জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
(০১)
দ্বীনী ইলম অর্জনের সঠিক পদ্ধতি হচ্ছে, আলিমগণের নিকট থেকে ইলম অর্জন করা।
হযরত আবু উমামা রা. থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবীদের বললেন-
خُذُوا الْعِلْمَ قَبْلَ أَنْ يَذْهَبَ
‘ইলম অর্জন কর তা বিদায় নেওয়ার আগে’। সাহাবীগণ আরয করলেন-
وَكَيْفَ يَذْهَبُ الْعِلْمُ يَا نَبِيَّ اللَّهِ، وَفِينَا كِتَابُ اللَّهِ؟
আল্লাহর নবী! ইলম কীভাবে বিদায় নেবে, আমাদের মাঝে তো রয়েছে আল্লাহর কিতাব?
বর্ণনাকারী বলেন, এ কথায় তিনি রুষ্ট হলেন। এরপর বললেন-
ثَكِلَتْكُمْ أُمَّهَاتُكُمْ أَوَلَمْ تَكُنِ التَّوْرَاةُ وَالْإِنْجِيلُ فِي بَنِي إِسْرَائِيلَ، فَلَمْ يُغْنِيَا عَنْهُمْ شَيْئًا؟ إِنَّ ذَهَابَ الْعِلْمِ أَنْ يَذْهَبَ حَمَلَتُهُ، إِنَّ ذَهَابَ الْعِلْمِ أَنْ يَذْهَبَ حَمَلَتُهُ
তোমাদের মরণ হোক! বনী ইসরাইলের মাঝে কি তাওরাত ও ইঞ্জীল ছিল না, কিন্তু এতে তো তাদের কোনোই উপকার হল না! ইলমের প্রস্থানের অর্থ তার বাহকগণের প্রস্থান। -মুসনাদে আহমদ ৫/২৬৬; আদদারেমী ১/৮৬, হাদীস ২৪৫
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
কওমী মাদ্রাসা থেকে দাওরায়ে হাদীস শেষ করার পর উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ এ পড়লে মুফতী,উচ্চতর ইসলামী তাফসীর বিভাগ এ পড়ে তাফসীর করলে মুফাচ্ছির,উচ্চতর হাদীস গবেষণা বিভাগ এ পড়ে হাদীস পড়ালে মুহাদ্দিস,উচ্চতর কিরাআত বিভাগ এ পড়লে ক্বারী বলা হয়।
,
(এক্ষেত্রে অনেকের ব্যাখ্যার কিছু ভিন্নতা থাকতে পারে।)
,
আরো জানুনঃ
,
ইমামতি ছহীহ হওয়ার শর্তঃ
১। পুরুষ হওয়া।
২। মুসলমান হওয়া।
৩। বালেগ হওয়া। নাবালকের ইমামতি শুদ্ধ নয়। (সুনানে কুবরা লিল বায়হাকি : ৬০৬৯)
৪। বুদ্ধিসম্পন্ন হওয়া। পাগলের ইমামতি শুদ্ধ নয়।
৫। নামাজ বিশুদ্ধ হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় কেরাত পড়তে সক্ষম হওয়া। সুতরাং যে ব্যক্তি নামাজ শুদ্ধ হওয়ার জন্য যতটুকু কেরাত পড়া প্রয়োজন, ততটুকু পড়তে সক্ষম নয়, ওই ব্যক্তির ইমামতি শুদ্ধ নয়। (তিরমিজি : ১৯১)
৬। নামাজ বিশুদ্ধ হওয়ার যতগুলো শর্ত আছে, তার মধ্য থেকে যদি শুধু একটি শর্তও পাওয়া না যায়, তাহলে তার ইমামতি শুদ্ধ হবে না। নামাজ সহিহ হওয়ার শর্ত যেমন—পবিত্রতা, সতর ঢাকা ইত্যাদি। আর যার নামাজই হবে না, তার ইমামতির প্রশ্নই আসে না।
