আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
187 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (1 point)
আসসালামু আলাইকুম। আমি একজনকে পছন্দ করতাম দ্বীনের বুঝ পাওয়ার আগে। তখন হালাল হারামের ব্যাপারে এত জানতাম না। যখন উপলব্ধি করতে পারি দুজনেই ফিরে আসি। এখন আমাদের মাঝে কোনো যোগাযোগ নেই তবে আমি এখনও তাকে ভুলতে পারি না। সেও ওয়াদা করেছিলো আমি যদি তার জন্য অপেক্ষা করতে পারি তাহলে হালাল ভাবেই আমাকে গ্রহন করবে। সে এখনও স্টুডেন্ট। আমরা একই ক্লাসে পড়তাম৷ আমার পরিবারের অবস্থা তেমন একটা ভালো না। আর্থিক সচ্ছল হলেও তাদের অনেক সমস্যা আছে। আমার বাবা আমার কোনো দায়িত্ব নিতে চায় না, কোনো খরচ বহন করে না ১ বছর যাবত। আব্বু আম্মুর সম্পর্কটাও মাঝে মাঝে তালাকের পর্যায়ে চলে যায়, দুজন দুজনের হক আদায় করতে অয়ারে বা, পরকীয়ায় লিপ্ত। নিজেরা পর্দার মধ্যে থাকে না আমাকেও মাহরাম মেইনটেইন করতে দিতে চায় না। তারা ভাবে পর্দা মানে শুধুই বোরকা নিকাব। কাজিনদের সামনে না গেলে আব্বু অনেক গালিগালাজ করে। তারা এখন আমার বিয়ে দিতে চায়। তারা দ্বীনদার পাত্র তো আনেই না, কুফু মিলে না, আমাকে ছবি দেওয়ার জন্য জোর করে। আমি দেই না কখনও। আমি যাকে পছন্দ করতাম এখনও তাকে ভুলতে পারি না। আমি জীবনঙ্গী হিসাবে যেমন পছন্দ করি সে ঠিক তেমন। তার ব্যক্তিত্ব, গায়রত বোধ আমাকে মুগ্ধ করতো। আমার মনে হয় আমি অন্য কাউকে বিয়ে করলেও তাকে ভুলতে পারবো না। অন্য কাউকে বিয়ে করলে যিনি আমার হাসবেন্ড হবেন তার হক কোনোভাবেই আদায় করতে পারবো না এই আশঙ্কা হয়। আমি কোনোভাবেই তাকে ছাড়া অন্য কাউকে জীবনসঙ্গী হিসাবে ভাবতে পারি না। এখন আমি যদি তার জন্য অপেক্ষা করি এতে কি কোনো গুনাহ হবে আমার? আমি এখনও পর্যন্ত কখনোই পরিবারের কাছে মানসিক শান্তি পাই নি।সে আমাকে অনেক বুঝতো তাই তাকে ভুলতে পারি না। আমি কোনো হারামে জড়াতে চাই না সে স্ট্যাবলিশ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে চাই, তাছাড়া ফ্যামিলি থেকে যেই প্রপোজাল আনে সেই পরিবারে গেলে আমি আমার ইমান-আমল ধরে রাখতে পারবো না তাই ভয় হয় আরো। এখন যদি অপেক্ষা করি এটা কী গুনাহ হবে? বা আল্লাহ কি আমার প্রতি নারাজ হবেন?

1 Answer

0 votes
by (572,970 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

আল্লাহ তা'আলা মাতাপিতার আদেশকে মান্য করা এবং তাদের সাথে উত্তম ব্যবহার করার পরামর্শ দিয়েছেন।তাদের অবাধ্য হওয়াকে হারাম ঘোষনা দিয়েছেন।এ বিষয়ে সমস্ত উলামায়ে কেরাম ঐক্যমত পোষণ করে থাকেন।

মা বাবার সর্বদায় আনুগত্য করতে হবে,তাদের কথার নাফরমানী করা যাবেনা।
তাদের সাথে সর্বদায় ভালো ব্যবহার করতে হবে।
তারা কষ্ট পায়,এমন কাজ কখনোও করা যাবেনা।

