আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
211 views
in ব্যবসা ও চাকুরী (Business & Job) by (2 points)
আসসালামু আলাইকুম। আমি একটি স্বনামধন্য পাবলিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করেছি ৫ বছর হলো। পাশ করার সাথে সাথেই দ্বীনের বুঝ আসা শুরু করে এবং ফ্রি মিক্সিং, ফিতনার কথা মাথায় রেখে আমি সিদ্ধান্ত নিই যে ক্যারিয়ার গড়া বা জব করবো নাহ। দ্বীনদার পাত্র দেখে বিয়ে করে ফেলবো। প্রথম দিকে পরিবার মেনে নিতে চায় নি,কিন্তু সময়ের সাথে সাথে রিএক্ট করা সহনীয় পর্যায়ের ছিল।তারপর পরিবার বিয়ের চেষ্টা করছিল এখনো দ্বীনদার পাত্র খুজে পাইনি। যাইহোক এখনো আল্লাহর হুকুমে অবিবাহিত আছি এবং মা মারা যাওয়ায় পরিবারে বাবা, ছোট দুই বোনের দেখাশুনা করছি। এইদিকে সব মিলিয়ে পাত্র খুজে না পাওয়ায় আমার বাবা ভাবছে আমি জব করি নাহ বিধায় আমার বিয়ে হচ্ছে নাহ। আমার পরিবার আর্থিকভাবে যথেষ্ট স্বচ্ছল আলহামদুলিল্লাহ।আমাদের পাচ বোনের সবার নামেই কিছু এসেট আছে যা একা থাকলেও সারাজীবন চলে যাওয়ার মত আলহামদুলিল্লাহ।    কিন্তু বাবার দ্বীনের বুঝ না থাকায় বার বার বলে জব করার কথা বিশেষ করে বিসিএস দেবার কথা যেন আমি একজন ক্যাডার হতে পারি। সমাজের বা প্রতিবেশী কারো ভালো চাকরি হলে বা সাকসেসফুল হলে এই চাপ আরো বেড়ে যায়। আমি বুঝাতে গেলে বুঝে নাহ উলটো অভিশাপ দিতে থাকে এই বলে যে আমার কোন দিন বিয়ে হবে নাহ বা আমি কোন দিন জান্নাতে যেতে পারবো নাহ। উনি এতটা পরশ্রীকাতর হয়ে পড়েন যে বলেন উনার বুকের ভেতর রক্তক্ষরণ হচ্ছে।কান্না করে বলেন যে এত টাকা পয়সা খরচ করে কষ্ট করে লেখাপড়া করিয়েছেন অথচ আমি কোন আউটপুট দিচ্ছি নাহ, সমাজের মানুষের সামনে মাথা নিচু করে চলতে হয়, গর্ব করে বলতে পারছেন নাহ মেয়ে ভালো চাকরি করে। এইক্ষেত্রে আমি কি করতে পারি? বিসিএস চাকরির জন্য  চেষ্টা করা আমার জন্য কি জায়েজ হবে? মেয়েদের ক্যাডার সার্ভিসে যাওয়া কতটুকু যুক্তি যুক্ত? এইদিকে আমার বাবা আমাকে যে অভিশাপ দিচ্ছেন সেগুলা কি আমার উপর লেগে যাবে?  আমি ভয় পাচ্ছি।

1 Answer

0 votes
by (58,830 points)

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু

বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

গোনাহের কাজ ব্যতীত অন্যান্য সমস্ত কাজে মাতাপিতার বিধিনিষেধের অনুসরণ করা ওয়াজিব। কেননা রাসূলুল্লাহ সাল্লাহু আলাইহিসসালাম বলেছেন,

ﻻ ﻃﺎﻋﺔ ﻓﻲ ﻣﻌﺼﻴﺔ ﺇﻧﻤﺎ ﺍﻟﻄﺎﻋﺔ ﻓﻲ ﺍﻟﻤﻌﺮﻭﻑ

গোনাহের কাজে কারো অনুসরণ করা যাবে না,অনুসরণ একমাত্র নেককাজ সমূহেই করা যাবে। (সহীহ বুখারী-৭২৫৭,সহীহ মুসলিম-১৮৪০)

অন্যত্র বর্ণিত আছে

ﻟَﺎ ﻃَﺎﻋَﺔَ ﻟِﻤَﺨْﻠُﻮﻕٍ ﻓِﻲ ﻣَﻌْﺼِﻴَﺔِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻋَﺰَّ ﻭَﺟَﻞَّ

আল্লাহর অবাধ্যতায় কোনো মাখলুকের অনুসরণ করা যাবে না। (মুসনাদে আহমদ-১০৯৮)

