আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
431 views
in ব্যবসা ও চাকুরী (Business & Job) by (1 point)
edited by
দুজন ছেলে মেয়ে শারিরীক চাহিদার জন্য দুজন সাক্ষীর সামনে কিছু টাকা দেনমোহর করে বিয়ে করল। এরপর তালাকের পূর্বপর্যন্ত উভয়েই স্বামী স্ত্রীর সকল প্রকার হক আদায় করল। এর কিছুদিন বা কয়েকমাস পরে তাদের নিজেদের ইচ্ছায় তালাক হয়ে গেল। এই বিয়েকে কি মুতা বিয়ে বলা যাবে?

উল্লেখ্য যে, তারা আগে থেকেই নিয়ত করেছিলো শুধু মাত্র শারীরিক সম্পর্কের জন্যই কিছুদিন [কতদিন সেটা নির্দিষ্টভাবে চুক্তি করে নি] বিবাহ বন্ধনে থাকবে তবে এই বিবাহিত অবস্থায় একে অপরের সকল হক আদায় করেছে এবং বিয়ের সমস্ত কার্যক্রমই শরীয়ত অনুমোদিত পন্থাতেই হয়েছে।

এসমস্ত কিছুর পর তাদের কি জিনা করার গুনাহ হবে? নাকি তার চেয়ে কম গুণাহ হবে?

1 Answer

0 votes
by (597,330 points)
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
যেহেতু তারা বিয়ের সময়ে 'সময় এবং উপভোগ' কে উল্লেখ করেনি।তাই তাদের বিবাহ মূলত মূতা বা মু'আক্কাত হয়নি।বরং অন্যান্য বিয়ের মত ঐ বিয়েও স্থায়ী বৈধ হিসেবে প্রমাণিত হবে।

যেহেতু দুই সাক্ষীর সামনে বিয়ে সংগঠিত হয়েছে,তাই এ বিয়ে হয়ে গেছে।এবং উল্লেখযোগ্য কারণ ব্যতীত এ বিয়েকে নষ্ট করার চিন্তা করা যাবে না।

বিনা কারণে তালাক প্রদান কি জায়েয বা এর শাস্তি কি?
এ সম্পর্কে https://www.ifatwa.info/468 নং ফাতাওয়ায় আমরা উল্লেখ করেছি যে,

আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ
قال تعالى: (فإن كرهتموهن فعسى أن تكرهوا شيئاً ويجعل الله فيه خيراً كثيراً)
অতঃপর যদি তাদেরকে অপছন্দ কর, তবে হয়ত তোমরা এমন এক জিনিসকে অপছন্দ করছ, যাতে আল্লাহ, অনেক কল্যাণ রেখেছেন।(সূরা নিসা-১৯)

তালাক সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেনঃ
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রাঃ থেকে বর্ণিত,
عن ابن عمر، عن النبي صلى الله عليه وسلم قال: «أبغض الحلال إلى الله تعالى الطلاق»
অর্থ:রাসূলুল্লাহ সাঃ ইরশাদ করেন, “মহান আল্লাহ পাকের নিকট সর্বাপেক্ষা অপছন্দনীয় হালাল হচ্ছে 'তালাক'।(আবু দাউদ-২১৭৮)

হযরত আবু মুসা রাযি থেকে বর্ণিত,
عن أبي موسى رضي الله عنه عن النبي صلى الله عليه وسلم قال:  إن الله تعالى لا يحب الذواقين ولا الذواقات

قال الهيثمي :  رواه الطبراني وفيه راو لم يسم وبقية إسناده حسن. مجمع الزوائد - (4 / 617) ، 
وضعفه الشيخ الألباني في ضعيف الجامع برقم : 1673
অর্থঃ-রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেনঃ নিশ্চয় আল্লাহ তা'আলা স্বাদ আস্বাদনকারী পুরুষ ও স্বাদ আস্বাদনকারী মহিলাদেরকে পছন্দ করেন না।(মাজমা'উ যাওয়ায়েদ-৪/৬১৭)


বিনা কারণে তালাক আবেদন কারী মহিলা সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,
 ﺃَﻳُّﻤَﺎ ﺍﻣْﺮَﺃَﺓٍ ﺳَﺄَﻟَﺖْ ﺯَﻭْﺟَﻬَﺎ ﻃَﻼَﻗًﺎ ﻓِﻰ ﻏَﻴْﺮِ ﻣَﺎ ﺑَﺄْﺱٍ ﻓَﺤَﺮَﺍﻡٌ ﻋَﻠَﻴْﻬَﺎ ﺭَﺍﺋِﺤَﺔُ ﺍﻟْﺠَﻨَّﺔِ . ‘
যে মহিলা বিনা কারণে তার স্বামীর নিকটে তালাক্ব চায়, তার জন্য জান্নাতের সুগন্ধিও হারাম’।
[আবুদাউদ হা/২২২৬; তিরমিযী হা/১১৮৭; ইবনু মাজাহ হা/২০৫৫; মিশকাত হা/৩২৭৯, সনদ ছহীহ।].

