অতীত গুনাহ গোপন রাখা

Question

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহ 

একজনের সাথে আমার অনলাইনে পরিচয় হয়, তার ফ্যামিলি এবং সে ইসলামিক ব্যাকগ্রাউন্ড হওয়াতে আমার মধ্যে সফট কর্ণার কাজ করে বিয়ের উদ্দেশ্যে তার সাথে মাঝেমধ্যেই অনলাইনে কথাবার্তা শুরু হয়।

আল্লাহ মাফ করে দিক।সম্পূর্ণ টাই শয়তানের প্ররোচনা ছিল

একপর্যায়ে আমি বারবার বিয়ের জন্য আগ্রহ দেখাতে থাকি।একসময় বিষয়টা দুই পক্ষের ফ্যামিলি পর্যন্ত এগিয়েছিল। ফ্যামিলির দিক থেকেও পজিটিভ ছিল কিন্তু কয়েকমাস পার হয়ে যাওয়ার পরে বিয়ে নিয়ে তার মধ্যে সেরকম তৎপরতা বা আগ্রহ দেখতে না পেয়ে,আমি এই গুনাহ থেকে সম্পূর্ণভাবে সরে আসার জন্য তার সাথে সমস্ত যোগাযোগ বন্ধ করে দেই।এখনও প্রতিনিয়ত আমি আমার গুনাহের জন্য আল্লাহর কাছে আন্তরিকভাবে তওবা করে যাচ্ছি গুনাহের জন্য মাফ চেয়ে যাচ্ছি 

আমার প্রশ্ন হচ্ছে, 

১। যেহেতু আমি বিভিন্ন মাধ্যমে আমার বিয়ের বায়োডাটা দেখছি যদি কোনো পাত্র আমাকে কখনো প্রশ্ন করে যে আমার অতীতে কিছু ছিলো কিনা সেক্ষেত্রে কি আমার এই বিষয়টা গোপন করা ঠিক হবে?যেহেতু এটা আমার গোপন গোনাহ আমি একমাত্র আল্লাহর কাছেই এটার জন্য তওবা করি ও ক্ষমা চেয়ে যাচ্ছি আমি চাই নাহ পরবর্তীতে কেউ এটা শুনে আমাকে খোচা দিয়ে কথা বলুক বা আমাকে বারবার এটা মনে করিয়ে দিক।

২।কিছুদিন আগে আমি অনলাইনে একটা বায়োডাটার সবকিছু আলহামদুলিল্লাহ পছন্দ হওয়াতে আমি আগাতে গিয়েও আগাতে পারছি নাহ কারন

  উনি ওনার বায়োডাটায় স্পস্ট করে উল্লেখ করেছেন যে,
"তিনি যেহেতু কখনো হারাম রিলেশন করি নি তাই তিনি চান তার জীবনসঙ্গী তার মতোই হবে যার কখনো কোনো হারাম রিলেশন ছিল না"

এই লাইনটা দেখে আমি কয়েকবার আগাতে চেয়েও আগাতে পারছি নাহ।আমি আমার সেই অনলাইনের সম্পর্কটার জন্য প্রতি মূহুর্তে অনুশোচনা ও অনুতপ্তে ভুগি।এখন উনি এভাবে উল্লেখ করে দেয়ার পরে কি আমার এই বায়োডাটার জন্য আগানো ঠিক হবে?

Answer 1

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ-

আলহামদুলিল্লাহ!