যে সমস্ত বিষয় মাতাপিতার ফায়দাদায়ক এবং সন্তানের জন্য ক্ষতিকর নয়,সে সমস্ত বিষয়ে মাতাপিতার অনুসরণ ওয়াজিব।যদি মাতাপিতা জন্য ফায়দাদায়ক না হয় বা সন্তানের জন্য ক্ষতিকর হয়,সে সমস্ত বিষয়ে মাতাপিতা আদেশ নিষেধের অনুসরণ ওয়াজিব নয়।

ইবনে তাইমিয়্যাহ রাহ বলেন,

ﻭﻳﻠﺰﻡ ﺍﻹﻧﺴﺎﻥ ﻃﺎﻋﺔ ﻭﺍﻟﺪﻳﻪ ﻓﻲ ﻏﻴﺮ ﺍﻟﻤﻌﺼﻴﺔ ، ﻭﺇﻥ ﻛﺎﻧﺎ ﻓﺎﺳﻘﻴﻦ ... ﻭﻫﺬﺍ ﻓﻴﻤﺎ ﻓﻴﻪ ﻣﻨﻔﻌﺔ ﻟﻬﻤﺎ ، ﻭﻻ ﺿﺮﺭ ﻋﻠﻴﻪ " ﺍﻧﺘﻬﻰ .

মাতাপিতা আদেশ নিষেধের অনুসরণ সন্তানের জন্য তখনই ওয়াজিব যখন তা কোনো গোনাহের কাজ হবে না।যদি ও তারা ফাসিক হোক না কেন?

উপরোক্ত হুকুম তখনই যখন তা মাতাপিতার জন্য ফায়দাদায়ক হবে,এবং সন্তানের জন্য কোনো ক্ষতির কারণ হবে না। (সন্তানের জন্য ক্ষতির কারণ হলে শরীয়ত কর্তৃক বৈধ জিনিষেও মাতাপিতার অনুসরণ ওয়াজিব হবে না) (আল-ইখতিয়ারাত-১১৪)

চার মাযহাব সম্বলীত সর্ব বৃহৎ ফেক্বাহী গ্রন্থ

'আল-মাওসু'আতুল ফেক্বহিয়্যায়' রয়েছে,

" ﻃﺎﻋﺔ ﺍﻟﻤﺨﻠﻮﻗﻴﻦ - ﻣﻤّﻦ ﺗﺠﺐ ﻃﺎﻋﺘﻬﻢ – ﻛﺎﻟﻮﺍﻟﺪﻳﻦ ، ﻭﺍﻟﺰّﻭﺝ ، ﻭﻭﻻﺓ ﺍﻷﻣﺮ : ﻓﺈﻥّ ﻭﺟﻮﺏ ﻃﺎﻋﺘﻬﻢ ﻣﻘﻴّﺪ ﺑﺄﻥ ﻻ ﻳﻜﻮﻥ ﻓﻲ ﻣﻌﺼﻴﺔ ، ﺇﺫ ﻻ ﻃﺎﻋﺔ ﻟﻤﺨﻠﻮﻕ ﻓﻲ ﻣﻌﺼﻴﺔ ﺍﻟﺨﺎﻟﻖ " ﺍﻧﺘﻬﻰ

যাদের আদেশ-নিষেধ এর অনুসরণ শরীয়ত কর্তৃক ওয়াজিব।যেমন-মাতাপিতা,স্বামী,সরকারী বিধিনিষেধ,এর অনুসরণ ওয়াজিব।

এ হুকুম ব্যাপক হারে প্রযোজ্য হবে না বরং ঐ সময়-ই প্রযোজ্য হবে যখন তা গুনাহের কাজ হবে না।কেননা হাদীস দ্বারা প্রমাণিত রয়েছে আল্লাহর অবাধ্যতায় কোনো মাখলুকের অনুসরণ করা যাবে না।(২৮/৩২৭)

বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/1722

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!

পিতামাত মেয়েকে চাকুরী করতে বাধ্য করতে পারবে না। এক্ষেত্রে মাতাপিতার আদেশকে মান্য করাও ওয়াজিব হবে না। এজন্য যদি পিতা বদ দু' দেয়, সেই বদ-দু'আ পতিত হবে না।

মেয়েদের চাকুরীর বিধান সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন : https://www.ifatwa.info/11847/

মেয়েদের জন্য বিসিএস এডমিন ক্যাডার পদে জয়েন করার হুকুম সম্পর্কে জানতে দেখুন: https://www.ifatwa.info/47751/

দ্রুত বিয়ের আমল সম্পর্কে জানতে দেখুন: https://www.ifatwa.info/79253/


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...