালাকের আবেদন) ফিরিয়ে দেয়ার অর্থ বিদ্যমান না থাকে,তাহলে সেই সমস্ত শব্দাবলীর বেলায় স্বামীর অস্বীকার-কে সত্যায়ন করা হবে না।বরং তালাক পতিত হবে।যেমন- তুমি ইদ্দত গণনা করো,তুমি পছন্দ করো,তোমার বিষয় তোমার হাতে, ইত্যাদি।সুতরাং এমন শব্দাবলীর বেলায় স্বামীর অস্বীকারকে সত্যায়ন করা যাবে না,বরং তালাক পতিত হবে।(হেদায়া) ইমাম আবু ইউসুফ রাহ পূর্ববর্তী পাঁচের সাথে আরো দুইটি শব্দ সংযোগ করেন,তখন সর্বমোট ছয়টি শব্দ হয়।সেই দুইটি হল,আমি তোমার সাথে খোলা করলাম,তুমি তোমার পরিবারবর্গের সাথে মিলিত হয়ে যাও।(গায়াতুস-সুরুজী) (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/৩৭৫)

'গার্জিয়ানকে ডাকো, তোর আর সাথে সংসার করবো না'
এরকম কথাবার্তা কেনায়া তালাকের অন্তর্ভুক্ত। সুতরা এমন কথা স্বামী তালাকের নিয়তে বললে তালাকে বায়েন বায়েন পতিত হবে।এক তালাকের নিয়ত থাকলে এক তালাক,আর তিন তালাকের নিয়ত থাকলে তিন তালাক পতিত হবে।আর ভয়প্রদর্শনের নিয়তে বললে অবশ্যই তালাক পতিত হবে না। (কিতাবুন-নাওয়াযিল-৯/৪৫১)
এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/1049



সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
যেহেতু সর্বক্ষেত্রেই স্বামী বলছে যে, তার তালাকের নিয়ত ছিলো না, তাই তালাক পতিত হবে না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...