ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাব,
https://ifatwa.info/4088/ নং
ফাতওয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে,
শরীয়তের বিধান অনুযায়ী মহিলাদের
জন্য পর্দা রক্ষা করে যেকোনো হালাল পেশা,
ব্যবসা বাণিজ্য ও চাকুরী করা
জায়েজ আছে। তবে এক্ষেত্রে যেন পর্দা লঙ্ঘণ না হয়, সেই
সাথে শরয়ী অন্য কোন বিধান লঙ্ঘিত না হয়,
সেদিকে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে। হ্যাঁ, যদি উপার্জনক্ষম কোন মাহরাম আত্মীয়
থাকে, বা অভিভাবক থাকে,
তাহলে মহিলাদের জন্য ব্যবসা ও
চাকরীর জন্য বাহিরে যাওয়া উচিত নয়।
শরয়ী পর্দা ও বিধান অনুসরণ করে মহিলাদের ব্যবসা বাণিজ্য ও চাকুরী করাতে কোন নিষেধাজ্ঞা
আসেনি। তা’ই শরয়ী কোন কারণ ছাড়া মহিলাদের ব্যবসা করা ও চাকুরী করাকে হারাম বলার সুযোগ
নেই। (তাবয়ীনুল হাকায়েক
৬/১১৭; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৫৫; আলবাহরুর
রায়েক ১/২০০; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৩৮, ফিকহুন
নাওয়াযিল ৩/৩৫৯)
তবে যদি পর্দা লঙ্ঘণ হয়, পুরুষদের মিলে একসাথে কাজ করতে
হয়, সেই সাথে ফিতনার আশংকা হয়, তাহলে
জায়েজ নেই।
ولها ان تقوم بالتدريس والبيع والشراء والصناعة من نسيج وصيغ وغزل
وخياطة ونحو ذلك إذا لم يفض إلى مالا يجوز شرعا من خلوتها بأجنبى، أو اختلاطها
برجال غير محارم اختلاطا تحدث منه فتنة أو يؤدى إلى فوات ما يجب عليها نحو اسرتها
دون أن تقيم مقامها من يقوم بالواجب عنها ودون رضاهم (فقه النوازل-3/359
★"মহিলাদের স্কলার হওয়া এবং তাদের
থেকে নারী পুরুষ উভয়ের শিক্ষা নেওয়া" এখানে
প্রথম ছুরতে সহ শিক্ষা যদি না হয়,তাহলে তো কোনো সমস্যাই নেই। কারন এখানে শুধু মেয়েরাই ছাত্রী হবে। আর যদি সহ শিক্ষা হয় এবং ২য় ছুরত হয়,তাহলে
আমরা বলবো যে
আসলে যদি পরিপূর্ণ পর্দা রক্ষা করার সম্ভব না হয়, আর এ
কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া বা পড়ানো উক্ত মহিলা বা পুরুষের জন্য আবশ্যকীয়
না হয়, তাহলে উক্ত কলেজ,
বিদ্যালয়ে ছেড়ে দেয়াই হচ্ছে তাকওয়ার
দাবি।
যেহেতু এটি অনেক সময়ই অসম্ভব বিষয়। তাই ছেলেরা ছেলেদের কলেজে আর মেয়েরা গার্লস
কলেজে পড়াবে,এবং পড়বে,এটাই এর সঠিক সমাধান।
قُلْ لِلْمُؤْمِنِينَ يَغُضُّوا مِنْ أَبْصَارِهِمْ وَيَحْفَظُوا
فُرُوجَهُمْ ۚ ذَٰلِكَ أَزْكَىٰ لَهُمْ ۗ إِنَّ اللَّهَ خَبِيرٌ بِمَا يَصْنَعُونَ
[٢٤:٣٠
وَقُلْ لِلْمُؤْمِنَاتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَارِهِنَّ وَيَحْفَظْنَ
فُرُوجَهُنَّ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا مَا ظَهَرَ مِنْهَا ۖ
وَلْيَضْرِبْنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلَىٰ جُيُوبِهِنَّ ۖ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ
إِلَّا لِبُعُولَتِهِنَّ أَوْ آبَائِهِنَّ أَوْ آبَاءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ
أَبْنَائِهِنَّ أَوْ أَبْنَاءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي
إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي أَخَوَاتِهِنَّ أَوْ نِسَائِهِنَّ أَوْ مَا مَلَكَتْ
أَيْمَانُهُنَّ أَوِ التَّابِعِينَ غَيْرِ أُولِي الْإِرْبَةِ مِنَ الرِّجَالِ
أَوِ الطِّفْلِ الَّذِينَ لَمْ يَظْهَرُوا عَلَىٰ عَوْرَاتِ النِّسَاءِ ۖ وَلَا
يَضْرِبْنَ بِأَرْجُلِهِنَّ لِيُعْلَمَ مَا يُخْفِينَ مِنْ زِينَتِهِنَّ ۚ
وَتُوبُوا إِلَى اللَّهِ جَمِيعًا أَيُّهَ الْمُؤْمِنُونَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ
[٢٤:٣١
মুমিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গর
হেফাযত করে। এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে। নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত
আছেন।
ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে
এবং তাদের যৌন অঙ্গের হেফাযত করে। তারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশমান, তা ছাড়া
তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের মাথার ওড়না বক্ষ দেশে ফেলে রাখে
এবং তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা,
শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর
পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুস্পুত্র, ভগ্নিপুত্র, স্ত্রীলোক
অধিকারভুক্ত বাঁদী, যৌনকামনামুক্ত পুরুষ, ও বালক, যারা
নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ, তাদের ব্যতীত কারো আছে তাদের
সৌন্দর্য প্রকাশ না করে, তারা যেন তাদের গোপন সাজ-সজ্জা প্রকাশ করার জন্য
জোরে পদচারণা না করে। মুমিনগণ, তোমরা সবাই আল্লাহর সামনে তওবা
কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও। {সূরা নূর-৩০-৩১}
وَإِذَا سَأَلْتُمُوهُنَّ مَتَاعًا فَاسْأَلُوهُنَّ مِنْ وَرَاءِ
حِجَابٍ ذَلِكُمْ أَطْهَرُ لِقُلُوبِكُمْ وَقُلُوبِهِنَّ وَمَا كَانَ لَكُمْ أَنْ
تُؤْذُوا رَسُولَ اللَّهِ وَلَا أَنْ تَنْكِحُوا أَزْوَاجَهُ مِنْ بَعْدِهِ
أَبَدًا إِنَّ ذَلِكُمْ كَانَ عِنْدَ اللَّهِ عَظِيمًا
অর্থ : আর তোমরা তাঁর (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর স্ত্রীগণের
কাছে কিছু চাইলে পর্দার আড়াল থেকে চাইবে। এটা তোমাদের অন্তরের জন্য এবং তাঁদের অন্তরের
জন্য অধিকতর পবিত্রতার কারণ। {সূরা আহযাব-৫৩}
বিখ্যাত তাফসীরবিদ ইমাম কুরতুবী রাহ. উক্ত আয়াতের আলোচনায় বলেন, উক্ত
আয়াতে আল্লাহ তাআলা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর স্ত্রীদের কাছে
কোনো প্রয়োজনে পর্দার আড়াল থেকে কিছু চাওয়া বা কোনো মাসআলা জিজ্ঞাসা করার অনুমতি দিয়েছেন।
সাধারণ নারীরাও উপরোক্ত হুকুমের অন্তর্ভুক্ত। (তাফসীরে কুরতুবী ১৪/১৪৬)
নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর স্ত্রীগণ হলেন সকল মুমিনের মা। অথচ
তাঁদের সাথেই লেনদেন বা কথা-বার্তা বলতে হলে পর্দার আড়াল থেকে করতে বলা হয়েছে। তাহলে
