আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
80 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (16 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম।
আমি একজন মেয়ে। আজ রাতে আমি একটি স্বপ্ন দেখি। আমি আমার স্বপ্নে দুইজন ছেলেকে (বেশি বয়স না তবে বালেগ), জানি না তারা কারা। আমি তাদের বলছিলাম আমি স্বপ্নে নাবী ﷺ কে দেখেছি( যখন তাদের বলছিলাম তখন মনে হচ্ছিল নাবী ﷺ কে স্পষ্ট দেখছি)এবং তিনি আমাকে একটি বই দিয়েছেন নামাজের (নামাজের সময়ের বা নামাজের কিছুটা উস্তায এমনই আমার যতটুকু মনে পড়ছে,তবে আমাকে বই দেওয়ার পর সেই বইটা আমার সাথে ছিল কি না আমার মনে পড়ছে না)। তো সেই দুইজনকে আমি নাবী ﷺ এর চেহারার বর্ণনা দিতে পারি নি। কারণ আমি স্বপ্নে মানে স্বপ্নের ভেতরেই( বলা যায় স্বপ্নের ভেতরে স্বপ্ন) যেই নাবী ﷺ কে দেখেছি তার চেহারা আমি দেখতেপারিনি।কারণ তাঁর ﷺ এর শরীর বাদে পুরো মুখেই ছিল নূর।  মানে নূর বের হচ্ছিল। এমন চেহারা অনেক চেষ্টা করার পর ও কেউ দেখতে পারবেনা। কারণ পুরো চেহারা দিয়েই নূর বের হচ্ছিল।তাঁর ﷺ এর শরীর থেকে নয়। আর তাঁর ﷺ মাথায় থেকে খুব সম্ভবত গলা পর্যন্ত সবুজ চাদর ছিল বা পিঠ পর্যন্ত।

 বিঃদ্রঃ আমি তাঁকে ﷺ কে দেখেছি বলা যায় স্বপ্নের ভেতরে স্বপ্নে। আর ঐ দুই ছেলেকে বলেছি, যখন এসব বলেছি দৃঢ় ইয়াকিন নিয়েন বলেছি সব সত্য কথা স্বপ্নের।(কিন্তু আমার নিজের স্বপ্নে হয়তো আমি সেই স্বপ্নটি দেখিনি, তবে সেই দুই ছেলেকে যা যা বলেছি সবই সত্য স্বপ্নের বর্ণনা, মানে আমি দেখেছি এটা বিশ্বাস ছিল)  তিনিই যে নাবী ﷺ এটাও আমার বিশ্বাস ছিল স্বপ্নে।

__ বাস্তবিকেই আমার নামাজ শুদ্ধ হলেও আমি নামাজ কিছুটা দেরি করে ফেলি, হয় ঘুমিয়ে যাই ভুলে আর না হয় অন্য কোনো আলসেমির কারণে। আউয়াল ওয়াক্তেই নামাজ পড়ার অনেক চেষ্টআ করি বাট হয়ে উঠছে না। তিনদিন ধরে মাদ্রাসা যাইনা অসুস্থতার কারণে আর তিনদিন ই এমন দেরি হলো কোনো কোনো ওয়াক্তে। যেদিন ই যাই না সেদিন ই এমন দেরি হয় আর আজ রাতে এমন স্বপ্ন দেখলাম।

তিনি কি নাবী ﷺ এ ছিলেন?  আর এর ব্যাখা কী উস্তায?

1 Answer

0 votes
by (565,140 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

আপনার স্বপ্ন খুবই মুবারক স্বপ্ন। রাসূল সাঃ কে দেখেছেন মানে আপনার আমল সুন্দর। আপনি আরো বেশি বেশি সুন্নতের পাবন্দ হতে চেষ্টা করুন। বেশি বেশি দরূদ শরীফ পাঠ করুন। আল্লাহ তাআলা আপনাকে রাসূল সাঃ এর একজন সাচ্চা উম্মত ও প্রিয়ভাজনদের কাতারে শামিল করেই ইনশাআল্লাহ হাশর করাবেন।

