আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
79 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (21 points)
আসসালামু আলাইকুম
আশা করি ভালো আছেন।

জেনারেল ব্যবস্থা অর্থাৎ স্কুল,কলেজ,ভার্সিটিতে পড়াশোনা এবং বর্তমান পদ্ধতি নিয়ে কয়েকটা প্রশ্ন করতেছি।
১/বর্তমান পদ্ধতিতে যেভাবে ছেলে মেয়েরা পড়াশোনা করে অর্থাৎ ছেলে মেয়েদের একসাথে ক্লাস করা এইটা কি ইসলামের দৃষ্টিতে বৈধ?
২/অনক আলেমের ফতোয়া শুনেছি তারা বলেছে নারীরা পর্দারসহিত ছেলেদের সাথে একসাথে ক্লাস বা চাকরি করতে পারবে,তাদের এধরনের ফতোয়া দেখে মনে হলো যে তাদের এই ফতোয়া গুলো সঠিক না বরং এগুলোর মাধ্যমেও ফেতনা হবে কেননা যেখানে ছেলে মেয়ে একসাথে থাকবে সেখানে ফেতনা হবেই সেটা যতোই পর্দা করুক যার কারন হলো এখনকার প্রায় অধিকাংশ মেয়ে গুলোই বোরকা পড়েও ছেলেদের সাথে আড্ডা দেয়,ঘুড়তে যায়,এমনকি জিনাতেও লিপ্ত হয় এইসব দেখেই মনে হয় যে তাদের ফতোয়া গুলো ভুল


এখন প্রশ্ন হলো যেখানে ফেতনা ছাড়া কিছুই নেই অর্থাৎ স্কুল,কলেজ,ভার্সিটিতে ফেতনা আর বেহায়াপনা ছাড়া কিছুই নেই সেখানে কি নারীরা পর্দা করে ছেলেদের সাথে ক্লাস করতে পারবে?যেহেতু এখনকার নারী গুলো এতোটাই লজ্জাহীন এবং বেহায়া হয়ে গেছে যে তারা পর্দার অন্তড়ালেও বেহায়াপনা করে।


৩/আমি জেনারেল পড়াশোনার পদ্ধতিটাকে হারাম মনে করি কেননা এইখানে ফেতনা ছাড়া আর কিছুই নেই জদিও আমিও একজন জেনারেল পড়ুয়া স্টুডেন্ট কিন্তু নিজের চোখে এতো বেহায়াপনা দেখি জার কারনে মনে হয় এইভাবে ক্লাস বা পড়াশোনা করা কখনো জায়েজ হবেনা। আমার ধারনাটা কি সঠিক?

৪/আমার কাছে পৃথিবীর সব থেকে বড় বেহায়াপনার কারখানা মনে হয় স্কুল,কলেজ আর ভার্সিটিকে তাই কোনো ভাবেই এইভাবে পড়াশোনা করাকে জায়েজ মনে করিনা সব থেকে বড় কথা হলো অনেক হাদিসের মাধ্যমে জানতে পেরেছি মানুষ শেষ জামানায় দুনিয়ার ইলমের পিছনে ছুটবে এইসব হাদিস দেখেও মনে হয় কখনোই এইভাবে পড়াশোনা করা জায়েজ হবেনা


৫/আমার নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলতেছি জেনারেল পড়ুয়া মেয়েদের মধ্যে স্বতি নারী পাওয়া মুশকিল। ইসলামে কি স্বতি নারী চেনার কোোনো উপায় আছে?যেহেতু এখন অনেক পর্দাশীল মেয়েরাও ছেলেদের সাথে মিশে এবং আড্ডা দেয়।


সর্বশেষ প্রশ্ন

৬/স্কুল,কলেজ,ভার্সিটিতে পড়াশোনা করা ফরজ,নফল,সুন্নত, ওয়াজিবের একটাও না বরং এইখানে গেলে ছেলে মেয়ে বেহায়া এবং লজ্জাহীন হয় যার কারনে ইসলাম কখনো এইটা বলবেনা যে নারীরা এইভাবে পড়াশোনা করে দুনিয়াতে প্রতিষ্ঠিত হতে পারবে।

অনেক আলেমের ফতোয়া শুনেছি যে কোোনো নারী যদি সারা বছর পড়াশোনা করার পরে যখন বোর্ড পরিক্ষা দিতে যায় তখন যদি ছাত্রীকে বলা হয় যে বোরকা পড়ে পরিক্ষা দেওয়া জাবেনা নারীরা তখন এই ক্ষেত্রে পর্দা লংঘন করতে পারবে অর্থাৎ পর্দা না করেই পরিক্ষা দিতে পারবে যেহেতু এটা ছাড়া কোোনো উপায় নেই।এখন প্রশ্ন হলো এই দুনিয়াবি ইলমের জন্য পর্দা লংঘন করা কতোটা ইসলাম সমর্থন করে?যেহেতু এই পরিক্ষা দেওয়া ফরজ,ওয়াজিব বা সুন্নতেও একটাও না বরং পর্দা করা ফরজ।
দুনিয়াবি ইলমের জন্য কি পর্দা লংঘন করা জায়েজ হবে?

