জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
(০১)
চার অবস্থায় গোসল সুন্নত :
১। জুমার নামাজের জন্য গোসল করা সুন্নত।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ-
وَعَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «غُسْلُ يَوْمِ الْجُمُعَةِ وَاجِبٌ عَلَى كُلِّ مُحْتَلِمٍ»
আবূ সা’ঈদ আল্ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির ওপর জুমু’আর দিন গোসল করা ওয়াজিব।
বুখারী ৮৫৮, মুসলিম ৮৪৬, আবূ দাঊদ ৩৪১, নাসায়ী ১৩৭৭, ইবনু মাজাহ্ ১০৮৯, আহমাদ ১১৫৭৮, দারেমী ১৫৭৮, সহীহ ইবনু হিব্বান ১২২৮।
২। দুই ঈদের নামাজের জন্য গোসল করা সুন্নত। (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১৩০৬)
৩। ইহরামের জন্য। (তিরমিজি, হাদিস : ৭৬০)
৪। হাজি সাহেবদের জন্য আরাফায় অবস্থানকালে। (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১৩০৬, আলমুজামুল কাবির : ৯/৩০৭)
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
জুমআর দিন জুম'আর নামাজে যাওয়ার আগ দিয়ে গোসল করতে হবে।
দুই ঈদের দিন ঈদের নামাজে যাওয়ার আগ দিয়ে গোসল করতে হবে।
বাকি অন্যন্য দিন নিজের সময় সুযোগ ও ইচ্ছা অনুপাতে গোসল করতে পারেন।
এই গোসল যেহেতু শরীয়তের পক্ষ থেকে আবশ্যকীয় নয়,তাই এক্ষেত্রে কোনো সময় নির্দিষ্ট নেই।
(০২)
পরিস্কার পরিচ্ছন্ন থাকা এটি ইসলামের একটি সৌন্দর্যের অন্তর্ভুক্ত। কুরআন ও হাদিসে পবিত্রতার সাথে সাথে পরিচ্ছন্ন থাকার উপরও উৎসাহ প্রদান করা হয়েছে।
আল্লাহ তায়ালা বলেন,
إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ التَّوَّابِينَ وَيُحِبُّ الْمُتَطَهِّرِينَ
নিশ্চয়ই আল্লাহ তওবাকারী এবং অপবিত্রতা থেকে যারা বেঁচে থাকে তাদেরকে পছন্দ করেন। (সূরা বাকারা-২২২)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ-
سَعِيدَ بْنَ الْمُسَيَّبِ، يَقُولُ إِنَّ اللَّهَ طَيِّبٌ يُحِبُّ الطَّيِّبَ نَظِيفٌ يُحِبُّ النَّظَافَةَ كَرِيمٌ يُحِبُّ الْكَرَمَ جَوَادٌ يُحِبُّ الْجُودَ فَنَظِّفُوا أُرَاهُ قَالَ أَفْنِيَتَكُمْ وَلاَ تَشَبَّهُوا بِالْيَهُودِ
সাঈদ ইবনুল মুসাঈয়্যাব (রাহঃ)-কে বলতে শুনেছি, অবশ্যই আল্লাহ তা’আলা পবিত্র এবং পবিত্রতা ভালোবাসেন। তিনি পরিচ্ছন্ন এবং পরিচ্ছন্নতা পছন্দ করেন। তিনি মহান ও দয়ালু, মহত্ব ও দয়া ভালোবাসেন। তিনি দানশীল, দানশীলতাকে ভালোবাসেন।
সুতরাং তোমরাও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থেক। আমার মনে হয় তিনি বলেছেনঃ তোমাদের আশপাশের পরিবেশকেও পরিচ্ছন্ন রাখ এবং ইয়াহুদীদের অনুকরণ করো না। (সুনানে তিরমিজি-২৭৯৯]
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
শরীর নাপাক না হলে, আরামের জন্য, বা অতিরিক্ত পরিচ্ছন্নতার জন্য যে প্রতিদিন যে গোসল করা হয়, তা ফরজ বা আবশ্যক কোন বিধান নয়। এটি কেবলি মনের প্রশান্তি বা পরিচ্ছন্নতার জন্য করা হয়ে থাকে। এ গোসল জরুরী নয়।
এই গোসল না করলে কোনো গুনাহ হবেনা।
এটিকে অনেকে বাঙ্গালী গোসল বলে।
সৌদি আরবে এ ধরনের গোসল তাদের অনেকেই আমাদের মতো নিয়মিত করেনা।
(০৩)
গোসল করা ওয়াজিব হবেনা।
তবে কাপড়ে নাপাকি লাগা সম্পর্কে প্রবল ধারণা হলে সেক্ষেত্রে কাপড় পাক করতে হবে।
(০৪)
এক্ষেত্রে কাপড়ে নাপাকি লাগা সম্পর্কে প্রবল ধারণা হলে,সেই নাপাকি এক দিরহাম সমপরিমাণ বা তার চেয়ে বেশি লাগলে সেক্ষেত্রে ঐ কাপড়ে নামাজ হবেনা।
এক্ষেত্রে ওয়াক্ত চলেও সেই নাপাক কাপড়ে নামাজ পড়া যাবেনা।
তবে কাপড়ে নাপাকি লাগা যদি স্রেফ আপনার মনের সন্দেহ হয়,প্রবল ধারণা যদি না হয়,সেই কাপড়ে নাপাকি কোনো গন্ধ,চিহ্ন,আলামত কিছুই না গেলে সেক্ষেত্রে সেই কাপড়ে নামাজ পড়া যাবে।
(০৫)
হ্যাঁ, হবে।
(০৬)
এক্ষেত্রে তিনবার তাহা ধোয়া লাগবে।
প্রত্যেক বার বালতির পানি চেঞ্জ করে নতুন পানিতে ধোয়া লাগবে।
প্রত্যেকবার নিংড়িয়ে নিতে হবে।