আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
79 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (6 points)
আসসালামু 'আলাইকুম। এক বোনের প্রশ্ন,

সে পালিয়ে বিয়ে করেছে, সাক্ষী ছিলো ছেলের মামা, খালা। মেয়ের কেউ ছিলো না। পরে মেয়ের পরিবার মেয়েকে জোর করে নিয়ে আসে, অন্যত্র বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে, কিন্তু ছেলে কোন কারণ ব্যতিত ডিভোর্স দিবে না। মেয়ে প্রথমে ছেলেকে ডিভোর্স দিতে চাইলেও এখন ছেলের কাছেই ফেরত যেতে চায়। এখন প্রশ্ন, তাদের কি বিয়ে শুদ্ধ হয়েছিলো? যেহেতু মেয়ের অভিভাবক ছিলো না। যদি শুদ্ধ হয়ে থাকে তাহলে ছেলে কোনভাবেই ডিভোর্স না দিতে চাইলে তো আর মেয়ের কোনভাবে ডিভোর্স সম্ভব হবে না তাইনা?

1 Answer

0 votes
by (677,120 points)
জবাবঃ- 
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم

https://ifatwa.info/15470/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ- 
ইসলামী শরীয়তে বিবাহ শুদ্ধ হবার জন্য কয়েকটি শর্ত রয়েছে। যথা-
বর ও কনেকে কিংবা তাদের প্রতিনিধিকে ইজাব তথা প্রস্তাবনা ও কবুল বলতে হয়।

উক্ত ইজাব ও কবুলটি বলতে হয় দুইজন প্রাপ্ত বয়স্ক মসলিম পুরুষ বা একজন পুরুষ ও দুইজন মহিলার সামনে।

قوله صلى الله عليه وسلم : ( لا نكاح إلا بولي وشاهدي عدل ) رواه البيهقي من حديث عمران وعائشة ، وصححه الألباني في صحيح الجامع (7557) 
বিয়ের আকদের সময় সাক্ষী রাখতে হবে। রাসুলুল্লাহ  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “অভিভাবক ও দুইজন সাক্ষী ছাড়া কোন বিবাহ নেই।” [তাবারানী কর্তৃক সংকলিত, সহীহ জামে (৭৫৫৮)]।

 নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাণী- “তোমরা বিয়ের বিষয়টি ঘোষণা কর।”[মুসনাদে আহমাদ এবং সহীহ জামে গ্রন্থে হাদিসটিকে ‘হাসান’ বলা হয়েছে (১০৭২)]
۔
ইজাব ও কবুলটি উভয় সাক্ষ্যি স্বকর্ণে শুনতে হবে।

উক্ত তিনটির কোন একটি শর্ত না পাওয়া গেলে ইসলামী শরীয়তে বিবাহ শুদ্ধ হয় না।

উপরোক্ত তিনটি শর্ত  পাওয়া গেলে বিবাহ হবে,অন্যথায় বিবাহ হবেনা।
,
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই বোন,    
বিবাহ সহীহ হওয়ার জন্য শর্ত হল দু’জন আযাদ প্রাপ্ত বয়স্ক বিবেকবান দুই জন মুসলিম স্বাক্ষের সামনে পাত্র/পাত্রি প্রস্তাব দিবে আর অপরপক্ষে পাত্র/পাত্রি তা কবুল করবে। আর সাক্ষিগণ উভয়ের কথা সুষ্পষ্টভাবে শুনবে। 

فى الدر المختار- ( و ) شرط ( حضور ) شاهدين ( حرين ) أو حر وحرتين ( مكلفين سامعين قولهما معا ) (الدر المختار ، كتاب النكاح،-3/9)

অনুবাদ-বিবাহ সহীহ হওয়ার শর্ত হল শরীয়তের মুকাল্লাফ [যাদের উপর শরীয়তের বিধান আরোপিত হয়] এমন দুইজন আযাদ পুরুষ সাক্ষি বা একজন আযাদ পুরুষ ও দুইজন মহিলা সাক্ষি হতে হবে, যারা প্রস্তাবনা ও কবুল  বলার উভয় বক্তব্য স্বকর্ণে উপস্থিত থেকে শুনতে পায়। {আদ দুররুল মুখতার-৩/৯, ফাতওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/২৬৮}
,
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন, 
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে উক্ত বিবাহের সময় পাত্র পাত্রি, পাত্রের মামা, খালা ব্যাতিত অন্য কেহ উপস্থিত ছিলো কিনা?

