আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
301 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (2 points)
১. মাহরামদের সাথে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করা যত বড় পাপ তার চেয়ে বড় পাপ তো সুদ গ্রহণ করা। সুদ গ্রহণ করা মায়ের সাথে জিনা করার চেয়ে বড় অপরাধ। এখন যারা সুদ নিচ্ছে তারা তো প্রতিনিয়তই তাদের মায়ের সাথে জিনা করছে। তাদের জন্য কি হুরমত সাব্যস্ত হচ্ছে না? আর জিনার চেয়েও বড় অপরাধ আছে যেমন শিরক, গুম, খুন, ধর্ষন ইত্যাদি। সেই তুলনায় হুরমতে মুসাহারাত তো ছোট পাপ, কেউ এমন কাজ করে ফেললেও তো তার জন্য ক্ষমার দরজা খোলা থাকে।

২. বিধবা মায়ের সাথে অবিবাহিত ছেলের পারস্পরিক সম্মতিতে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে উঠলে এক্ষেত্রে তো মা-বাবার সম্পর্ক হারাম হওয়ার প্রশ্ন আসে না যেহেতু বাবা মৃত ফলে হুরমতে মুসাহারাত এখানে কার্যকর হয় না। একইভাবে বাবা ও মেয়ের মধ্যে অর্থাৎ ইসলামে যাদের সাথে বিবাহ হারাম বা মাহরামদের সাথে কোনো প্রকার শারীরিক সম্পর্ক স্থাপিত হলে সেক্ষেত্রে কি শুধু জিনার সমতুল্য পাপ হবে নাকি শিরকের মতো ক্ষমার অযোগ্য পাপ হবে?
এটা যদি ক্ষমাযোগ্য পাপ হয় সেক্ষেত্রে তো মানুষ এই ধরনের সম্পর্কে জড়াতে আগ্রহী হবে যেমন এখনকার তরুণরা বিবাহের পূর্বে হারাম সম্পর্ক গড়ে তোলে আবার অনেক বিবাহিতরাও পরকীয়ার মতো হারাম সম্পর্কে জড়ায় যেহেতু তারা জানে এটা শিরকের মতো পাপ না অর্থাৎ তাদের ক্ষমা পাওয়ার একটা সুযোগ আছে।

৩. সরাসরি শারীরিক স্পর্শ ছাড়া কল্পনার দ্বারা হুরমত সাব্যস্ত হুয় না। তাহলে কি বলা যায় কোনো ছেলে যদি তার মায়ের শরীর চিন্তা করে হস্তমৈথূন করে সেক্ষেত্রে সে শুধুই হস্তমৈথূন করার পাপ করছে? একইভাবে বাবা, মেয়ে, ভাই, বোন অর্থাৎ মাহরামদের নিয়ে চিন্তা করে হস্তমৈথুন করলে কি এটা ততটুকুই পাপ হবে যতটুকু অন্য কোনো নারী কিংবা পুরুষকে চিন্তা করে হস্তমৈথুন করা হয়?
এখানে এই ধরনের একটা ঘটনার উল্লেখ আছে: https://ifatwa.info/28677/

৪. শ্বশুর কর্তৃক পুত্রবধূ ধর্ষিত হলে, পিতা কর্তৃক কন্যা যৌণ নির্যাতনের স্বীকার হলে, ঘুমন্ত মায়ের শরীরে ছেলে খারাপ স্পর্শ করলে এগুলোর দায় তো একমাত্র অপরাধীর উপর বর্তায়। অপরাধীর শাস্তি ভুক্তভুগী কেনো পাবে? বিচার কি তাহলে অপরাধীর পক্ষে যাচ্ছে না?

৫. হুরমত বিষয়ক হাদীসগুলোতে বলা হচ্ছে মায়ের সাথে ছেলে যৌন সম্পর্ক করলে মা তার স্বামীর জন্য হারাম, বাবা তার মেয়ের সাথে শারীরিক সম্পর্ক করলে মেয়ে তার স্বামীর জন্য হারাম, শ্বশুর তার পুত্রবধূর সাথে সম্পর্ক করলে ছেলের জন্য সে বউ হারাম। এটা দ্বারা মূলত কী বোঝানো হচ্ছে?
যে পুরুষ মাহরাম নারীর সাথে অবৈধ সম্পর্ক করবে সে নারী একটা বৈধ সম্পর্ক থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে ওই পুরুষের হয়ে যাবে? মানে ছেলের সাথে মায়ের সম্পর্ক হলে সেই মা তখন থেকে বাবার পরিবর্তে ছেলের হয়ে যাবে? বাবার সাথে মেয়ের সম্পর্ক হলে সেই মেয়ে বাবার হয়ে যাবে?