,৭। ওজর তথা যাবতীয় অপারগতামুক্ত হওয়া। যেমন—নাক দিয়ে রক্ত বের হওয়া, প্রস্রাব ঝরা, সর্বক্ষণ বায়ু নির্গত হওয়া ইত্যাদি। (বাদায়ে : ২/৫৪)
৮। শব্দের সঠিক উচ্চারণে সক্ষম হওয়া। যে ব্যক্তি ‘রা’ বলতে ‘গাইন’, ‘হা’ বলতে ‘খা’ উচ্চারণ করে, এরূপ লোকের ইমামতি সহিহ হবে না। কারণ সে লোক পবিত্র কোরআন শুদ্ধ করে পড়তে পারবে না। সঠিক উচ্চারণে কোরআন পড়তে না পারলে নামাজই শুদ্ধ হবে না। সে কারণে তার ইমামতিও সহিহ হবে না।
(০২)
দাওরায়ে হাদীস শেষ করার পর আমাদের মাদ্রাসা গুলোতে ২ বছর অনেক জায়গায় এক বছর পড়লেও কারীয়ানা শেষ করা যায়।
,
কিছু মাদ্রাসায় ভর্তি হতে এক্ষেত্রে দাওরায়ে হাদীস পাশ করতেও হয়না।
,
সাত লাহন , সাত কেরাআত বলতে প্রসিদ্ধ সাত জন কারীর প্রতি সম্পর্কিত কেরাআতকে বুঝায়।
আল্লাহর বাণী পবিত্র কুরআন মাজীদ পৃথক পৃথক সাত কেরাআতে নাজিল হয়েছে। রাসুল (সাঃ) বলেনঃ নিশ্চয় কুরআন মাজীদ সাত হরফে (সাতটি ভিন্ন ভিন্ন কেরআতে) নাজিল হয়েছে। এগুলো থেকে যেটি সহজ মনে হয় তাই তোমরা পড়। (বুখারী শরিফঃ ২৪১৯)
রাসূল (সাঃ) কে জিবরাইল (আঃ) বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কেরআতে কুরআন শুনাতেন। রাসূল (সাঃ) বলেছেন যে, প্রতিটি তেলাওয়াতই সয়ং সম্পুর্ণ। তাই, তিনি তার উম্মতকে যেকোন কেরআতে তেলাওয়াত করার অনুমতি দিয়েছেন। এগুলো সবই (সাত কেরাআতই) আল্লাহর পক্ষ থেকে রাসুল (সাঃ) এর উপর নাজিলকৃত এবং তার পক্ষ থেকে মুতাওয়াতির রেওয়ায়েতে আমাদের কাছে এসেছে। এগুলো সবই কুরআন এটা বিশ্বাস করা জরুরী।
যারা এ কীরাত সমূহকে প্রচার প্রসারে আত্ননিয়োগ করেছিলেন। সে সন্মানিত ব্যক্তিবর্গ হলেনঃ
১.আব্দুল্লাহ ইবনে কাসীর আল-মাক্কী।
২. নাফে ইবনে আবী নাঈম আল-মাদানী।
৩. আব্দুল্লাহ ইবনে আমের আশ-শামী।
৪. আবু আমর ইবনে আলা আল-বাসরী।
৫. আসিম বিন নুজুদ।
৬. হামযাহ বিন হাবিব আল কুফি।
৭. কাসায়ী আল-কুফী।
,
(০৩)
কোনো হাদিস গ্রন্থের "সনদ" বলতে বুঝায় হলো কোনো হাদীস রাসুল সাঃ থেকে নিয়ে ঐ কিতাব লেখক (রাবী) পর্যন্ত পৌছতে যতগুলো হাদীসের রেওয়ায়াত কারী (বর্ণনা কারী) রয়েছে,তাদের ধারাবাহিক নামকে সনদ বলা হয়।
(০৪)
এখানে কিছু মাদ্রাসার নাম উল্লেখ করছি,অনেক বড় মাদ্রাসার নাম এখানে নাও আসতে পারে,সংক্ষেপে কিছু নামঃ
পুরুষ মাদ্রাসাঃ
আল জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম, হাটহাজারী
