عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: أَتَى النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَجُلٌ فَقَالَ: هَلَكْتُ، قَالَ: «وَمَا أَهْلَكَكَ؟» قَالَ: وَقَعْتُ عَلَى امْرَأَتِي فِي رَمَضَانَ، فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَعْتِقْ رَقَبَةً» قَالَ: لَا أَجِدُ، قَالَ: «صُمْ شَهْرَيْنِ مُتَتَابِعَيْنِ» قَالَ: لَا أُطِيقُ، قَالَ: «أَطْعِمْ سِتِّينَ مِسْكِينًا»
অনুবাদ- হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাঃ এর কাছে এক ব্যক্তি এসে বলল, আমি ধ্বংস হয়ে গেছি। রাসূল সাঃ জিজ্ঞাসা করলেন, তোমাকে কে ধ্বংস করেছে? সাহাবী বললেন, রমজানে আমি আমার স্ত্রীর সাথে সহবাস করে ফেলেছি। রাসূল সাঃ তাকে বললেন, তাহলে এর বদলে একটি গোলাম আযাদ কর। সাহাবী বললেন, আমি এতে সক্ষম নই। নবীজী সাঃ বললেন, তাহলে লাগাতার দুই মাস রোযা রাখ। সাহাবী বললেন, আমি এতেও সক্ষম নই। তখন রাসূল সাঃ বললেন, তাহলে তুমি ৬০ জন মিসকিনকে খানা খাওয়াও। {সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-১৬৭১, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-৬৯৪৪, মুসনাদুল বাজ্জার, হাদীস নং-১১০৭, সহীহ ইবনে খুজাইমা, হাদীস নং-১৯৪৯, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৩৫২৭}
★★রোযার কাফফারা আদায় করার পদ্ধতিঃ
আপনি যদি শারিরিকভাবে শক্ত সামর্থ হয়ে থাকেন। তাহলে লাগাতার দুই মাস রোযা রাখতে হবে। মাঝখানে রোযা ভাঙ্গা যাবে না। যদি মাঝখানে রোযা ভেঙ্গে ফেলেন তাহলে আবার প্রথম থেকে ৬০ দিন গণনা করতে হবে। এভাবে ষাট দিন রোযা রাখলে আপনার রোযা ভঙ্গের কাফফারা আদায় হয়ে যাবে। আর যদি লাগাতার ষাট দিন রোযা রাখতে সক্ষম না হন, তাহলে প্রতি রোযার জন্য সদকায়ে ফিতির পরিমাণ টাকা গরীবদের দান করে দেয়া আবশ্যক। তথা ষাট রোযার জন্য ষাটটি সদকায়ে ফিতির পরিমাণ অর্থ দান করা আবশ্যক।
প্রতি রোযার পরিবর্তে একজন গরীবকে দুবেলা খাবার খাওয়াবে অথবা পৌনে দু’ কেজি গমের মূল্য সদকা করবে। এটাকে বলা হয় ফিদিয়া ।
যেমন সদকায়ে ফিতির পরিমাণ টাকা যদি ৬০ টাকা হয়। তাহলে আপনার তিন হাজার ছয়শত টাকা দান করা আবশ্যক। কিন্তু মনে রাখতে হবে রোযা রাখতে সক্ষম হলে ফিদিয়া আদায় করলে তা আদায় হবে না।
এখানে রোযা "হালকা হয়ে যাওয়া" শরীয়তের শিখানো বাক্য নয়,বরং রোযা মাকরুহ হয়ে যাওয়াই শরীয়তের শিখানো বাক্য।
★রোজা থাকা অবস্থায় গড়গড়াসহ কুলি করা এবং নাকের গভীরে পানি পৌঁছানো মাকরুহ।
তবে এক্ষেত্রে যদি পানি গলার ভিতরে চলে যায়,তাহলে রোযা ভেঙ্গে যাবে।
বিনা প্রয়োজনে খাবারের স্বাদ নেওয়া।
রোজা অবস্থায় মুখে থুতু জমিয়ে তা গিলে ফেলা মাকরুহ।
রোজা অবস্থায় পেস্ট বা এমন ঝাঁজযুক্ত মাজন দিয়ে দাঁত পরিষ্কার করা মাকরুহ। তবে মিসওয়াক করা জায়েজ।
দুর্বল হওয়ার আশঙ্কা থাকলে শিঙা লাগানো মাকরুহ।
কামাসক্ত হওয়ার ভয় থাকলে স্ত্রীকে স্পর্শ করা, চুম্বন করা বা অনুরূপ কোনো স্বামী-স্ত্রীসুলভ আচরণ করা মাকরুহ।
সন্দেহযুক্ত সময় পর্যন্ত বিলম্ব করে সাহরি খাওয়া মাকরুহ।
সাহরি ও ইফতার ছাড়া ধারাবাহিকভাবে একাধিক দিনের রোজা রাখা মাকরুহ।
বেশি কষ্ট হলে মুসাফিরের জন্য রোজা রাখা মাকরুহ।
রোজা অবস্থায় মুখে পানি নিয়ে বারবার কুলি করা, মাথায় পানি ঢালা এবং ভেজা কাপড় শরীরে জড়িয়ে রাখা মাকরুহ।
মিথ্যা কথা বলা।
গিবত বা চোগলখোরি করা।
গালাগাল বা ঝগড়া-ফ্যাসাদ করা।
কোন কবিরাহ গুনাহে লিপ্ত হওয়া।
সকালবেলায় নাপাক অবস্থায় থাকা।
রোজার কারণে অস্থিরতা বা কাতরতা প্রকাশ করা।
কয়লা, মাজন, টুথপাউডার, টুথপেস্ট বা গুল দিয়ে দাঁত মাজা।
অনার্থক কোনো জিনিস মুখের ভেতরে দিয়ে রাখা।
অহেতুক কোনো জিনিস চিবানো বা চেখে দেখা।
কুলি করার সময় গড়গড়া করা।
নাকের ভেতর পানি টেনে নেয়া। (কিন্তু ওই পানি গলায় পৌঁছলে রোজ ভেঙে যাবে।)
ইচ্ছাকৃতভাবে মুখে থুতু জমা করে গিলে ফেলা।
ইচ্ছাকৃতভাবে অল্প বমি করা।