ﺫﻫﺐ ﻓﻘﻬﺎﺀ ﺍﻟﺤﻨﻔﻴّﺔ ﻭﺍﻟﺤﻨﺎﺑﻠﺔ ﺇﻟﻰ ﺃﻥ ﺍﻟﻄﻼﻕ ﺑﻼ ﺳﺒﺐ ﻣﺤﺮّﻡٌ ﺷﺮﻋﺎً ﻭﻳﺄﺛﻢ ﻓﺎﻋﻠﻪ، ﻭﺫﻟﻚ ﻟﻘﻮﻟﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ : ( ﻟﻌﻦ ﺍﻟﻠﻪ ﻛﻞ ﺫﻭﺍﻕ، ﻣﻄﻼﻕ ) ﻭﻷﻥ ﻓﻲ ﺍﻟﻄﻼﻕ ﻛﻔﺮﺍً ﻟﻨﻌﻤﺔ ﺍﻟﻠﻪ ﺳﺒﺤﺎﻧﻪ ﻭﺗﻌﺎﻟﻰ ، ﺣﻴﺚ ﺇﻥّ ﺍﻟﺰﻭﺍﺝ ﻧﻌﻤﺔ ﻣﻦ ﻧﻌﻢ ﺍﻟﻠﻪ، ﻭﺍﻟﻄﻼﻕ ﺑﻼ ﺳﺒﺐٍ ﻛﻔﺮٌ ﻟﻨﻌﻤﺔ ﺍﻟﺰﻭﺍﺝ؛ ﻭﻛﻔﺮﺍﻥ ﺍﻟﻨﻌﻤﺔ ﺣﺮﺍﻡ، ﻓﻼ ﻳﺤﻞّ ﺍﻟﻄﻼﻕ ﺇﻻ ﻟﻀﺮﻭﺭﺓ .
فقه السنة (الطبعة الثالثة)، بيروت: دار الكتاب العربي، صفحة 242، جزء 2
ভাবার্থ-হানাফি এবং হাম্বলী ফুকাহায়ে কেরামগণ মনে করেন যে,বিনা কারণে তালাক প্রদাণ শরীয়তের দৃষ্টিকোণে হারাম।এবং তালাক প্রদাণকারী গোনাহগার। কেননা রাসূলুল্লাহ সাঃ আমভাবে বলেছেন,আল্লাহ তা'আলা প্রত্যেক স্বাদ আস্বাদনকারীদের উপর লা'নত প্রদাণ করেন।কেননা তালাক প্রদাণ দ্বারা আল্লাহ তা'আলা র নিয়ামতকে অস্বীকার করা হয়। বিবাহ আল্লাহর নিয়ামত সমূহের মধ্যে অন্যতম একটি নিয়ামত।আর বিনা কারণে তালাক প্রদাণ মানে বিবাহ নামক নিয়ামতকে পরিত্যাগ, অস্বীকার এবং অবহেলা করা। আর নিয়ামতকে অস্বীকার বা পরিত্যাগ করা হারাম।সুতরাং প্রয়োজন ব্যতীত তালাক হালাল হবে না।(ফেকহুস সুন্নাহ-২/২৪২)

সুতরাং বিনা কারণে তালাক প্রদাণ করা হারাম।এর শাস্তি আমাদেরকে দুনিয়া ও আখেরাতে অবশ্যই পেতে হবে।

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
প্রশ্নের বিবরণ অনুযায়ী,
উক্ত বিয়ের সময়ে যেহেতু বাতিল শর্তের উল্লেখ হয়নি,তাই বিয়ে হয়ে যাবে।তবে পরবর্তীতে আর বিচ্ছাদের চিন্তা করা যাবে না।বরং সর্বদা বিয়ে অটুট রাখার চেষ্টা করতে হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...