আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
117 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (15 points)
আসসালামু আলাইকুম

ওস্তাদ, ভাইয়েরা তও বিভিন্ন জায়গায় সফর করে দ্বীনি সহবত , আলেমদের সহবত পেতে পারে বিভিন্ন জায়গা থেকে ইলম অর্জন করতে পারে। আমি একজন মেয়ে হিসেবে কিভাবে দ্বীনি সহবত পাবো, কভাবে সরাসরি ইলম অর্জন করবো (যেখানে আমার পুরো পরিবার এ সম্পর্কে বেখবর )?

1 Answer

0 votes
by (57,180 points)

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু

বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

 https://ifatwa.info/56111/ নং ফাতওয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে,

আল্লাহ তায়ালা বলেন,

قَدْ أَفْلَحَ مَنْ زَكَّاهَا- وَقَدْ خَابَ مَنْ دَسَّاهَا- (الشمس 9-10)

‘সফল হয় সেই ব্যক্তি যে তার আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে’। ‘এবং ব্যর্থ হয় সেই ব্যক্তি যে তার আত্মাকে কলুষিত করে’ (সূরা আশ-শামস:৯-১০)।

নারী কিংবা পুরুষ প্রত্যেকের জন্য ইসলাহ বা আত্নশুদ্ধি অত্যন্ত জরুরী। বিশেষত বর্তমান মেয়েরা আকীদা-আমল, নামায ও অযীফাকে দীন হিসেবে গ্রহণ করে এবং চরিত্র-আখলাককে পরিত্যাগ করে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত গীবত-শিকায়েত, হিংসা-হাসাদ, নিন্দা-বড়াই ইত্যাদিতে মগ্ন থেকেও তাদের ধারণা, আমরা অত্যন্ত দ্বীনদার, বুযুর্গ। এটা বুযুর্গী নয়। বরং শয়তানের কুমন্ত্রণা!

পুরুষদেরকেও বলা হচ্ছে, তাদের মধ্যেও আখলাকের ত্রুটি আছে। তারাও যেন নিজেদের সংশোধন করেন। কোনো কোনো দিক থেকে আমলের চেয়েও আখলাকের গুরুত্ব বেশি। কেননা, মন্দ আমলের কুফল নিজের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে, অন্যদিকে মন্দ আখলাকের অনিষ্ট অন্যদেরও ভুগতে হয়। এটা হককুল আবদ।

আফসোসের বিষয় এই যে, নামায না পড়া, কবীরা গুনাহে লিপ্ত হওয়াকেই শুধু গুনাহ মনে করা হয় কিন্তু হিংসা-হাসাদ, গীবত-শিকায়েত, অলঙ্কারের লোভ, ঝগড়া বিবাদ ইত্যাদিকে গুনাহই মনে করা হয় না। অথচ এগুলোই কিন্তু নামায, রোযাকে বিনষ্ট করে দিচ্ছে।

 সংশোধনের পন্থা: ইসলাহের জন্য দুটি বিষয় আবশ্যক : ইলম ও আমল। অর্থাৎ প্রথমে জ্ঞান ও সচেতনতা অর্জন করতে হবে। এরপর উপযুক্ত পন্থায় সংশোধনের চেষ্টা করতে হবে। তাই ইলম বলতে সাধারণ কুরআন তরজমা পড়া, সূরা ইউসুফ পড়া কিংবা নূরনামা, ওফাতনামা পড়া উদ্দেশ্য নয়; বরং এমন কিতাব পড়তে হবে যাতে রোগের বিবরণ আছে। এভাবে রোগ সম্পর্কে সচেতনতা অর্জিত হবে।

আর আমলের মধ্যে একটি হল জ্বিহবাকে সংযত করা। মেয়েদের জ্বিহবা খুব চলে। আপনাকে কেউ ভালো বলুক বা মন্দ বলুক আপনি কিছু বলবেন না। জ্বিহবাকে সংযত রাখুন। যবান সংযত রাখার যোগ্যতা এসে গেলে স্বামীর প্রতি অকৃতজ্ঞতা, স্বামীকে ভুল বোঝানো, নিন্দা-অভিশাপ, গীবত-শিকায়েত ইত্যাদি থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে। শুধু তাই নয়, স্বভাবের এই প্রবণতাগুলোও তখন বিলুপ্ত হয়ে যাবে। কেননা, গীবত-শিকায়েতের চর্চা বন্ধ করা হলে এর পিছনের প্রবণতা বাধাগ্রস্ত হবে এবং দুর্বল হতে হতে বিলুপ্ত হয়ে যাবে।

দ্বিতীয় আমল এই যে, একটি সময় নির্ধারণ করে দুনিয়ার ক্ষণস্থায়ীত্ব, মৃত্যু ও মৃত্যুর পরের ঘাঁটিগুলো সম্পর্কে- কবর, মুনকার-নাকীর-এর সওয়াল-জওয়াব, হাশর-নশর, হিসাব-কিতাব, পুলসিরাত ইত্যাদি সম্পর্কে চিন্তা করুন। প্রতিদিন কিছু সময় এভাবে চিন্তা-ভাবনা করলে অর্থ ও মর্যাদার মোহ, লোভ-লালসা, গর্ব-অহংকার এবং এগুলো থেকে সৃষ্ট অন্যান্য মন্দ বিষয় সবই দূর হতে থাকবে।

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

সোহবত ও আত্নশুদ্ধির জন্য উপরে উল্লেখিত পথ ও পন্থাগুলি মেনে চলার চেষ্টা করুন। ইনশাআল্লাহ ধীরে ধীরে নিজের মাঝে পরিবর্তন আসবে। অনলাইনে কারো থেকে ইসলাহের ফিকির করার থেকে উত্তম হলো অফলাইনে নিজের কোন মাহরাম আলেম বা দ্বীনদার ব্যক্তি থেকে ইলম অর্জন করা। যদি এমন কেউ না থাকে তাহলে স্থানীয় কোন দ্বীনদার বোনের সোহবত থেকেও আপনি উপকৃত হতে পারবেন ইনশাআল্লাহ। অথবা স্থানীয় কোন ভালো মানের মহিলা মাদ্রাসাতেও ইলম অর্জন করতে পারেন। সর্বপরি স্থানীয় দ্বীনদার বোনদের সাথে চলা ফেরা ও উঠা বসা করার মাধ্যমে নিজের মধ্যে আমলী জযবা তৈরী হয়।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...