ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আল্লাহ তা'আলা পুরুষ এবং নারী দু'টি ভিন্ন জাতিকে তৈরী করেছেন।এবং তাদের কাজকেও বন্টন করে দিয়েছেন।এভাবে যে, সাধারণত পুরুষ বাহিরে কাজে ব্যস্ত থাকবে এবং নারীরা ঘরের ভিতর সামাল দিবে।এবং সন্তানসন্ততি কে শিক্ষাদীক্ষা দেয়ার মত মহান কাজ আঞ্জাম দিবে।
নারীশ্রম কে ইসলাম নিরোৎসাহিত করেছে।তবে শরয়ী জরুরুতে অনুমোদনও দিয়েছে। নারীশ্রমের শরয়ী সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-
https://www.ifatwa.info/632
ফিৎনার আশংকা না থাকলে নারীদের জন্য একদিন একরাত (পায়ে হেটে)সফর পরিমাণ দূরত্ব তথা (৭৭÷৩=২৫.৬)২৫.৬ কিলোমিটার বা তার চেয়ে কম পরিমাণ জায়গা সফর করা মাহরাম ব্যতীত জায়েয আছে।তবে ফিৎনার আশংকা থাকলে জায়েয হবে না।
পর্দা করা ফরয।পর্দার তিনটি স্থর রয়েছে পর্যায়ক্রমে।প্রথম স্থর হল,ঘরে বসে পর্দা করা।
মানবিক প্রয়োজন,যার জন্য বের না হলেই নয়।যেমন মাহরাম না থাকাবস্থায় খাবার দাবার ও পোষাক ইত্যাদি ক্রয় বা চিকিৎসা কিংবা মাহরাম আত্মীয় স্বজনকে দেখা ইত্যাদির জন্য বাহিরে যাওয়া।সুতরাং বিনা প্রয়োজনে ঘরের বাহিরে না যাওয়াতে ফরয বিধান পালন হবে।
আল্লাহ তা'আলা বলেন,
وَقَرْنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِيَّةِ الْأُولَى وَأَقِمْنَ الصَّلَاةَ وَآتِينَ الزَّكَاةَ وَأَطِعْنَ اللَّهَ وَرَسُولَهُ إِنَّمَا يُرِيدُ اللَّهُ لِيُذْهِبَ عَنكُمُ الرِّجْسَ أَهْلَ الْبَيْتِ وَيُطَهِّرَكُمْ تَطْهِيرًا
তোমরা গৃহাভ্যন্তরে অবস্থান করবে-মূর্খতা যুগের অনুরূপ নিজেদেরকে প্রদর্শন করবে না। নামায কায়েম করবে, যাকাত প্রদান করবে এবং আল্লাহ ও তাঁর রসূলের আনুগত্য করবে। হে নবী পরিবারের সদস্যবর্গ। আল্লাহ কেবল চান তোমাদের থেকে অপবিত্রতা দূর করতে এবং তোমাদেরকে পূর্ণরূপে পূত-পবিত্র রাখতে।(সূরা আহযাব-৩৩)
ফ্রি মিক্সিং পরিবেশ ব্যতীত পর্দা সম্মত হালাল যেকোনো চাকুরী করতে পারবে।তবে অবশ্যই পিতা বা স্বামীর অনুমতি সাপেক্ষ্যে।বিনা প্রয়োজনে চাকুরীতে না যাওয়াই উত্তম। যদি ফ্রি মিক্সিং চাকুরী করা ব্যতীত খোরাকীর অন্য কোনো ব্যবস্থা না থাকে,তাহলে ইস্তেগফারের সাথে রুখসত হবে। বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-
https://www.ifatwa.info/3503
আল-মাওসু'আতুল ফেক্বহিয়্যায়' রয়েছে,
" ﻃﺎﻋﺔ ﺍﻟﻤﺨﻠﻮﻗﻴﻦ - ﻣﻤّﻦ ﺗﺠﺐ ﻃﺎﻋﺘﻬﻢ – ﻛﺎﻟﻮﺍﻟﺪﻳﻦ ، ﻭﺍﻟﺰّﻭﺝ ، ﻭﻭﻻﺓ ﺍﻷﻣﺮ : ﻓﺈﻥّ ﻭﺟﻮﺏ ﻃﺎﻋﺘﻬﻢ ﻣﻘﻴّﺪ ﺑﺄﻥ ﻻ ﻳﻜﻮﻥ ﻓﻲ ﻣﻌﺼﻴﺔ ، ﺇﺫ ﻻ ﻃﺎﻋﺔ ﻟﻤﺨﻠﻮﻕ ﻓﻲ ﻣﻌﺼﻴﺔ ﺍﻟﺨﺎﻟﻖ " ﺍﻧﺘﻬﻰ
যাদের আদেশ-নিষেধ এর অনুসরণ শরীয়ত কর্তৃক ওয়াজিব।যেমন-মাতাপিতা,স্বামী,সরকারী বিধিনিষেধ,এর অনুসরণ ওয়াজিব।
এ হুকুম ব্যাপক হারে প্রযোজ্য হবে না বরং ঐ সময়-ই প্রযোজ্য হবে যখন তা গুনাহের কাজ হবে না।কেননা হাদীস দ্বারা প্রমাণিত রয়েছে আল্লাহর অবাধ্যতায় কোনো মাখলুকের অনুসরণ করা যাবে না।(২৮/৩২৭)
সুপ্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন!
আপনার জন্য যদি পর্দা সম্মত চাকুরী করা সম্ভব হয়, তাহলে তো অবশ্যই চাকুরী করবেন। আর যদি পর্দা সম্মত চাকুরী করা সম্ভব না হয়, তখন স্বামীর আদেশ মান্য করা জায়েয হবে না। হ্যা, স্বামীকে বিপথগামী হওয়া থেকে বাঁচাতে এবং সন্তানদের ভবিষ্যত সুরক্ষিত রাখতে আপনার বর্তমান পরিস্থিতিতে পুরুষ রোগীদের সাথে কথা বলা ব্যতিত পর্দার আর কোনো সমস্যা না থাকলে, আপনার জন্য বিশেষ বিবেচনায় রুখসতই প্রধান্য পাবে বলে মনে হচ্ছে।আল্লাহই ভালো জানেন। সাথে সাথে স্বামীকে বুঝাতে থাকবেন, যখনই স্বামীর মনে হেদায়তের আলো আসবে, সাথে সাথেই চাকুরী ছেড়ে দিবেন।