আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
202 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (13 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লহি ওয়াবারকাতুহ,  আমার হায়েজ থাকে ৩ দিন। তারপর আমি পবিত্র হয়ে সালাত আদায় করি। কিন্তু এবার আমার হায়েজ ছিল ৪ দিন। আমি ৪-৫ ঘন্টা অপেক্ষা করে কোন প্রকার চিহ্ন দেখতে পাইনি। পরে পবিত্র হয়ে নেই। আমি আমার স্বামীর সাথে ১৮ ঘন্টা পর সহবাস করি। হায়েজ ভালো হওয়ার সময় থেকে ২১ ঘন্টা পর পুনরায় আবার কিছুটা ব্লাড যেতে শুরু করে।

এখন আমার প্রশ্ন হচ্ছে- ১) আমরা যে সহবাস করেছি এতে কি কোন প্রকার গুনাহ হয়েছে। আমরা যখন মিলন করি তখন কোন প্রকার চিহ্ন ছিল না। সহবাস এর ১ ঘন্টাপর পুনরায় ব্লাড আছে।

২) আমার স্বভাব ৩ দিন ধরে চলে আসছে। দীর্ঘ ৭ বছর ধরে এমন সমস্যা এবারি প্রথম হয়েছে। এসমস্যা থেকে বাঁচতে কি করা উচিত আমাদের। আর আমি সালাত ও কুরআন তিলাওয়াত কখন থেকে শুরু করতে পারবো।

1 Answer

0 votes
by (61,230 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।

জবাব,

 ঋতুস্রাব অবস্থায় জেনেশুনে স্ত্রী সহবাস করা নিষিদ্ধ। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে,

وَيَسْأَلُونَكَ عَنِ الْمَحِيضِ ۖ قُلْ هُوَ أَذًى فَاعْتَزِلُوا النِّسَاءَ فِي الْمَحِيضِ ۖ وَلَا تَقْرَبُوهُنَّ حَتَّىٰ يَطْهُرْنَ ۖ فَإِذَا تَطَهَّرْنَ فَأْتُوهُنَّ مِنْ حَيْثُ أَمَرَكُمُ اللَّهُ ۚ إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ التَّوَّابِينَ وَيُحِبُّ الْمُتَطَهِّرِينَ

লোকেরা আপনাকে হায়েজ তথা ঋতুস্রাব সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে। আপনি বলে দিন, তা অপবিত্রতা। অতএব তোমরা হায়েজের সময় স্ত্রীদের থেকে পৃথক থাকো এবং তাদের নিকটবর্তী হয়ো না। যতক্ষণ না তারা পবিত্র হয়।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ২২২)

হাদিস শরিফে এসেছে, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো ঋতুবতীর সঙ্গে মিলিত হয় কিংবা কোনো নারীর পশ্চাদ্দ্বারে সঙ্গম করে অথবা কোনো গণকের কাছে যায়, নিশ্চয়ই সে মুহাম্মাদের ওপর যা অবতীর্ণ হয়েছে তা অস্বীকার করে।’ (তিরমিজি, হাদিস : ১৩৫)

তা ছাড়া ডাক্তারদের মতেও এ সময় স্ত্রী সহবাস করা অনুচিত। কারণ এ সময় স্রাবের রক্তের সঙ্গে বিভিন্ন রোগের জীবাণু বের হয়ে থাকে, যা সহবাসের মাধ্যমে পরস্পরের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকে। তাই এ সময় সহবাস নিষিদ্ধ। তবে কেউ যদি তা করে ফেলে তার জন্য কর্তব্য হলো আল্লাহর কাছে তাওবা-ইস্তিগফারের পাশাপাশি সদকা করা। ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘যে ব্যক্তি হায়েজ অবস্থায় স্ত্রী সঙ্গম করে তার সম্পর্কে নবী (সা.) বলেছেন, সে যেন এক দিনার অথবা আধা দিনার (যা বর্তমান মূল্য হিসেবে ৪.৩৭৪ গ্রাম সমপরিমাণ স্বর্ণ) সদকা করে।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ২৬৪)

https://ifatwa.info/10304/  নং ফাতাওয়াতে আমরা বলেছি যে, শরীয়তের বিধান অনুযায়ী হায়েযের সর্বোচ্চ সময়সীমা ১০দিন।

