আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
318 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (17 points)
আসসালামু আলাইকুম।
প্রশ্ন -১ : মেয়েদের কথা দিয়ে জিহার হয়?

প্রশ্ন -২:

ঘটনা -১: আমি জিহার  সম্পর্কিত প্রশ্ন করছিলাম i.fatwa তে। তখন আমি বলি যে এইটা বিবিধ মাসয়ালা ক্যাটাগরি তে পরে।তো আমার হাসব্যান্ড বলে বিয়ে -তালাক  না??(বিয়ে -তালাক ক্যাটাগরি তে পরে না এইটা বুঝাতে চাইছে).এইটা কি তালাক গণ্য হবে?এই  প্রশ্ন লিখার সময় বিয়ে - তালাক লিখেছি এই নিয়ে সমস্যা হবে না?

ঘটনা -২ : আমি আমার ভাইয়ের সঙ্গে মেসেজে কি কি কথা বলেছি টা আমার হাসব্যান্ড কে পরে শুনাচ্ছিলাম।তো একটা মেসেজ এমন ছিলো যে ভাই তুই বিয়ে কর।এইটা বলার পর মনে হলো এইটা জিহার/কেনায়া বাক্য হলো নাকি?আগের বাক্যটি লিখার সময় মনে তালাক এর কথা আসে।মনে হয় আমি যেনো তালাক নিয়ে বেশি এক্সসাইটেড(কিন্তু আমি মোটেও এই জিনিস চাই না)। সমস্যা হবে কি এই নিয়ে?

ঘটনা ৩: একটা আণ্টি জিজ্ঞেস করছিল যে আমাদের বাড়ি(বাবার বাড়ি)শহরে না?

আমি বলেছি হা আমাদের(বলার সময় মনে হলো যে এইভাবে বলা যাবে না।কারণ আমি এখন বিবাহিত তাও বলেছি)বাড়ি একবারে মেন শহরে।এইটা কি কেনায় বাক্য ধরা হবে?বাবার বাড়ি বলে এখনো অভ্যস্ত হয়নি তাই আমাদের এলাকা,বাড়ি বলা হবে যায়।

ঘটনা ৪: বাইরে একজন ডাকছিল আশিক এর বউ।এই কথা শুনে আমি পা নড়াইছি(জবাব দিয়ার অর্থে) কিন্তু আমার হাসব্যান্ড এর নাম আশিক না।এমন টা কেনো করলাম আমি নিজেও জানি না। এইটা তে প্রবলেম হবে বিয়ের ?

ঘটনা ৫: কথায় কথায় আমাদের ঐখানে,এলাকায়,বাড়িতে(বাবার বাড়ির ঘটনা বুঝাতে) এমন বলে ফেলি।বলার সময় মনে হয় যে এখন এইভাবে বলা যাবে না বলতে হবে আব্বুর এলকা,আব্বুর বাড়ি।এই গুলো কি কেনায় বাক্য ধরা হবে?

ঘটনা :৬ শাশুড়ি  মা কে বলছিলাম যে আমার খাওয়া হয়ে গেছে।এই কথা বলার সময় মনে হচ্ছিল যে খাওয়া হয়ে গেছে বলতে ডিভোর্স বোঝানো হবে না তো?এইটা কেনায় বাক্য হবে নাতো? এমন কি এই প্রশ্ন লিখার সময় ডিভোর্স লিখেই মনে হলো সমস্যা হবে না তো? ডিভোর্স লিখার সময় জিব নড়ছে সমস্যা হবে না তো?

ঘটনা ৭: আমার হাসব্যান্ড অন্য রুমে ছিলো আর আমি অন্য রুমে।হাসব্যান্ড এর সামনে দরজার পর্দা টেনে দেই যেনো আমাকে দেখতে না পায়।পর্দা টানতে টানতে মনে হয় তুমি পর্দা করো এইটা তো কেনায় বাক্য।প্রবলেম হবে না তো?তখন মনে হলো যে আমি তো রাগ করে পর্দা টেনে দিচ্ছি যেনো দেখতে না পাই। দিয়ে ভালো করে দরজার পর্দা টেনে দেই।কিন্তু এখন ভয় লাগছে।যে এইটা কেনায় বাক্য হলো না তো? বিয়ের সমস্যা হবে না তো?

ঘটনা ৮: আমার শাশুড়ি ছবি দেখায় বলছিলো এইটা হচ্ছে তোমার বড়ো জামাই।আমি এই কথা শুনে মাথা নড়াইছি (হা বোধক)।মাথা নাড়াতে নাড়াতে মনে হলো জামাই তো বলে নিজের হাসব্যান্ড কে।তাহলে আমার তো মাথা নড়ানো ঠিক হয়নি।এইটার জন্য কি কোনো অসুবিধা হবে?

ঘটনা ৯: আমি আমার হাসব্যান্ড কে বলছি আমার বর থাকা অবস্থায়(এই কথা বলে চুপ ছিলাম)দিয়ে বলছি যে আমার বান্ধবীদের সময় দেই না,বর কে সময় দেয়।কথা টা কি কেনায় বাক্য হবে?

ঘটনা ১০: হাসব্যান্ড কে বলছি এখন যদি বন্ধু দের সঙ্গে দেখা করতে যাও তাহলে আমার সঙ্গে কথা বলবে না/আমার সঙ্গে আর কথা বলবে না(রাগের মাথায়).এইটা কি শর্ত যুক্ত তালাক হবে?তালাকের নিয়ত তো ছিলো না।রাগ করে বলছি শুধু।

ঘটনা ১১: হাসব্যান্ড বলছিলো রাতের বেলা একা একা চা বানাতে।আমি মাথা নেড়ে না করে দিচ্ছিলাম তখন মনে হলো একা একা বলতে কি ডিভোর্স বুঝলো/বুঝায়?