1 Answer

0 votes
by (676,800 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
দ্বীনি শিক্ষা হোক,বা দুনিয়াবি শিক্ষা হোক,ইসলামের বিধান হলো ছেলেরা ছেলেদের প্রতিষ্ঠানে এবং মেয়েরা মেয়েদের প্রতিষ্ঠানে পড়বে। বিশেষত মেয়েদের ক্ষেত্রে এর প্রতি সর্বোচ্চ লক্ষ রাখা ও গুরুত্ব দেয়া আবশ্যক। 

কেননা, আল্লাহ তাআলা বলেন,

زُيِّنَ لِلنَّاسِ حُبُّ الشَّهَوَاتِ مِنَ النِّسَاء

মানবকূলকে মোহগ্রস্ত করেছে নারী…। (সূরা আলি ইমরান ১৪)

রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,

مَا تَرَكْتُ بَعْدِي فِتْنَةً أَضَرَّ عَلَى الرِّجَالِ مِنْ النِّسَاءِ

আমি আমার পরে মানুষের মাঝে পুরুষদের জন্য নারীদের চাইতে অধিকতর ক্ষতিকর কোন ফিতনা রেখে যাই নি।(বুখারী ৪৮০৮ মুসলিম ২৭৪০)

ফাতাওয়া লাজনাতিদ্দায়িমাতে এসেছে,

 فلا يجوز للمرأة أن تَدرس أو تعمل في مكان مختلط بالرجال والنساء ، ولا يجوز لوليها أن يأذن لها بذلك

সুতরাং মেয়েদের জন্য এমন প্রতিষ্ঠানে পড়া-লেখা কিংবা চাকরি করা জায়েয হবে না যেখানে নারী-পুরুষের সহাবস্থান রয়েছে এবং অভিবাকের জন্য জায়েয হবে না তাকে এর অনুমতি দেয়া।  (ফাতাওয়া লাজনাতিদ্দায়িমা ১২/১৫৬)

★ একান্ত অপারগ অবস্থায় বা বিকল্প কোন পথ না পেলে এসব প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করা জায়েয আছে। কেননা, الضرورات تبيح المحظورات     জরুরত নিষিদ্ধ কাজকে সিদ্ধ করে দেয়। (আলআশবাহ ওয়াননাযাইর ১/৭৮)

তবে সবোর্চ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি, যাতে পর্দা লঙ্ঘন বা আল্লাহর অসন্তুষ্টি মূলক কার্যক্রম সংঘটিত না হয়।

কেননা, আল্লাহ তাআলা বলেন,

فَاتَّقُوا اللَّهَ مَا اسْتَطَعْتُمْ

অতএব তোমরা যথাসাধ্য আল্লাহকে ভয় কর। (সূরা তাগাবুন ১৬)
,
★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই বোন, 
যতদিন পর্যন্ত এই দেশে পৃথক শিক্ষা ব্যবস্থা চালু না হচ্ছে ,ততদিন প্রয়োজনের তাগিদে নিম্নোক্ত শর্তাদির সাথে উলামায়ে কেরামগন  কলেজ-ভার্সিটিতে শিক্ষা গ্রহণের পরামর্শ দেন।

১/শিক্ষা অর্জন দেশ ও মুসলিম জাতীর খেদমতের উদ্দেশ্যে হতে হবে।

২/চোখকে সব সময় নিচু করে রাখতে হবে,প্রয়োজন ব্যতীত কোনো শিক্ষক/শিক্ষিকার দিকে তাকানো যাবে না।মহিলা/পুরুষ তথা অন্য লিঙ্গের  সহশিক্ষার্থীদের সাথে তো কোনো প্রকার সম্পর্ক রাখা যাবেই না।সর্বদা অন্য লিঙ্গর শিক্ষার্থী থেকে নিজেকে নিরাপদ দূরত্বে রাখতে হবে।
ফাতাওয়া উসমানী ১/১৬০-১৭১;

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
উপরোক্ত শর্ত পুরোপুরি ভাবে মেনে সহ শিক্ষা মূলক প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করা জায়েজ আছে।
,
সহ শিক্ষা সংক্রান্ত বিস্তারিত জানুনঃ 

(০২)
পূর্ণ পর্দা সত্ত্বেও ছেলেদের সাথে আড্ডা দিলে তো সেই চাকরি/পড়াশোনা জায়েজ হবেনা।

(৩.৪)
উপরোক্ত শর্তাবলী পুরোপুরি ভাবে মানতে না পারলে সহ শিক্ষা মূলক প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করা জায়েজ হবেনা।
সেক্ষেত্রে আপনার ধারণা সঠিক।

তবে কেহ যদি উপরোক্ত শর্তাবলী পুরোপুরি ভাবে মেনে সহ শিক্ষা মূলক প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করে,পরিপূর্ণ ভাবে ফিতনাহ থেকে মুক্ত থাকে,তাহলে তার জন্য সেখানে পড়াশোনা করা জায়েজ হবে।

(০৫)
সতী নারী চেনার জন্য সেই নারীকেই প্রশ্ন করতে হবে। গায়রে মাহরামদের সাথে তার কথাবার্তা হয় কিনা? জেনে নিতে হবে। রিলেশন আছে কিনা,জানতে হবে। সে যাদের সাথে উঠাবসা করে,তাদেরকে জিজ্ঞাসা করতে হবে। সে পূর্ণ শরীয়ত মানে কিনা,জানতে হবে।

(০৬)
কোথাও জায়েজ বলা হয়না।
মূলত প্রয়োজনের ভিত্তিতে শর্ত সাপেক্ষে অনুমতি দেয়া হয়। তবে ইস্তেগফার পাঠ করার কথাও বলা হয়। তওবা করতে বলা হয়। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by
এদেশ এ আর কবে মেয়েদের ভার্সিট কলেজ আলাদা হবে? এটি সম্ভব নয়।আর সহশিক্ষা থাকলে পরদার ও মূল্য থাকবেনা এক সময়।ফেতনা,বেহায়াপনা বাড়বে।মেয়েদের মহিলা মাদ্রাসায় পড়া সর্বত্তম।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...