ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া
বারাকাতুহু
বিসমিল্লাহির
রহমানির রহিম
بسم الله الرحمن الرحيم
জবাব,
https://ifatwa.info/56111/
নং ফাতওয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে,
আল্লাহ তায়ালা
বলেন,
قَدْ
أَفْلَحَ مَنْ زَكَّاهَا- وَقَدْ خَابَ مَنْ دَسَّاهَا- (الشمس 9-10)
‘সফল হয় সেই
ব্যক্তি যে তার আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে’। ‘এবং ব্যর্থ হয় সেই ব্যক্তি যে তার আত্মাকে
কলুষিত করে’ (সূরা আশ-শামস:৯-১০)।
নারী কিংবা
পুরুষ প্রত্যেকের জন্য ইসলাহ বা আত্নশুদ্ধি অত্যন্ত জরুরী। বিশেষত বর্তমান মেয়েরা
আকীদা-আমল, নামায ও অযীফাকে দীন হিসেবে গ্রহণ করে এবং চরিত্র-আখলাককে পরিত্যাগ করে। সকাল থেকে
সন্ধ্যা পর্যন্ত গীবত-শিকায়েত, হিংসা-হাসাদ, নিন্দা-বড়াই ইত্যাদিতে মগ্ন থেকেও তাদের ধারণা,
আমরা অত্যন্ত দ্বীনদার,
বুযুর্গ। এটা বুযুর্গী নয়। বরং শয়তানের
কুমন্ত্রণা!
পুরুষদেরকেও
বলা হচ্ছে, তাদের মধ্যেও আখলাকের ত্রুটি আছে। তারাও যেন নিজেদের সংশোধন করেন। কোনো কোনো দিক
থেকে আমলের চেয়েও আখলাকের গুরুত্ব বেশি। কেননা, মন্দ আমলের কুফল নিজের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে,
অন্যদিকে মন্দ আখলাকের অনিষ্ট অন্যদেরও
ভুগতে হয়। এটা হককুল আবদ।
আফসোসের বিষয়
এই যে, নামায না পড়া, কবীরা গুনাহে লিপ্ত হওয়াকেই শুধু গুনাহ মনে করা হয় কিন্তু হিংসা-হাসাদ,
গীবত-শিকায়েত,
অলঙ্কারের লোভ,
ঝগড়া বিবাদ ইত্যাদিকে গুনাহই মনে
করা হয় না। অথচ এগুলোই কিন্তু নামায, রোযাকে বিনষ্ট করে দিচ্ছে।
সংশোধনের পন্থা: ইসলাহের জন্য দুটি বিষয় আবশ্যক
: ইলম ও আমল। অর্থাৎ প্রথমে জ্ঞান ও সচেতনতা অর্জন করতে হবে। এরপর উপযুক্ত পন্থায়
সংশোধনের চেষ্টা করতে হবে। তাই ইলম বলতে সাধারণ কুরআন তরজমা পড়া,
সূরা ইউসুফ পড়া কিংবা নূরনামা,
ওফাতনামা পড়া উদ্দেশ্য নয়;
বরং এমন কিতাব পড়তে হবে যাতে রোগের
বিবরণ আছে। এভাবে রোগ সম্পর্কে সচেতনতা অর্জিত হবে।
আর আমলের মধ্যে
একটি হল জ্বিহবাকে সংযত করা। মেয়েদের জ্বিহবা খুব চলে। আপনাকে কেউ ভালো বলুক বা মন্দ
বলুক আপনি কিছু বলবেন না। জ্বিহবাকে সংযত রাখুন। যবান সংযত রাখার যোগ্যতা এসে গেলে
স্বামীর প্রতি অকৃতজ্ঞতা, স্বামীকে ভুল বোঝানো, নিন্দা-অভিশাপ, গীবত-শিকায়েত ইত্যাদি থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে। শুধু তাই নয়,
স্বভাবের এই প্রবণতাগুলোও তখন বিলুপ্ত
হয়ে যাবে। কেননা, গীবত-শিকায়েতের চর্চা বন্ধ করা হলে এর পিছনের প্রবণতা বাধাগ্রস্ত হবে এবং দুর্বল
হতে হতে বিলুপ্ত হয়ে যাবে।
দ্বিতীয় আমল
এই যে, একটি সময় নির্ধারণ করে দুনিয়ার ক্ষণস্থায়ীত্ব,
মৃত্যু ও মৃত্যুর পরের ঘাঁটিগুলো সম্পর্কে-
কবর, মুনকার-নাকীর-এর সওয়াল-জওয়াব, হাশর-নশর, হিসাব-কিতাব, পুলসিরাত ইত্যাদি সম্পর্কে চিন্তা করুন। প্রতিদিন
কিছু সময় এভাবে চিন্তা-ভাবনা করলে অর্থ ও মর্যাদার মোহ,
লোভ-লালসা,
গর্ব-অহংকার এবং এগুলো থেকে সৃষ্ট
অন্যান্য মন্দ বিষয় সবই দূর হতে থাকবে।
★ সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
সোহবত ও আত্নশুদ্ধির জন্য উপরে উল্লেখিত পথ ও পন্থাগুলি মেনে চলার চেষ্টা করুন। ইনশাআল্লাহ
ধীরে ধীরে নিজের মাঝে পরিবর্তন আসবে। অনলাইনে কারো থেকে ইসলাহের ফিকির করার থেকে উত্তম
হলো অফলাইনে নিজের কোন মাহরাম আলেম বা দ্বীনদার ব্যক্তি থেকে ইলম অর্জন করা। যদি এমন
কেউ না থাকে তাহলে স্থানীয় কোন দ্বীনদার বোনের সোহবত থেকেও আপনি
উপকৃত হতে পারবেন ইনশাআল্লাহ। অথবা স্থানীয় কোন ভালো মানের মহিলা মাদ্রাসাতেও ইলম অর্জন
করতে পারেন। সর্বপরি স্থানীয় দ্বীনদার বোনদের সাথে চলা ফেরা ও উঠা বসা করার
মাধ্যমে নিজের মধ্যে আমলী জযবা তৈরী হয়।