তাদের হক বা অধিকারসমূহ এবং তাদের অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করা সন্তানের ওপর ওয়াজিব বা আবশ্যক।

আল্লাহ তাআলা বলেন,

وَوَصَّيْنَا الْإِنسَانَ بِوَالِدَيْهِ إِحْسَانًا ۖ حَمَلَتْهُ أُمُّهُ كُرْهًا وَوَضَعَتْهُ كُرْهًا ۖ وَحَمْلُهُ وَفِصَالُهُ ثَلَاثُونَ شَهْرًا

“আমি মানুষকে তার পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহারের আদেশ দিয়েছি। তার মা তাকে কষ্টসহকারে গর্ভে ধারণ করেছে এবং কষ্টসহকারে প্রসব করেছে। তাকে গর্ভে ধারণ করতে ও তার স্তন্য ছাড়তে লেগেছে ত্রিশ মাস।” (সূরা আহকাফ-১৫)

আল্লাহ তা'আলা আরও বলেন,

وَقَضَى رَبُّكَ أَلاَّ تَعْبُدُواْ إِلاَّ إِيَّاهُ وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَانًا إِمَّا يَبْلُغَنَّ عِندَكَ الْكِبَرَ أَحَدُهُمَا أَوْ كِلاَهُمَا فَلاَ تَقُل لَّهُمَآ أُفٍّ وَلاَ تَنْهَرْهُمَا وَقُل لَّهُمَا قَوْلاً كَرِيمًا

তোমার পালনকর্তা আদেশ করেছেন যে, তাঁকে ছাড়া অন্য কারও এবাদত করো না এবং পিতা-মাতার সাথে সদ্ব-ব্যবহার কর। তাদের মধ্যে কেউ অথবা উভয়েই যদি তোমার জীবদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হয়; তবে তাদেরকে ‘উহ’ শব্দটিও বলো না এবং তাদেরকে ধমক দিও না এবং বল তাদেরকে শিষ্ঠাচারপূর্ণ কথা।(সূরা বনী ইসরাঈল-২৩)

পিতা মাতার বৈধ বিধান তরক করলে গোনাহ হবে।

তবে শরীয়ত বহির্ভূত কোনো আদেশ করলে পিতা মাতা সহ কারো আদেশকে মান্য করা যাবে না।কেননা হাদীসে বর্ণিত রয়েছে।

ﻟَﺎ ﻃَﺎﻋَﺔَ ﻟِﻤَﺨْﻠُﻮﻕٍ ﻓِﻲ ﻣَﻌْﺼِﻴَﺔِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻋَﺰَّ ﻭَﺟَﻞَّ

আল্লাহর অবাধ্যতায় কোনো মাখলুকের অনুসরণ করা যাবে না।(মুসনাদে আহমদ-১০৯৮)
,
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
বিবাহ পূর্বক প্রেম হারাম। এমতাবস্থায় তার সাথে বিবাহের ওয়াদা করলে তাহা পুরন করা আবশ্যক নয়। তাকে নিয়ে ভাবা,সংসারের স্বপ্ন কোনোটিই জায়েজ নেই।

আপনি এখনো তার মুহাব্বতে আছেন,আপনাকে তার মুহাব্বত থেকে বের হয়ে আসতে হবে।

স্বাভাবিক মানুষের কাতারে আসতে হবে।

আপনার বাবা মার আদেশ অনুপাতে যে সমস্ত পাত্রের প্রস্তাব আসছে,তাদের মধ্য হতে দ্বীনদার কাউকে বিবাহ করে নেয়ার পরামর্শ থাকবে। 

এক্ষেত্রে বাবা মার আদেশ অমান্য করে সেই ছেলেটির জন্য অপেক্ষা করা জায়েজ হবেনা। 

এক্ষেত্রে যদি সেই ছেলেটি যদি অন্যান্য পাত্রদের ন্যায় পারিবারিক ভাবে এখনই আপনার পরিবারে বিবাহের প্রস্তাব পাঠায়,সেক্ষেত্রে বাবা মা রাজি থাকলে এখনই বিবাহ পড়িয়ে রাখতে পারেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...