পারিশ্রমিক ও ঈমান সংক্রান্ত প্রশ্ন

Question

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
1.আমার স্বামী একজন সরকারী চাকুরিজীবী। নির্বাচন উপলক্ষে বাধ্যতামূলকভাবে তাকে কিছু দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। (যেমন: কেন্দ্র পর্যবেক্ষণ, ভোট গণনা)।  বিনিময়ে সরকার থেকে কিছু পারিশ্রমিক দেওয়া হতে পারে। এই টাকাটা গ্রহণ করা কি জায়েজ হবে?

2. একজন স্ত্রী তার স্বামীকে বলেছিল–  “নিজের জমিতে এমনভাবে গাছ-পালা লাগানো যাবে না যাতে তার ছায়ায় প্রতিবেশীর কষ্ট হয়। তেমনিভাবে প্রতিবেশীর অসুবিধা হলে নিজের জমিতে উঁচু দালানও নির্মাণ করা যাবে না। এটা হাদীসের কথা।”

স্বামী প্রতুত্তরে বলেছে, “তাহলে তো গাছপালা লাগানোই যাবে না। বিল্ডিং তোলা যাবে না। ছায়া তো পড়বেই।”

স্ত্রী বলেছে, কষ্ট দেওয়া যাবে না। এমনভাবে লাগাতে হবে যেন প্রতিবেশীর কষ্ট না হয়।
স্বামী একটু রেগে বলেছে “তামাশার কথা আর বইলো না।”

এই কথা শুনে স্ত্রী স্বামীর ঈমান ভঙ্গের আশঙ্কা করে। তখন স্বামী বলে, ‘তামাশার কথা’ শব্দগুলো সে স্ত্রীর কথার প্রেক্ষিতে বলেছে। হাদীসকে উদ্দেশ্য করে নয়। হাদীসে যদি এমনটা বলা হয়ে থাকে তবে তা অবশ্যই সঠিক।

প্রশ্ন হচ্ছে, এতে কি স্বামীর ঈমান চলে যাবে? তাদের তালাক হয়ে যাবে?

Answer 1

জবাবঃ-

وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 

بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)

https://ifatwa.info/9312/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ- 

শরীয়তের বিধান হলো সরকারী  চাকুরী জায়েয।তবে কুরআন হাদীস বিরোধী কোনো কিছু বাস্তবায়ন করার কাজ হলে,বা এমন কোনো চাকুরী যেখানে গেলে কুরআন-হাদীসকে সঠিকভাবে অনুসরণ করা যায় না।তাহলে এমন চাকুরী কখনো বৈধ হবে না।

(কিতাবুন নাওয়াজেল ১৭/৫০৪) 

নিজে উপার্জন করে খাওয়ার কথা রাসুল সাঃ বলেছেন।

হাদীসে এসেছে,

হযরত মিক্বদাম ইবনে মা'দি কারুবা রাযি থেকে বর্ণিত

 ﻋَﻦِ اﻟْﻤِﻘْﺪَاﻡِ ﺑْﻦِ ﻣَﻌْﺪِﻱ ﻛَﺮِﺏَ - ﺭَﺿِﻲَ اﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻪُ: ﻗَﺎﻝَ: ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ اﻟﻠَّﻪِ - ﺻَﻠَّﻰ اﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ - " «ﻣَﺎ ﺃَﻛَﻞَ ﺃَﺣَﺪٌ ﻃَﻌَﺎﻣًﺎ ﻗَﻂُّ ﺧَﻴْﺮًا ﻣِﻦْ ﺃَﻥْ ﻳَﺄْﻛُﻞَ ﻣِﻦْ ﻋَﻤَﻞِ ﻳَﺪَﻳْﻪِ، ﻭَﺇِﻥَّ ﻧَﺒِﻲَّ اﻟﻠَّﻪِ ﺩَاﻭُﺩَ - ﻋَﻠَﻴْﻪِ اﻟﺴَّﻼَﻡُ - ﻛَﺎﻥَ ﻳَﺄْﻛُﻞُ ﻣِﻦْ ﻋَﻤَﻞِ ﻳَﺪَﻳْﻪِ» "

রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,

নিজ হাতের উপার্জন হতে অধিক উত্তম রিজিক কেউ কখনো আহার করেনি।

আর আল্লাহর নবী হযরত দাউদ আঃ নিজ হাতের উপার্জন দ্বারাই দিনাতিপাত করতেন।(মিশকাত-২৭৫৯)

হযরত ইবনে মাসউদ রাযি থেকে বর্ণিত

 عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ - رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ - قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ -: " «طَلَبُ كَسْبِ الْحَلَالِ فَرِيضَةٌ بَعْدَ الْفَرِيضَةِ» " رَوَاهُ الْبَيْهَقِيُّ فِي " شُعَبِ الْإِيمَانِ.

রাসুলাল্লাহ সাঃ বলেন,হালাল রিযিক তালাশ করা অন্যন্য ফরয বিধানের পরই ফরয।(মিশকাতুল মাসাবিহ-২৭৮১)

,

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!

প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার স্বামী পারিশ্রমিক বাবদ যে টাকা পাবেন,তাহা গ্রহন জায়েজ হবে।

,  

তবে সর্বদা হারাম ও নাজায়েয কাজ হতে বেঁচে থাকতে হবে। অন্যায় আদেশ পালন করা যাবেনা। নামায সহ যাবতীয় ইবাদত আন্তরিকভাবে সময়মতো পালন করতে হবে।

(০২)

এতে স্বামীর ঈমান চলে যাবেনা।

তাদের তালাক হয়ে যাবেনা।