আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
399 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (10 points)

আসসালামুআলাইকুম মুহতারাম,

অমুসলিমদের জন্য দুআ করা যাবে কি/ জায়েজ? যেমন: আল্লাহ তাকে সুস্থ করুন, হে আল্লাহ! তার বিপদ দুর করে দিন। ইত্যাদি ইত্যাদি । 

1 Answer

0 votes
by (597,330 points)

ওয়া আলাইকুম আসসালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহ

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ


অমুসলিমদের জন্য দু'আ প্রসঙ্গে আল্লাহ পাক বলেন,
ﻣَﺎ ﻛَﺎﻥَ ﻟِﻠﻨَّﺒِﻲِّ ﻭَﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺁﻣَﻨُﻮﺍْ ﺃَﻥ ﻳَﺴْﺘَﻐْﻔِﺮُﻭﺍْ ﻟِﻠْﻤُﺸْﺮِﻛِﻴﻦَ ﻭَﻟَﻮْ ﻛَﺎﻧُﻮﺍْ ﺃُﻭْﻟِﻲ ﻗُﺮْﺑَﻰ ﻣِﻦ ﺑَﻌْﺪِ ﻣَﺎ ﺗَﺒَﻴَّﻦَ ﻟَﻬُﻢْ ﺃَﻧَّﻬُﻢْ ﺃَﺻْﺤَﺎﺏُ ﺍﻟْﺠَﺤِﻴﻢِ
নবী ও মুমিনের উচিত নয় মুশরেকদের মাগফেরাত কামনা করে, যদিও তারা আত্নীয় হোক একথা সুস্পষ্ট হওয়ার পর যে তারা দোযখী।
ﻭَﻣَﺎ ﻛَﺎﻥَ ﺍﺳْﺘِﻐْﻔَﺎﺭُ ﺇِﺑْﺮَﺍﻫِﻴﻢَ ﻟِﺄَﺑِﻴﻪِ ﺇِﻻَّ ﻋَﻦ ﻣَّﻮْﻋِﺪَﺓٍ ﻭَﻋَﺪَﻫَﺎ ﺇِﻳَّﺎﻩُ ﻓَﻠَﻤَّﺎ ﺗَﺒَﻴَّﻦَ ﻟَﻪُ ﺃَﻧَّﻪُ ﻋَﺪُﻭٌّ ﻟِﻠّﻪِ ﺗَﺒَﺮَّﺃَ ﻣِﻨْﻪُ ﺇِﻥَّ ﺇِﺑْﺮَﺍﻫِﻴﻢَ ﻷﻭَّﺍﻩٌ ﺣَﻠِﻴﻢٌ
আর ইব্রাহীম কর্তৃক স্বীয় পিতার মাগফেরাত কামনা ছিল কেবল সেই প্রতিশ্রুতির কারণে, যা তিনি তার সাথে করেছিলেন। অতঃপর যখন তাঁর কাছে একথা প্রকাশ পেল যে, সে আল্লাহর শত্রু তখন তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে নিলেন। নিঃসন্দেহে ইব্রাহীম ছিলেন বড় কোমল হৃদয়, সহনশীল।(সূরা- তাওবাহ-১১৩-১১৪)

আল্লাহ পাক হেদায়ত প্রসঙ্গে সূরা আল-কাসাসে বলেন,
ﺇِﻧَّﻚَ ﻟَﺎ ﺗَﻬْﺪِﻱ ﻣَﻦْ ﺃَﺣْﺒَﺒْﺖَ ﻭَﻟَﻜِﻦَّ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﻳَﻬْﺪِﻱ ﻣَﻦ ﻳَﺸَﺎﺀ ﻭَﻫُﻮَ ﺃَﻋْﻠَﻢُ ﺑِﺎﻟْﻤُﻬْﺘَﺪِﻳﻦَ
আপনি যাকে পছন্দ করেন, তাকে সৎপথে আনতে পারবেন না, তবে আল্লাহ তা’আলাই যাকে ইচ্ছা সৎপথে আনয়ন করেন। কে সৎপথে আসবে, সে সম্পর্কে তিনিই ভাল জানেন।(সূরা আল-কাসাস-৫৬)

অমুসলিমদের জন্য দু'আ প্রসঙ্গে হাদীসের বর্ণনা।
রাসূলুল্লাহ সাঃ চাচা আবু তালিবের মৃত্যুর সময় তার সামনে ইসলাম পেশ করলেন,আবু তালিব অস্বীকার করলেন,তখন রাসূলুল্লাহ সাঃ বললেন,
ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ : ﻷَﺳْﺘَﻐْﻔِﺮَﻥَّ ﻟَﻚَ ﻣَﺎ ﻟَﻢْ ﺃُﻧْﻪَ ﻋَﻨْﻪُ . ﻓَﻨَﺰَﻟَﺖْ : ( ﻣَﺎ ﻛَﺎﻥَ ﻟِﻠﻨَّﺒِﻲِّ ﻭَﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺁﻣَﻨُﻮﺍ ﺃَﻥْ ﻳَﺴْﺘَﻐْﻔِﺮُﻭﺍ ﻟِﻠْﻤُﺸْﺮِﻛِﻴﻦَ ﻭَﻟَﻮْ ﻛَﺎﻧُﻮﺍ ﺃُﻭﻟِﻲ ﻗُﺮْﺑَﻰ ﻣِﻦْ ﺑَﻌْﺪِ ﻣَﺎ ﺗَﺒَﻴَّﻦَ ﻟَﻬُﻢْ ﺃَﻧَّﻬُﻢْ ﺃَﺻْﺤَﺎﺏُ ﺍﻟْﺠَﺤِﻴﻢِ ) ﻭَﻧَﺰَﻟَﺖْ : ( ﺇِﻧَّﻚَ ﻻ ﺗَﻬْﺪِﻱ ﻣَﻦْ ﺃَﺣْﺒَﺒْﺖَ )
হে চাচা আমি অবশ্যই তোমার জন্য আল্লাহর নিকট মাগফিরাত কামনা করবো যতক্ষণ না আমাকে বাধা দেওয়া হবে।তখনই সূরা তাওবার ১১৩ নাম্বার আয়াত আয়াত এবং সূরা আল-কাসাসের ৫৬নং আয়াত নাযিল হয়।(সহীহ বুখারী-৩৮৮৪)