বেশি বেশি দরূদ পাঠ এবং সুন্নতের পাবন্দি রক্ষা করতে সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যান। কোন সুন্নতের প্রতি যেন অবহেলা না হয়। আল্লাহ তাআলা আপনার মঙ্গল করুন।
,
রাসূল সাঃ এর আকৃতি শয়তান ধারণ করতে পারে না। তাই স্বপ্নে রাসূল সাঃ দৃষ্টিগোচর হয়েছে বলে প্রবল ধারনা হলে, বুঝতে হবে রাসূল সাঃ কেই দেখছে। অন্য কাউকে নয়।

তবে কথা হল স্বপ্নে পরিদৃষ্ট রাসূল সাঃ এর আকৃতি ও অবস্থা সম্পর্কে। স্বপ্নে পরিদৃষ্ট আকৃতিও অবস্থান কি রাসূল সাঃ এর প্রকৃত আকৃতি ও অবস্থান? নাকি মিসালী তথা প্রতিচ্ছবিমূলক?

ওলামায়ে কেরাম এ ব্যাপারে একমত যে, স্বপ্নযোগে পরিদৃষ্ট রাসূল সাঃ এর চেহারার আকৃতি ও অবস্থান রাসূল সাঃ এর প্রকৃত চেহারা ও অবস্থান নয়। বরং এটি মিসালী তথা প্রতিচ্ছবিমূলক।

তাই স্বপ্নে রাসূল সাঃ এর আকৃতি ও অবস্থান দেখে একথা বলা যাবে না যে, স্বপ্নে যেমন দেখেছে হুবহু সেটাই রাসূল সাঃ এর আসল ও প্রকৃত চেহারা ও আকৃতি। বরং সেটি ছিল একটি প্রতিচ্ছবিমূলক আকৃতি।

তাই একাধিক ব্যক্তি রাসূল সাঃ এর আকৃতি ও অবস্থান একাধিক ধরণের হতে পারে।

তবে যেহেতু শয়তান রাসূল সাঃ এর আকৃতি ধারণ করতে পারে না, তাই স্বপ্নে যদি ইয়াকিন হয় যে, পরিদৃষ্ট ব্যক্তি রাসূল সাঃ, তাহলে বিশ্বাস করে নিবে ব্যক্তি রাসূল সাঃ কেই দেখছে। তবে আকৃতিটা হুবহু রাসূল সাঃ এর হওয়া জরুরী নয়।

আরেকটি বিষয় হল, স্বপ্নে রাসূল সাঃ কে তেমন দেখতে পাওয়া যায়, যেমন ব্যক্তির ঈমান ও আমলের অবস্থা হয়ে থাকে। যদি রাসূল সাঃ এর অবস্থা ভাল দেখে স্বপ্নে, তাহলে স্বপ্ন দেখাকারী ব্যক্তির ঈমান ও আমল ভাল হওয়ার দলীল এটা। আর যদি খারাপ অবস্থায় রাসূল সাঃ কে দেখে, তাহলে বুঝতে হবে যে দেখছে তার ঈমান বা আমলে সমস্যা আছে।

তেমনি কেউ যদি রাসূল সাঃ কে সুন্দর অবয়বে দ্বীনী কাজ করতে দেখে, তাহলে বুঝতে হবে লোকটির ঈমানী কাজে আগ্রহ আছে। এক কথায় রাসূল সাঃ কে যে অবস্থায় পরিদৃষ্ট করবে স্বপ্নে, নিজের ঈমান ও আমলের হালাত তেমনি মনে করে নিবে।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

أن أبا هريرة قال : سمعت النبي صلى الله عليه و سلم يقول ( من رآني في المنام فسيراني في اليقظة ولا يتمثل الشيطان بي 

হযতর আবূ হুরায়রা রাঃ বলেনঃ রাসূল সাঃ বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আমাকে স্বপ্নযোগে দেখল, সে যেন আমাকে বাস্তবেই দেখল। কারণ শয়তান আমার আকৃতি ধারণ করতে পারে না। {সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৬৫৯২, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-৬০৫৬, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৬০৫২, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৫০২৫ , সুনানে দারেমী, হাদীস নং-২১৩৯, সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-৩৯০৫, সুনানে তিরমিজী, হাদীস নং-২২৭৬}

বিস্তারিত জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন, 
স্বপ্নে নবিজি সাঃ এর নূর/ছায়া দেখাও মর্যাদা পূর্ণ বিষয়। 
আপনি দরুদ শরীফ বেশি বেশি পাঠ করবেন,সুন্নাতের উপর পূর্ণ আমল চালিয়ে যাবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...