হাদীস শরীফে এসেছেঃ-
হযরত মুগিরা ইবনে শু'বা রাযি থেকে বর্ণিত,
عن المغيرة بن شعبة، أن رسول الله صلى الله عليه وسلم مسح على الخفين، فقلت: يا رسول الله أنسيت؟، قال: «بل أنت نسيت، بهذا أمرني ربي عز وجل»
তিনি বলেন,রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মুজার উপর মাসেহ করলেন।আমি তখন বললাম,ইয়া রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাল্লাম! আপনি কি পা'কে ধৌত করতে ভূলে গিয়েছেন।তখন তিনি বললেন,না বরং তুমিই আল্লাহ বিধানকে ভূলে গেছো।(সুনানু আবু-দাউদ-১৫৬)
মুজার উপর মাসেহ বৈধ হওয়ার জন্য সাতটি শর্ত রয়েছে-
ويشترط لجواز المسح على الخفين سبعة شروط الأول لبسهما بعد غسل الرجلين ولو قبل كمال الوضوء إذا أتمه قبل حصول ناقض للوضوء والثاني سترهما للكعبين والثالث إمكان متابعة المشي فيهما فلا يجوزعلى خف من زجاج أو خشب أو حديد والرابع خلو كل منهما عن خرق قدر ثلاث أصابع من أصغر أصابع القدم والخامس استمساكهما على الرجلين من غير شد والسادس منعهما وصول الماء الى الجسد والسابع أن يبقى من مقدم القدم قدر ثلاث أصابع من أصغر أصابع اليد فلو كان فاقدا مقدم قدمه لا يمسح على خفه ولو كان عقب القدم موجودا ويمسح المقيم يوما وليلة والمسافر ثلاثة أيام بلياليها وابتداء المدة من وقت الحدث بعد لبس الخفين
(১)অজুর সময়ে পা ধৌত করার পর পড়তে হবে।যদিও অজুকে পূর্ণ করা না হউক তবে মুজা পরার পর অজুকে পূর্ণ করার পূর্বে কোনো হদস বা অজু ভঙ্গকারী জিনিষ সামনে আসতে পারবে না।(২)মুজা দ্বারা টাখনু পর্যন্ত পা-কে ঢেকে রাখা সম্ভব হতে হবে।(৩)মুজা দ্বারা একাধারে তিন মাইল(শরয়ী) বা সাড়েপাঁচ কিলোঃ হাটা সম্ভব হতে হবে।সুতরাং লোহা, শিষা, লাকড়ি ইত্যাদির মুজা দ্বারা মাসেহ করার কখনো জায়েয হবে না।(৪)মুজা তিন আঙ্গুল পরিমাণ ছিড়া থাকতে পারবে না।(৫)কোনো কিছু দ্বারা বাঁধা ব্যতীত মুজা পায়ের উপর এটে থাকতে হবে।(৬) শরীরে পানি প্রবেশ হতে বাধা প্রদানকারী হতে হবে।(৭)পা কর্তিত থাকাবস্থায়,পায়ের উপরি ভাগের সামনের অংশে তিন আঙ্গুল পরিমাণ অবশিষ্ট থাকতে হবে।যদি পায়ের উপরিভাগের সামনের অংশে তিন আঙ্গুল পরিমাণ পায়ের পাতা অবশিষ্ট না থাকে,তাহলে তখন মুজার উপর মাসেহ করা কখনো জায়েয হবে না।যদিও এক্ষেত্রে পায়ের পিছনে অংশ বাকী থাকুক না কেন?
(মাসেহের সময়সীমা)
মুক্বিম ব্যক্তি একদিন একরাত পর্যন্ত মুজার উপর মাসেহ করতে পারবে।তবে মুকিম ব্যক্তি তিনদিন তিনরাত পর্যন্ত মুজার উপর মাসেহ করতে পারবে।মুজা পরিধান করার পর যখন অজু চলে যাবে,মূলত তখন থেকেই মাসেহের সময়ের সূচনা হবে।(মারাকিল ফালাহ-১/৫৬-৫৭)
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
চামড়ার মোজার উপর মাসেহ জায়েয আছে। কিন্তু চামড়া ছাড়া সুতা বা পশমের তৈরি যেসব মোজা সচরাচর পাওয়া যায় এর উপর মাসেহ সহীহ নয়। তবে সুতা বা পশমের মোজায় নিম্নোক্ত শর্তগুলো পাওয়া গেলে তার উপর মাসেহ জায়েয হবে। শর্তগুলো হচ্ছে :
ক) মোজা এমন মোটা ও পুরু হওয়া যে, জুতা ছাড়া শুধু মোজা পায়ে দিয়ে তিন মাইল পর্যন্ত হাঁটা যায়। এতে মোজা ফেটে যায় না এবং নষ্টও হয় না। খ) পায়ের সাথে কোনো জিনিস দ্বারা বাঁধা ছাড়াই তা লেগে থাকে এবং তা পরিধান করে হাঁটা যায়।
গ) মোজা এমন মোটা যে, তা পানি চোষে না এবং তা ভেদ করে পানি পা পর্যন্ত পৌঁছায় না।
ঘ) তা পরিধান করার পর মোজার উপর থেকে ভিতরের অংশ দেখা যায় না। সচরাচর ব্যবহৃত সুতা বা পশমের মোজায় যেহেতু এসব শর্ত পাওয়া যায় না তাই এর উপর মাসেহ জায়েয হবে না।
(জামে তিরমিযী ১/১৫; বাদায়েউস সানায়ে ১/৮৩; আলবাহরুর রায়েক ১/১৮২; আদ্দুররুল মুখতার ১/২৬৯; আলমুহীতুল বুরহানী ১/৩৪৩-৩৪৪; ফাতহুল কাদীর ১/১৩৮; শরহুল মুনইয়াহ পৃ. ১২০; মাজমাউল আনহুর ১/৭৫; আননাহরুল ফায়েক ১/১২৩)
আপনার মোজা যদি চামড়ার হয়,বা উপরোক্ত শর্ত সমূহ আপনার মোজায় পাওয়া যায়,সেক্ষেত্রে আপনি মোজার উপর মাসাহ করতে পারবেন।