হযরত উমর রাযি এর নিকট একজন ব্যক্তি এসে বলল,

أَتَى عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ رَجُلٌ , فَقَالَ : إِنَّ لِي بِنْتًا كُنْتُ وَأَدْتُهَا فِي الْجَاهِلِيَّةِ فَاسْتَخْرَجْنَاهَا قَبْلَ أَنْ تَمُوتَ , فَأَدْرَكَتْ مَعَنَا الْإِسْلَامَ , فَأَسْلَمَتْ فَلَمَّا أَسْلَمَتْ أَصَابَهَا حَدٌّ مِنْ حُدُودِ اللَّهِ , فَأَخَذَتِ الشَّفْرَةَ لِتَذْبَحَ نَفْسَهَا , فَأَدْرَكْنَاهَا وَقَدْ قَطَعَتْ بَعْضَ أَوْدَاجِهَا , فَدَاوَيْتُهَا حَتَّى بَرِئَتْ ، ثُمَّ أَقْبَلَتْ بَعْدَ تَوْبَةٍ حَسَنَةٍ وَهِيَ تُخْطَبُ إِلَى قَوْمٍ , فَأُخْبِرُهُمْ مِنْ شَأْنِهَا بِالَّذِي كَانَ ؟ فَقَالَ عُمَرُ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ : " أَتَعْمَدُ إِلَى مَا سَتَرَهُ اللَّهُ فَتُبْدِيهِ , وَاللَّهِ لَئِنْ أَخْبَرْتَ بِشَأْنِهَا أَحَدًا مِنَ النَّاسِ لَأَجْعَلَنَّكَ نَكَالًا لِأَهْلِ الْأَمْصَارِ أَنْكِحْهَا نِكَاحَ الْعَفِيفَةِ الْمُسْلِمَةِ "

(الزهد لهناد بن السري- باب الستر- حديث رقم 1402)

আমার একটি মেয়ে আছে,  যাকে আমি জাহিলিয়াতের যুগে জীবন্ত পুতেছিলাম।অতঃপর মৃত্যুর পূর্বেই বের করে নিয়ে এসেছিলাম।অতঃপর আমাদের নিকট ইসলামের দাওয়াত পৌছল, আমাদের সাথে সেও ইসলাম গ্রহণ করলো। ইসলাম গ্রহণের পর তার উপর আল্লাহর হদ কায়েম হল অর্থাৎ তার উপর যিনার শাস্তি বাস্তবায়ন করা হল। সে একটি দাড়ালো চুরি হাতে নিল,নিজেকে শেষ করার জন্য। আমরা তাকে প্রতিহত করলাম তবে সে তার গলার সামান্য রগ কেটে ফেলল।আমরা তাকে চিকিৎসা করালাম,অতঃপর সে সুস্থ হল।সে সুস্থ হওয়ার পর তার বিয়ের পয়গাম আসলো।ম অর্থাৎ এক জায়গা থেকে তার রিশতা আসলো। হে আমিরুল মু'মিনিন উমর রাযি!

আমি কি তার অতীত সম্পর্কে তাদেরকে অবগত করে দেবো দেবো। হযরত উমর প্রতিউত্তরে তখন বললেন, তুমি এমন জিনিষ প্রকাশ করতে যাচ্ছো, যার উপর আল্লাহ পর্দা ঢেলে দিয়েছেন।

"আল্লাহর কসম করে বলতেছি, যদি তুমি তোমার মেয়ে সম্পর্কে কাউকে কিছু বলো, তাহলে তোমাকে শহরবাসীর জন্য ইবরতের নিশানা বানাবো। তুমি তাকে পূতঃপবিত্র মুসলিম রমনির মত বিয়ে দাও।

এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/906

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

(১) নিজের কৃত গোনাহ কখনো কারো নিকট প্রকাশ করবেন না। বরং শুধুমাত্র আল্লাহর কাছেই এজন্য ক্ষমা চাইবেন।

(২) যিনি এমন পাত্রী চাচ্ছেন, যার কখনো কোনো হারাম রিলেশন ছিলনা,এমন পাত্রের সাথেও আপনি বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারবেন। তবে যেহেতু অন্তরে সর্বদা নিজেকে প্রতারক মনে হবে, তাই এমন পাত্রের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ না হওয়াই উচিৎ।

Comments

সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে।

---

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহ 
কেউ যদি অতীত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে যেমন" আমার কারো সাথে সম্পর্ক ছিলো কি নাহ"
সেক্ষেত্রে সরাসরি না বলাটা কি ঠিক হবে?
বা আমি কিভাবে এই বিষয়টা হ্যান্ডেল করতে পারি উপযুক্ত পরামর্শ চাচ্ছি

---

এড়িয়ে যাবেন। এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব না হলে, তাওরিয়াহ করবেন। আপনি বলবেন একটা আর সে বুঝবে অন্যটা। সেটাও সম্ভব না হলে, তখন মিথ্যাও বলতে পারবেন।