ঘটনা ১২: ফেইসবুকে একটা পোস্ট পড়ছিলাম যে  I have got divorce for 3years.....
এই পোস্ট পড়ার সময় আমি খাচ্ছিলাম তাই জিহ্ববা, দাত নড়ছিলো।

উপরোক্ত ঘটনা গুলো ১৪ডিসেম্বর থেকে গত কালকের। আরো এমন অনেক ঘটনা ঘটে যে গুলা আমি নিজেকে বুঝায় বুঝায় বলি যে কিছু হয়নি।কিন্তু এই ঘটনা গুলোর ব্যাপারে আমি প্রশ্ন না করে পারলাম না। এমন কি আমার তো প্রশ্ন জিজ্ঞেস করার জন্য টাইপ করতেও ভয় লাগে যে টাইপ করে জিজ্ঞেস করলে হয়তো আবার কেনায় হবে।

আপনারা আমার গত প্রশ্নে বলেছিলেন এইগুলো ওয়াসওয়াসা।তাই অনেক সময় এইসব প্রশ্ন ইগনোর করি।কিন্তু এই প্রশ্ন গুলো ইগনোর করতে পারলাম না তাই বাধ্য হয়ে এই প্রশ্নগুলো করা।এই জন্য দুঃখিত।

1 Answer

0 votes
by (573,870 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
শরীয়তের পরিভাষায় যিহার’বলা হয় নিজের স্ত্রীর কোনো অঙ্গ কে ‘মা’ অথবা ‘স্থায়ীভাবে বিবাহ হারাম’ এমন কোন মহিলার এমন কোনো অঙ্গ যেটা দেখা হারাম,এমন অঙ্গের সমতুল্য বলে আখ্যায়িত করে  (যেমনঃপৃষ্ঠদেশের সমতুল্যবলে আখ্যায়িত করে) তাহাকে আরবীতে ‘যিহার’ বলা হয়।
এতে তার নিয়ত যাই থাকুক না কেনো,
যিহার হয়ে যাবে।
উদাহরণঃ স্বামী স্ত্রীকে বলবে, তুমি আমার নিকট আমার মায়ের পিঠের সমতুল্য। আমার বোন যেমন আমার জন্য হারাম তুমিও তেমনি আমার জন্য হারাম। তোমার শরীরের এক চতুর্থ অংশ আমার জন্য আমার ধাত্রীমায়ের মত হারাম ইত্যাদি। 

আর যদি স্থায়ীভাবে বিবাহ হারাম’ এমন মহিলার কোনো অঙ্গের সাথে তুলনা না করে এই ভাবে বলে যে তুমি আমার তার (মা বা অন্য কেউ) মতো,তাহলে তার নিয়ত দেখতে হবে।
যদি সে  মায়ের মত বলতে মায়ের মত গুণবতী, যত্নশীল বা মায়ের মত ভালবাসে  উদ্দেশ্য নেয়,তাহলে কোনো কিছুই হবেনা।
এক্ষেত্রে যিহার তখনই হবে যখন নিয়ত থাকবে যে মা-বোন যে দিক থেকে হারাম সে দিক থেকে স্ত্রীকে হারাম বানালে।
(নাজমুল ফাতওয়া ৬/৩১৭)
,
আর যিহার করলে কাফফারা আদায় ব্যতীত স্বামীর জন্য স্ত্রীকে স্পর্শ করা বা তার সঙ্গে একত্রে সংসার করা হারাম।

যিহার করলে কাফ্ফারা আদায় করতে বলা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,

وَالَّذِيْنَ يُظٰهِرُوْنَ مِن نِّسَائِهِمْ ثُمَّ يَعُوْدُوْنَ لِمَا قَالُوْا فَتَحْرِيْرُ رَقَبَةٍ مِّنْ قَبْلِ أَن يَّتَمَاسَّا ذٰلِكُمْ تُوْعَظُوْنَ بِهِ وَاللهُ بِمَا تَعْمَلُوْنَ خَبِيْرٌ"(سورۃ المجادلۃ:۲،۳،۴)

“যারা নিজেদের স্ত্রীদের সাথে যিহার করে, তারপর তারা তাদের উক্তি ফিরিয়ে নেয়, তাদের জন্য একে অপরকে স্পর্শ করার পূর্বে একজন দাস মুক্তির বিধান দেয়া হলো। এটা তোমাদের জন্য নির্দেশ। আর তোমরা যা কিছুই করনা কেন,
সে সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা সবই জানেন। এ ছাড়া যে ব্যক্তি গোলাম অর্থাৎ দাস আজাদ করার ক্ষমতা রাখে না তারজন্য একে অপরকে স্পর্শ করার পূর্বে একটানা ২মাস রোযা রাখতে হবে। আর যে ব্যক্তি এটারও সামর্থ্য রাখে না,
তাহ’লে তাকে ৬০জন মিসকিন অর্থাৎ গরীব মানুষকে খানা খাওয়াতে হবে। এই বিধান এ জন্য যে, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের উপরে তোমরা ঈমান রাখ।
এটা আল্লাহর সীমারেখা। আর কাফিরদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি” (আল- মুজাদালাহ,৩-৪)।

আরো জানুনঃ  

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন, 
মেয়েদের কথা দিয়ে যিহার হয়না।

(০২)
প্রশ্নে উল্লেখিত কোনো ছুরতেই তালাক হবেনা।
আপনি নিশ্চিন্ত মনে থাকুন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...