হযরত আবু মুসা আশ'আরী রাযি থেকে বর্ণিত,
ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻲ ﻣُﻮﺳَﻰ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ﻗَﺎﻝَ : ﻛَﺎﻥَ ﺍﻟْﻴَﻬُﻮﺩُ ﻳَﺘَﻌَﺎﻃَﺴُﻮﻥَ ﻋِﻨْﺪَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻳَﺮْﺟُﻮﻥَ ﺃَﻥْ ﻳَﻘُﻮﻝَ ﻟَﻬُﻢْ ﻳَﺮْﺣَﻤُﻜُﻢْ ﺍﻟﻠَّﻪُ ، ﻓَﻴَﻘُﻮﻝُ ( ﻳَﻬْﺪِﻳﻜُﻢُ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻭَﻳُﺼْﻠِﺢُ ﺑَﺎﻟَﻜُﻢْ )
ইহুদিরা রাসূলুল্লাহ সাঃ এর নিকট এসে ইচ্ছা করে হাঁচি দিতো,যাতেকরে রাসূলুল্লাহ সাঃ তাদের হাঁচির জবাবে 'ইয়ারহামুকাল্লাহ'(আল্লাহ তোমাকে রহম করুক) বলে তাদেরকে দু'আ দেন। কিন্তু রাসূলুল্লাহ সাঃ তাদের হাঁচির জবাবে 'ইয়াহদিকুমুল্লাহ ওয়া য়ুসলিহ বালাকুম'(আল্লাহ তোমাদেরকে হেদায়ত দান করুক,তোমাদের চিন্তা চেতনাকে সুস্থ করুক) বলতেন।(সুনানে আবু-দাউদ-৫০৩৮,সুনানে তিরমিযি-২৭৩৯)

সুপ্রিয় পাঠকবর্গ ও প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই!
কাফিরের জন্য আখেরাতে মাগফিরাতের দু'আ করা, কুরআন সুন্নাহর দৃষ্টিতে স্পষ্টত হারাম ও নাজায়েয।
তবে তাদের জন্য হেদায়তের দু'আ করা জায়েয।এবং হারবী কাফির(সেই দেশের নাগরিক যারা মুসলমানদের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত)এর ক্ষেত্রে দুনিয়াবি ফায়েদার জন্যও দু'আ করা নাজায়েয।

যিম্মি কাফির (ট্যাক্স দিয়ে মুসলিম দেশে বসবাসকারি)এর ক্ষেত্রে দুনিয়াবি ফায়েদার জন্য দু'আ করার বিধান কি ?
সে সম্পর্কে উলামায়ে কেরামদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে-

যেমন,ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়ায় বর্ণিত রয়েছে,
إذا قال للذمي أطال الله بقاءك إن كان نيته أن الله تعالى يطيل بقاءه ليسلم أو يؤدي الجزية عن ذل وصغار فلا بأس به وإن لو ينو شيئا يكره كذا في المحيط. ولو دعا للذمي بطول العمر قيل لا يجوز لأن فيه التمادي على الكفر وقيل يجوز لأن في طول عمره نفعا للمسلمين بأداء الجزية فيكون دعاء لهم وعلى هذا الاختلاف الدعاء له بالعافية كذا في التبيين.
যদি কেউ কোনো অমুসলিম যিম্মি কে উদ্দেশ্য করে বলে যে, অাল্লাহ তোমার হায়াত কে দারাজ করুক। যদি তার নিয়ত থাকে,যে সে লম্বা হায়াত পেলে চিন্তা ফিকিরের সুযোগ পাবে,যেজন্য তার ইসলাম গ্রহণের সুযোগ হতে পারে,অথবা অপমানিত, লাঞ্ছিত অবস্থায় ইসলামি সরকার-কে ট্যাক্স আদায় করবে,তাহলে এমন দু'আ করতে কোনো সমস্যা নাই।তবে কোনো প্রকার নিয়্যাত ছাড়া এমন দু'আ করা মাকরুহ।(মুহিত)অমুসলিম যিম্মির জন্য হায়াত দরাজের দু'আ করা সম্পর্কে কেউ কেউ বলেন, এটা জায়েয হবে না।কেননা এক্ষেত্রে কুফরিকে স্থায়িত্ব দেয়ার দু'আ করা হচ্ছে।অন্যদিকে কেউ কেউ জায়েয বলেন, কেননা তার লম্বা হায়াতের মধ্যে মুসলমানদের জন্য ফায়দা রয়েছে।সুতরাং এটা তার জন্য দু'আ না হয়ে অবশেষে বদ-দু'আ হবে।সুস্থতার দু'আও এই মতভেদের উপর রয়েছে।(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-৫/৩৪৮)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (10 points)
জাযাকআল্লাহ।
by (597,330 points)
জাযাকাল্লাহ।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...