মুহতারাম মুফতি সাহেব,
আসসালামু আলাইকুম ।
১.
আমি ঢাকা শহরের একটি প্রাইভেট কলেজের শিক্ষক । আমাদের কলেজে ছেলে ও মেয়েদের ভিন্ন ভিন্ন শিফটে ক্লাস হয় । মহিলা শিক্ষিকারা এবং প্রায় ৯৯% ছাত্রীই ইসলামী শরী'আহ মোতাবেক পর্দা করে না ।
কলেজের ইনডোর গেমস কমিটিতে আমাকে রাখা হয়েছে । গেমস আয়োজন, অতিথি আমন্ত্রণ, অনুষ্ঠান পরিচালনা, পুরস্কার ক্রয়, সংরক্ষণ ও প্রদান, সনদপত্র লিখন, অতিথি আপ্যায়ন ইত্যাদি কাজে কমিটির সদস্য হিসেবে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভূমিকা আমাকে ও কমিটির সদস্যদেরকে রাখতে হয় ।
বেপর্দা পরিবেশে টেবিল টেনিস, ক্যারম ও দাবা প্রতিযোগিতা হয় । আর অন্য কোন ইভেন্ট-ও নেই ।
কমিটিতে কাজ করার পরে বেশ কিছু টাকা 'সম্মানী' হিসেবে কলেজ কর্তৃপক্ষ আমাদেরকে দিয়ে থাকে ।
ক) বর্ণিত সুরতে আমার জন্য ঐ সম্মানীর টাকার হুকুম কী হবে?
ইনডোর গেমসের দিন কলেজের ইনডোর গেমস কমিটিসহ অন্যান্য দায়িত্বরত শিক্ষক ও কর্মকর্তা, কর্মচারীদেরকে সকালের নাশতা আর দুপুরের খাবার দেয়া হয় কলেজ কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে ।
খ) ঐ খাবার খাওয়া আমার জন্য জায়েয কী না?
২.
কলেজে হিন্দুদের সরস্বতী পূজা অনুষ্ঠিত হয় ৷ সেই পূজার নোটিশ ক্লাসে আসে এবং সেটা ক্লাসে উপস্থিত মুসলিম / অমুসলিম যে শিক্ষকই থাকেন না কেন তাকে পাঠ করে শোনাতে হয় এবং নোটিশে স্বাক্ষর করতে হয় ৷ নোটিশে পূজায় অংশগ্রহণের জন্য হিন্দু শিক্ষার্থীদের কী কী করতে হবে, কখন আসতে হবে, প্রণামীর জন্য কার সাথে যোগাযোগ করতে হবে এগুলো উল্লেখ করা থাকে ।
উল্লেখ্য, বিগত পাঁচ বছরের মধ্যে ওরকম নোটিশ পড়ার দুর্ভাগ্য আমার একবার হয়েছিল এবং খুবই অনিচ্ছা সত্ত্বে নিরুপায় হয়ে তা পাঠ করতে হয়েছিল । তবে আমি এমনভাবে সংক্ষিপ্ত করে নোটিশটা পড়েছিলাম যেন শোনে মনে হয় যে আমি নিজে থেকে তাদেরকে পূজার দিকে আহ্বান করছি না বরং কলেজ কর্তৃপক্ষ পূজার আয়োজক এবং হিন্দু ধর্মাবলম্বীদেরকে তারাই আহ্বান করেছে । এমনটা করেছিলাম যেন কোনভাবে ঈমান বাঁচানো যায় । স্বাক্ষরটাও ইচ্ছে করে দিয়েছিলাম একটু বিকৃতভাবে যেন সেটা আমার প্রকৃত স্বাক্ষরের মত না হয় পুরোপুরি । আশংকায় আছি আগামী বছর আবার ওরকম নোটিশ পড়ার দুর্ভাগ্য না হয় । আশংকা আছে যে, কোন হিন্দু ছাত্রকে দিয়ে নোটিশটা পড়ালেও হয়ত আমাকে উগ্রবাদী ট্যাগ লাগাবে কলেজের সুযোগসন্ধানী হিন্দুগোষ্ঠী ও তাদের মুসলিম নামধারী দোসররা ।
নোটিশটা না পড়লে চাকরির উপরে আঘাত আসার আশংকা আছে । সংশ্লিষ্ট শিক্ষককে বিভাগীয় শাস্তির সামনে পড়তে হতে পারে ।
ক)
এ রকম নোটিশ যদি কোন মুসলিম শিক্ষককে পাঠ করে তাতে স্বাক্ষর করতে হয় তাহলে কী তিনি মুশরিক হয়ে যাবেন?
খ)
এমন কোন উপায় কী আছে যা অবলম্বন করে ভবিষ্যতে ওরকম পরিস্থিতিতে আমার ঈমান বাঁচানো সম্ভব হবে?