1 Answer

0 votes
by (597,330 points)

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
আবূ হারূন আল-আবদী (রহঃ) থেকে বর্ণিত।
عَنْ أَبِي هَارُونَ الْعَبْدِيِّ، قَالَ كُنَّا إِذَا أَتَيْنَا أَبَا سَعِيدٍ الْخُدْرِيَّ قَالَ مَرْحَبًا بِوَصِيَّةِ رَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ . إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَ لَنَا " إِنَّ النَّاسَ لَكُمْ تَبَعٌ وَإِنَّهُمْ سَيَأْتُونَكُمْ مِنْ أَقْطَارِ الأَرْضِ يَتَفَقَّهُونَ فِي الدِّينِ فَإِذَا جَاءُوكُمْ فَاسْتَوْصُوا بِهِمْ خَيْرًا "
তিনি বলেন, আমরা আবূ সাঈদ আল খুদরী (রাঃ) -এর কাছে এলেই তিনি বলতেনঃ তোমাদের জন্য রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ওসিয়ত অনুযায়ী স্বাগতম। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের বলতেনঃ লোকেরা অবশ্যই তোমাদের অনুগামী। অচিরেই পৃথিবীর দিকদিগন্ত থেকে লোকেরা তোমাদের নিকট দ্বীনি ইলম অর্জনের জন্য আসবে। তারা যখন তোমাদের নিকট আসবে,তখন তোমরা তাদেরকে ভালো ও উত্তম উপদেশ দিবে।(সুনানু তিরমিযি-২৪৯,তিরমিযী ২৬৫০-৫১, মুওয়াত্ত্বা মালিক ২৪৭।)

সু-প্রিয় পাঠকবর্গ ও প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
অতীব জরুরী ও সাধারণ মাস'আলা মাসাঈল আয়ত্বে না থাকার কারণে দৈনন্দিন জীবনে দ্বীন-ইসলাম পালন করতে, যে সমস্ত দ্বীনি ভাই-বোন থমকে দাড়ান,এবং যাদের দ্বীনি ইলম অর্জনের কাছাকাছি কোনো নির্ভরযোগ্য মাধ্যম নেই, মূলত তাদেরকে দিকনির্দেশনা দিতেই আমাদের এ ক্ষুদ্র প্রয়াস .....
মুহতারাম/মুহতারামাহ!
দ্বীনের পরিধি অনেক ব্যাপক, সকল বিষয়ে আলোচনা করা বা দিকনির্দেশনা দেওয়া স্বল্প পরিসরের এই ভার্চুয়ালি মাধ্যম দ্বারা আমাদের পক্ষে সম্ভব নাও হতে পারে। চেষ্টা করলেও প্রশ্নকারীর পিপাসা মিটানো সম্ভব হবে না। প্রত্যেক বিষয়ে আমরা শুধুমাত্র সামান্য আলোকপাত করে থাকি।
উপরোক্ত প্রশ্নটির ব্যাপারে উলামায় কেরামের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে। মতবিরোধপূর্ন প্রশ্নগুলো উত্তর দেওয়ার জন্য স্থান, কাল, পাত্র অনেক কিছুই জানার প্রয়োজন হয়। যেটা অনলাইনে জানা সম্ভব হয় না।
তাই এই প্রশ্নগুলোর উত্তরের জন্য আপনার এলাকার সংশ্লিষ্ট উলামায় কেরামের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করা আপনার জন্য কল্যাণকর হবে বলেই আমাদের ধারণা।
তাছাড়া ইলম অর্জনের জন্য সফর করা অত্যান্ত  জরুরী। এবং কষ্ট করে ইলম অর্জন করাই আমাদের  আকাবির আসলাফদের রীতি ও নীতি। এদিকেই কুরআনের এই আয়াত ইঙ্গিত দিচ্ছে,
ۚفَلَوْلَا نَفَرَ مِن كُلِّ فِرْقَةٍ مِّنْهُمْ طَائِفَةٌ لِّيَتَفَقَّهُوا فِي الدِّينِ وَلِيُنذِرُوا قَوْمَهُمْ إِذَا رَجَعُوا إِلَيْهِمْ لَعَلَّهُمْ يَحْذَرُونَ
তাদের প্রত্যেক দলের একটি অংশ কেন বের হলো না, যাতে দ্বীনের জ্ঞান লাভ করে এবং সংবাদ দান করে স্ব-জাতিকে, যখন তারা তাদের কাছে প্রত্যাবর্তন করবে, যেন তারা বাঁচতে পারে।(সূরা তাওবাহ-১২২)

সুতরাং আপনাকে বলবো, আপনি বিস্তারিত জানতে স্ব-শরীরে কোনো দারুল ইফতায় যোগাযোগ করবেন।
প্রশ্ন করার জন্য আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ।আল্লাহ তা'আলা আপনার ইলম অর্জনের স্পৃহাকে আরোও বাড়িয়ে দিক, আমীন!!
প্রত্যেকটা বিষয়ের সাথে নিম্নের হাদীসকে লক্ষ্য রাখবেন।
হাসান ইবনে আলী রাযি থেকে বর্ণিত রয়েছে।
ﻭﻋﻦ ﺍﻟﺤَﺴَﻦِ ﺑﻦ ﻋَﻠﻲٍّ ﺭﺿﻲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋﻨﻬﻤﺎ ﻗَﺎﻝَ : ﺣَﻔِﻈْﺖُ ﻣِﻦْ ﺭَﺳُﻮﻝ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﷺ : « ﺩَﻉْ ﻣَﺎ ﻳَﺮِﻳﺒُﻚَ ﺇِﻟﻰ ﻣَﺎ ﻻ ﻳﺮِﻳﺒُﻚ » ﺭﻭﺍﻩُ ﺍﻟﺘﺮﻣﺬﻱ ﻭﻗﺎﻝ : ﺣﺪﻳﺚٌ ﺣﺴﻦٌ ﺻﺤﻴﺢٌ
তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাঃ কে বলতে শুনেছি।তিনি বলেন,সন্দেহ যুক্ত জিনিষকে পরিহার করে সন্দেহমুক্ত জিনিষকে গ্রহণ করো।(সুনানু তিরমিযি-২৪৪২)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...