এ ১০দিনের ভিতর লাল,হলুদ,সবুজ,লাল মিশ্রিত কালো বা নিখুত কালো যে কালারের-ই পানি বের হোক না কেন তা হায়েয হিসেবেই গণ্য হবে।যতক্ষণ না নেপকিন সাদা নজরে আসবে। (বেহেশতী জেওর-১/২০৬) 

হায়েজের দিন গুলোতে যেই কালারেরই রক্ত হোক,সেটি হায়েজের রক্ত বলেই গন্য হবে। উক্ত সময় নামাজ রোযা ইত্যাদি আদায় করা যাবেনা। (কিতাবুল ফাতওয়া ২/৭৬)

রোযার কাজা পরবর্তীতে আদায় করবে।

তবে স্পষ্ট সাদা কালারের কিছু বের হলে সেটাকে হায়েজ বলা যাবে না। (ফাতাওয়ায়ে হক্কানিয়াহ ২/৮৩৩)

উম্মে আলক্বামাহ তথা মার্জনা (مَوْلاَةِ عَائِشَةَ) হইতে বর্ণিত,

عن أم علقمة أَنَّهَا قَالَتْ : " كَانَ النِّسَاءُ يَبْعَثْنَ إِلَى عَائِشَةَ أُمِّ الْمُؤْمِنِينَ بِالدُّرْجَةِ فِيهَا الْكُرْسُفُ فِيهِ الصُّفْرَةُ مِنْ دَمِ الْحَيْضَةِ يَسْأَلْنَهَا عَنْ الصَّلَاةِ فَتَقُولُ لَهُنَّ لَا تَعْجَلْنَ حَتَّى تَرَيْنَ الْقَصَّةَ الْبَيْضَاءَ تُرِيدُ بِذَلِكَ الطُّهْرَ مِنْ الْحَيْضَةِ "

তিনি বলেনঃ (ঋতুমতী) স্ত্রীলোকেরা আয়েশা (রাঃ)-এর নিকট ঝোলা বা ডিবা (دُرْجَة) পাঠাইতেন, যাহাতে নেকড়া বা তুলা (كُرْسُفْ) থাকিত। উহাতে পাণ্ডুবৰ্ণ ঋতুর রক্ত লাগিয়া থাকিত। তাহারা এই অবস্থায় নামায পড়া সম্পর্কে তাহার নিকট জানিতে চাহিতেন। তিনি [আয়েশা (রাঃ)] তাহাদিগকে বলিতেনঃ তাড়াহুড়া করিও না, যতক্ষণ পর্যন্ত পূর্ণ সাদা (বর্ণ) দেখিতে না পাও। তিনি ইহা দ্বারা ঋতু হইতে পবিত্রতা (طُهْر) বুঝাইতেন। (মুয়াত্তা মালিক-১২৭)

বিস্তারিত জানুনঃ https://ifatwa.info/7905/ 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

১. সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত সুরতে যেহেতু হায়েজ শেষ হয়েছে মনে করেই সহবাসে লিপ্ত হয়েছে, তাই আল্লাহ তায়ালা মাফ করবেন। আল্লাহর কাছে ইস্তেগফার করতে হবে।

২. নিয়ম অনুযায়ী যদি দশ দিনের মধ্যেই আবার রক্ত আসে, তাহলে সেটাকে হায়েজ হিসেবেই ধরা নেওয়া হবে। সুতরাং মনে করতে হবে আপনার পূর্ব নির্ধারিত ৩দিনের সংখ্যা চলতি মাসে পরিবর্তন হয়েছে। যেহেতু ঐ রক্ত হায়েজের, তাই নামাজ পড়া ও তেলাওয়াত করা যাবে না। যখন আপনার সাদা স্রাব আসবে তখন থেকে আপনি সালাত ও তেলাওয়াত করতে পারবেন। তবে দশ দিনের পরও যদি উক্ত রক্ত দেখতে পান তাহলে আপনার অভ্যাসের তিন দিনের অতিরিক্ত যত দিন রক্ত দেখবেন সবিই ইস্তেহাযার অন্তর্ভূক্ত।

 ইস্তেহাযার হুকুম জানতে ভিজিট করুন: https://ifatwa.info/31988/

 মাসিকের গুরুত্বপূর্ণ কিছু মাসআলা সম্পর্কে আরো জানুন: https://ifatwa.info/78/


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...