জামিয়া ইসলামিয়া ওবাইদিয়া নানুপুর, ফটিকছড়ি
আল জামিয়া আল ইসলামিয়া পটিয়া, চট্টগ্রাম
আল জামিয়াতুল আরবিয়াতুল ইসলামিয়া জিরি, পটিয়া
আল জামিয়াতুল ইসলামিয়া হামিয়ুচ্ছুন্নাহ মেখল, হাটহাজারী
জামেয়া দারুল মাআরিফ আল ইসলামিয়া, চসিক
আল জামিয়াতুল ইসলামিয়া আজিজুল উলুম বাবুনগর, ফটিকছড়ি
আল জামিয়াতুল মাদানিয়া চট্টগ্রাম, শুলকবহর
আল জামিয়াতুল আরবিয়া নছিরুল ইসলাম নাজিরহাট, ফটিকছড়ি
ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার বাংলাদেশ, বসুন্ধরা
শাইখ যাকারিয়া ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার, খিলক্ষেত
জামিয়া কুরআনিয়া আরাবিয়া, লালবাগ
জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া, ঢাকা, মোহাম্মদপুর
জামিয়া শরইয়্যাহ মালিবাগ, ঢাকা
জামিয়া আরাবিয়া ইমদাদুল উলূম ফরিদাবাদ মাদ্রাসা, গেন্ডারিয়া
জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলূম মাদানিয়া, যাত্রাবাড়ী
জামিয়া মাদানিয়া আঙ্গুরা মুহাম্মদপুর
জামিয়া ইসলামিয়া লালমাটিয়া মাদ্রাসা, মোহাম্মদপুর, ঢাকা
জামিয়া ইয়াকুবিয়া হাবীবিয়া, সাভার
আরজাবাদ মাদরাসা মিরপুর, ঢাকা।
জামিউল উলূম মাদরাসা, মিরপুর-১৪ ঢাকা।
মারকাযুশ শরীয়া লিলবুহুসিল ইসলামিয়া ঢাকা, বাদালদী, তুরাগ, উত্তরা।
জামিআ হাকীমুল উম্মত, আড়াকুল, কেরানীগঞ্জ।
কাসিমুল উলূম জামিল মাদরাসা, বগুড়া।
কারবালা মাদরাসা, বগুড়া।
,
★উল্লেখযোগ্য কিছু মহিলা মাদ্রাসাঃ
জামিয়া সিদ্দিকিয়া নূরানী মহিলা মাদরাসা। মিরপুর-২।
নূরুল কুরআন বালিকা মাদরাসা, গ-২০/৮, মহাখালী
আল মাদরাসাতুল আরাবিয়া লিল বানাত মাস্তুরাত মাদরাসা, গ-৬৩, মহাখালী স্কুল রোড
রিয়াযুল কুরআন মহিলা মাদরাসা, ১৪২৩/২/এ, খিলগাঁও ঝিলপাড়
মাহমূদিয়া মহিলা মাদরাসা, ৪৫, খিলগাঁও, বাগিচা
আল জামিয়াতুল আরাবিয়া লিল বানাত (ফাতেমা রা. মহিলা মহিলা মাদরাসা), চকলোকমান
খাতুনে জান্নাত ফাতেমা বালিকা কওমী মাদরাসা, পুরান বগুড়া
দারুল উলূম মহিলা আবাসিক কওমী মাদরাসা, মালতীনগর স্টাফ কোয়াটার
দারুল উলূম আয়েশা সিদ্দিকা হাফেজিয়া কওমীয়া মহিলা মাদরাসা, জয়পুর পাড়া
জামিয়া ফাতেমাতুজ যাহরা মহিলা মাদরাসা, দয়ামীর, উসমানি নগর
আল জামিয়াতু ত্বয়িবাহ মহিলা মাদরাসা, সুলতানপুর, বালাগনজ
মাসরাসাতুল বানাত দারুল হাদিস, বারুতখানা, সিলেট সদর