بسم الله الرحمن الرحيم
জবাব,
নামাজ ত্যাগকারীর ব্যাপারে হাদীস শরীফে কঠিন হুমকি এসেছে।
হাদীসে আছে,
عَن ابنِ مَسْعُوْدٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنهُ قَالَ مَن تَرَكَ
الصَّلاَةَ فَلاَ دِينَ لَه
ইবনে মাসউদ (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, যে ব্যক্তি নামায ত্যাগ করে, তার দ্বীনই নেই।(মুছান্নাফে
ইবনে আবী শাইবা ৭৬৩৭, ৩০৩৯৭, ত্বাবারানীর কাবীর ৮৮৪৭-৮৮৪৮, বাইহাক্বীর শুআবুল ঈমান ৪৩, সহীহ তারগীব ৫৭৪)
★তবে
কিছু ইমামমের মতে ইচ্ছাপূর্বক ভাবে বিনা ওযরে নামাজ ত্যাগ করলে ব্যাক্তি কাফের হয়ে
যায়। হাদিস
শরিফে এসেছে, রাসূল (সা. ) বলেন-
إن بين الرجل وبين الشرك والكفر ترك الصلاة
‘কোনো
ব্যক্তির মাঝে এবং শিরক ও কুফরের মাঝে পার্থক্য হলো নামাজ ত্যাগ করা।’ [সহিহ
মুসলিম, হাদিস: ১৩৪]
এধরনের হাদীসের কারণে ইমাম আহমদ (রহ.)
এর মত হলো অলসতা করে নামাজ ত্যাগকারী কাফের।তবে হানাফি মাযহাবের স্কলার ও অনেক
ইসলামী স্কলারদের মতে নামাজ ত্যাগকারী কাফের নয়। বরং ফাসেক এবং
কবিরা গুনাহকারী।
*জামাতে নামাজ আদায়ের তাগিদ দিয়েছেন স্বয়ং
আল্লাহতায়ালা। ইরশাদ হয়েছে,
وَارْكَعُوا مَعَ الرَّاكِعِينَ
‘তোমরা
রুকুকারীদের সঙ্গে রুকু করো।’ –(সূরা আল বাকারা: ৪৩)
নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সারা জীবন জামাতে নামাজ আদায় করে
দেখিয়েছেন, নামাজ জামাতে আদায় করতে হয়।
হাদিস শরিফে বর্ণিত আছে, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) সারা
জীবন জামাতের সঙ্গেই নামাজ আদায় করেছেন। এমনকি ইন্তেকালপূর্ব অসুস্থতার সময়ও জামাত
ছাড়েননি। সাহাবায়ে কেরামের পুরো জীবনও সেভাবে অতিবাহিত হয়েছে।
পুরুষের জন্য পাঁচ ওয়াক্ত নামাজই জামাতে আদায় করা সুন্নতে মোয়াক্কাদা, যা ওয়াজিবের সঙ্গে তুলনীয় (অর্থাৎ এটি ওয়াজিবের কাছাকাছি)। -(সহিহ মুসলিম:
১০৯৩)
শরিয়ত অনুমোদিত কোনো অপারগতা ছাড়া জামাতে শরিক না হওয়া বৈধ নয়। যে ব্যক্তি
জামাত ত্যাগে অভ্যস্ত হয়ে যায়, সে গোনাহগার হবে। -(সুনানে
আবু দাউদ: ৪৬৪)
বিনা ওজরে জামাত পরিত্যাগকারীর নিন্দায় নবীজী কঠোর কথা বলেছেন। হজরত
রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘আমার প্রাণ যার হাতে, তার শপথ করে বলছি, আমার ইচ্ছা হয় আমি কাঠ
সংগ্রহ করার নির্দেশ দেই আর নামাজের আজান দেওয়ার জন্য হুকুম দেই। তারপর আমি এক
ব্যক্তিকে হুকুম করি, যেন সে লোকদের নামাজের
ইমামতি করে। আর আমি ওই সব লোকদের দিকে যাই, যারা নামাজের জামাতে হাজির
হয়নি এবং তাদের বাড়িঘরগুলো আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেই।’ –(সহিহ বোখারি: ৬১৮)
বিস্তারিত জানতে
ভিজিট করুন-
https://ifatwa.info/27121?show=27154#a27154
https://ifatwa.info/8639/
★ সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
নামায ছেড়ে দিলেই
ব্যক্তি কাফের হবে না। বরং কাফেরদের মত কাজ হয়। তবে হ্যাঁ,
যদি কেউ নামায পড়া ফরজ নয় মনে করে নামায ছেড়ে
দেয়, তাহলে
উক্ত ব্যক্তি কাফের। এতে কোন সন্দেহ নেই। কিংবা নামাযকে তাচ্ছিল্য করে নামায পড়া ছেড়ে
দেয় তাহলেও উক্ত ব্যক্তি কাফের। কিন্তু অলসতাবশত নামায ছেড়ে দিলে ব্যক্তি কাফের হয়ে
যায় বলাটা ফিকহে হানাফিতে সুস্পষ্ট প্রমাণিত নয়।
তবে প্রশ্নেল্লিখিত বাক্য “নামাজ না পড়লেও ঈমান ঠিক আছে”
কোন প্রকৃত মুমিন ব্যক্তি বলতে পারে না। যদি কেউ নামাজের প্রয়োজনীয়তা ও অকাট্য হুকুম অস্বীকার করত; উক্ত কথা বলে
তাহলে তার ঈমান থাকবে না।