আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
78 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (37 points)
কেউ জুদি গরীব হওয়ার জন্য বার বার অভিযোগ করে আর নিজেরে গরীব হওয়া তা মেনে নিতে না পারে সেই ক্ষেত্রে এর দ্বারা কি তার ঈমান যাবে কি ? কারন একজন আমাকে বলেছিল যে দারিদ্রতার দ্বারা নাকি কুফুরির বা ঈমান হারার সম্ভাবনা থাকে এই বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চাই ?

1 Answer

0 votes
by (574,050 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

আল্লাহ তায়ালা যাকে যেই অবস্থাতে রেখেছেন,সেই হালতেও তাকে শুকরিয়া আদায় করা উচিত,সন্তুষ্ট থাকা উচিত।

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ- 

وَ عَسٰۤی اَنۡ تَکۡرَہُوۡا شَیۡئًا وَّ ہُوَ خَیۡرٌ لَّکُمۡ ۚ وَ عَسٰۤی اَنۡ تُحِبُّوۡا شَیۡئًا وَّ ہُوَ شَرٌّ لَّکُمۡ ؕ وَ اللّٰہُ یَعۡلَمُ وَ اَنۡتُمۡ لَا تَعۡلَمُوۡنَ ﴿۲۱۶﴾

তোমরা যা অপছন্দ কর হতে পারে তা তোমাদের জন্য কল্যাণকর এবং যা ভালবাস হতে পারে তা তোমাদের জন্য অকল্যাণকর। আর আল্লাহ্ জানেন তোমরা জান না।
(সুরা বাকারা ২১৬)

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

وَعَنْ أَنَسٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «كَادَ الْفَقْرُ أَنْ يَكُونَ كفرا وكادَ الحسدُ أَن يغلب الْقدر» 

আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ দারিদ্র্যতা যেন প্রায়ই কুফরীর সীমানা পর্যন্ত পৌঁছিয়ে দেবে, আর হিংসা বা উচ্চাশা যেন তাকদীরের উপর জয়লাভ করবে।
(শু‘আবুল ঈমান ৬৬১২, হিলইয়াতুল আওলিয়া ৩/৫৩,মিশকাত ৫০৫১)

উক্ত হাদীসের ব্যাখ্যাঃ (كَادَ الْفَقْرُ أَنْ يَكُونَ كُفْرًا) মূলত ধনী হলো সেই ব্যক্তি, যার হৃদয়টা ধনী তথা অভাবমুক্ত। আর গরীব হলো সেই, যার হৃদয়টা অভাবে পরিপূর্ণ; এ গরীব হৃদয়ই হলো কুফরীর কারণ। তা কখনো আল্লাহর সর্বক্ষমতার উপর প্রশ্ন উত্থাপন করে, আবার কখনো তাঁর সিদ্ধান্তের উপর অনীহা সৃষ্টি করে অথবা কখনো এ দরিদ্রতাই সরাসরি কুফরীর মধ্যে লিপ্ত করে ফেলে। আর এটা এভাবে যে, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, কাফির-মুশরিক-আল্লাহদ্রোহীরা পার্থিব ধন-ঐশ্বর্যের প্রাচুর্যতার মাঝে ডুবে আছে। পক্ষান্তরে বেশিরভাগ ইসলাম দরিদ্রতার নিচে বাস করে। স্বভাবত এটা দেখে অনেক মুসলিমই কুফরী করতে পারে। অথবা এমন মন্তব্য করে বসে যাতে সে কুফরী করে বসে। এজন্যই রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ‘দরিদ্রতা যেন কুফরীর সীমা পর্যন্ত পৌঁছিয়ে দেয়।

(وَكَادَ الْحَسَدُ أَنْ يَّغْلِبَ الْقَدْرَ) আর হিংসা বা উচ্চাশা যেন তাকদীরের উপর জয়লাভ করবে। অর্থাৎ হিংসুক ব্যক্তি অন্যের নি‘আমাত দেখে তার ভিতরের সুপ্ত লালসাকে আরো বাড়িতে তোলে। সে অন্যের নি‘আমাত দূর হয়ে যাক এমন কামনা করে। আর নিজে সব নি‘আমাতের একক মালিক হোক- এমন কামনা করে। মহান আল্লাহ যে তাকদীর লিপিবদ্ধ করে রেখেছেন এটা সে মনেই করে না। হিংসার প্রভাবে সকল নীতি-নৈতিকতা ভুলে যায়। সে মহান আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত তাকদীরকে যথাযথ সম্মান দেখাতে পারে না।
(কিছু তথ্য সংগৃহীত)

وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عَلَيْهِ وَسلم: «بَادرُوا بِالْأَعْمَالِ فِتناً كَقِطَعِ اللَّيْلِ الْمُظْلِمِ يُصْبِحُ الرَّجُلُ مُؤْمِنًا وَيُمْسِي كَافِرًا وَيُمْسِي مُؤْمِنًا وَيُصْبِحُ كَافِرًا يَبِيعُ دِينَهُ بِعرْض من الدُّنْيَا» .

رواہ مسلم (186 / 118)، (313) ۔
(صَحِيح)

আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: তোমরা ভালো ’আমলের দিকে দ্রুত অগবর্তী হও ঘুটঘুটে তিমির রাত্রির অংশ সদৃশ ফিতনার পতিত হওয়ার পূর্বেই যখন কোন লোক ভোরে উঠবে ঈমানদার হয়ে আর সন্ধ্যা করবে কুফরী অবস্থায় এবং সন্ধ্যা করবে মু’মিন অবস্থায় আর প্রভাতে উঠবে কাফির হয়ে। সে ইহকালীন সামান্য সম্পদের বিনিময়ে নিজের দীন ও ঈমানকে বিক্রয় করে দেবে। (মুসলিম)

সহীহ: মুসলিম ১৮৬-(১১৮), তিরমিযী ২১৯৫, সহীহুল জামি ২৮১৪, সহীহ আত্ তারগীব ওয়াত্ তারহীব ) সিলসিলাতুস সহীহাহ ৭৫৮, মুসনাদে আহমাদ ৮০১৭, আবূ ইয়া'লা ৬৫১৫, সহীহ ইবনু হিব্বান ৬৭০৪, আল মু’জামুল কাবীর লিত্ব তবারানী ৫৫৮, আল মু'জামুল আওসাত্ব ২৭৭৪।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ব্যাক্তি যদি আল্লাহ তায়ালার প্রতি গালি গালাজ না করে,সেক্ষেত্রে সে ঈমানহারা হবেনা।

তারপরেও উক্ত অভিযোগ ঈমানের জন্য ক্ষতিকর। সুতরাং তওবা করতে হবে,মহান আল্লাহর ফয়সালার উপর সন্তুষ্ট থাকতে হবে।

ইনশাআল্লাহ আল্লাহ তায়ালা তাকে জাযা দান করবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...