যদি কাজি বা অন্য কোনো মানুষ সেখানে উপস্থিত না থাকে,সেক্ষেত্রে উক্ত বিবাহই শুদ্ধ হয়নি।

ডিভোর্স এর প্রশ্নই উঠেনা।

আর যদি সেখানে কাজি সাহেব বা যে বিবাহ পড়ায়,সে উপস্থিত ছিলো।
সেক্ষেত্রে দেখতে হবে যে এখানে ইজাব,প্রস্তাব কে পেশ করেছিলো?
যদি পাত্র পাত্রিকে প্রস্তাব পেশ করে বলে যে, আমি তোমাকে বিবাহের প্রস্তাব করছি,করলাম।
এটা শুনে মেয়ে যদি বলে হ্যাঁ আমি রাজি,কবুল।
আর ঐ দুইজন প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষ সাক্ষি সেখানে একত্রে বসে তাহা শুনে,এক্ষেত্রে শুধু মাত্র খুতবা যদি সেই সাক্ষিদের মধ্য থেকে একজন পাঠ করে,
তাহলে বিবাহ হয়ে যাবে।
,
অথবা যদি পাত্রি পাত্রকে প্রস্তাব পেশ করে বলে যে, আমি তোমাকে বিবাহের প্রস্তাব করছি,করলাম।
এটা শুনে ছেলে যদি বলে হ্যাঁ আমি রাজি,কবুল।
আর ঐ দুইজন প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষ সাক্ষি সেখানে একত্রে বসে তাহা শুনে,এক্ষেত্রে শুধু মাত্র খুতবা যদি সেই সাক্ষিদের মধ্য থেকে একজন পাঠ করে,
তাহলে বিবাহ হয়ে যাবে।
,
★কিন্তু যদি ইজাব তথা প্রস্তাব পাত্র/পাত্রি পেশ না করে,বরং সেই সাক্ষীদের মধ্যে একজন দুই পক্ষের মধ্য হতে কাহারো উকিল হয়ে প্রস্তাব পেশ করে,তাহলে 
সেখানে যদি পাত্র পাত্রী উপস্থিত থাকে,তাহলে এই বিবাহ সহীহ।
পাত্র পাত্রী সেখানে উপস্থিত না থাকলে এই বিবাহ সহীহ হবেনা।

ومن امر رجلا بأن يزوج ابنته الصغيرة، فزوجها والأب حاضر بشهادة رجل واحد سواهما جاز النكاح (هداية، كتاب النكاح-2\3-7، الدر المختار مع الشامى-4\94، هندية-1\268)
সারমর্মঃ
কোনো ব্যাক্তি যদি তার ছোট মেয়ের বিবাহের জন্য একজনকে আদেশ করে,তারপর সে তার ছোট মেয়েকে বিবাহ দিয়ে দেয় তার বাবার উপস্থিতিতে,তাদের দুইজন ব্যাতিত আরো একজন সাক্ষীর উপস্থিতিতে।
তাহলে এই বিবাহ হয়ে যাবে।  
 
কিন্তু যদি পাত্র/পাত্রী সেই মজলিসে না থাকে,সাক্ষীদের মধ্যে একজন দুই পক্ষের মধ্য হতে কাহারো উকিল হয়ে প্রস্তাব পেশ করে,তাহলে এখানে সে উকিল,সাক্ষী নয়।
তাই এখানে দুইজন সাক্ষী না পাওয়ার কারনে বিবাহ হবেনা।
,
বিস্তারিত জানুনঃ  

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
উপরোক্ত বিবরণ মতে যদি বিবাহ শুদ্ধ হয়ে,সেক্ষেত্রে স্বামী তালাক না দিলে তালাক হবেনা।

হ্যাঁ যদি নিকাহনামাতে স্বামী শরীয়ত সম্মত পন্থায় স্ত্রীকে তালাকের অধিকার দিয়ে থাকে,সেক্ষেত্রে স্ত্রী নিজেকে নিজে তালাক দিতে পারে।

নিজেকে তালাক দিয়ে ইদ্দতকাল অতিবাহিত হওয়ার পর অন্যত্রে বিবাহ বসতে পারবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...