অন্যান্য সাধারণ বেগানা নারীদের ক্ষেত্রে হুকুমটি কত গুরুত্বপূর্ণ হওয়া উচিত তা তো
সহজেই অনুমেয়।
এছাড়া মেয়েরা পরিপূর্ণ পর্দা রক্ষা করে কলেজে আসা আবশ্যক। হাত ও পায়ের কোন অংশ
যেন অনাবৃত না থাকে। সর্বদা চোখের দৃষ্টি নত রাখবে। হঠাৎ চোখের দৃষ্টি হারাম বস্তুর দিকে নিবদ্ধ হলে
সাথে সাথে চোখ ফিরিয়ে নিবে। ইনশাআল্লাহ আল্লাহ তাআলা অনিচ্ছাকৃত গোনাহকে মাফ করে দিবেন।
https://www.ifatwa.info/1900 নং ফাতাওয়ায় আমরা বলেছি যে, অবৈধ ও হারাম সম্পত্তির মালিকের নিকট থেকে হাদিয়া
গ্রহণ সম্পর্কে কিছুটা ব্যাখ্যা রয়েছে।
(১) লোকটির সম্পূর্ণ সম্পত্তিই হারাম এবং সে তার ঐ সম্পত্তি থেকেই কাউকে হাদিয়া
দিতে চাচ্ছে।
(২) লোকটির সম্পত্তিতে হালাল-হারামের সংমিশ্রণ রয়েছে।কোন গুলো হারাম আর কোনো গুলো
হালাল,তার পরিচয় লাভের কোনো সুযোগ নেই। তবে হারামের আধিক্যর সম্ভাবনাই বেশী। উক্ত ব্যক্তিটি তার ঐ মিশ্রিত সম্পদ থেকে
হাদিয়া দিতে চাচ্ছে।
(৩) দ্বিতীয় প্রকারের উল্টো তথা-লোকটির সম্পত্তিতে হালাল-হারামের সংমিশ্রণ রয়েছে।কোন
গুলো হারাম আর কোনো গুলো হালাল,তার পরিচয় লাভের কোনো সুযোগ নেই। তবে হালালের আধিক্যর সম্ভাবনাই বেশী। উক্ত ব্যক্তিটি তার ঐ
মিশ্রিত সম্পদ থেকে হাদিয়া দিতে চাচ্ছে।
(৪) হারাম সম্পত্তির মালিক তার হারাম টাকা থেকে হাদিয়া দিচ্ছে না।বরং কারো থেকে
হালাল টাকা ধার করে বা কারো কাছ থেকে অর্থ নিয়ে হাদিয়্যা দিচ্ছে।
১ম নং এবং ২য়নং সূরতে উক্ত ব্যক্তি
বা প্রতিষ্ঠান থেকে হাদিয়া গ্রহণ জায়েজ হবে না। আর ৩য় সুরতে জায়েয হলেও,
গ্রহণ না করাই উত্তম এবং ৪র্থ সুরতে
হাদিয়া গ্রহণ জায়েজ।
জ্ঞাতব্য যে,ব্যাংকের সকল ইনকাম হারাম নয়। বরং কিছু জায়েযও আছে।
এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন- https://www.ifatwa.info/398
★প্রিয়
প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/ বোন!
১. বিশেষ প্রয়োজনে মহিলারা মাহরাম ব্যতিত কাছাকাছি
বাজারে যেতে পারবে। অবশ্যই সম্পূর্ণ পর্দাকে রক্ষা করে যেতে হবে। তবে নিজে বাজারে না গিয়ে যদি প্রয়োজন পূর্ণ করার ভিন্ন রাস্তা থাকে, তাহলে অযথা যাওয়া উচিত নয়। সুতরাং আপনি ব্যক্তিগত প্রয়োজন পূরণের জন্য পূর্ণাঙ্গরুপে পর্দা
করে নিকটস্থ বাজারে যেতে পারবেন যদি আপনার কোন মাহরাম না থাকেন। এবং আপনার
বান্ধবীদের মাধ্যমেও সহযোগিতা নিতে পারেন যদি তারা এতে বিরক্ত না হোন বা সন্তুষ্টির
সাথে সহযোগিতা করেন। যেমন: হতে পারে তারা তাদের কোন কাজে বাহিরে মার্কেটে গেছে সেই সাথে আপনার প্রয়োজনীয় পণ্যটিও
সংগ্রহ করলেন। এটি জায়েয আছে। তবে তারা যদি বিরক্তবোধ করেন বা শুধু আপনার জন্যেই
তাদের বেপর্দা বাহিরে যেতে হয় তাহলে তা মোটেও উচিত হবে না। আরো জানুন:
https://ifatwa.info/25461/
২. যেহেতু
আপনি নিশ্চিত না যে, সেই ব্যক্তির চাল সুদের টাকায় কেনা বিধায় আপনার জন্য তার থেকে
ধারকৃত চালের ভাত খাওয়া জায়েয আছে। তবে যখন কোন ব্যক্তি সমুদয় ইনকাম হারাম হবে বা নিশ্চিত
রুপে জানা যাবে যে, আপনাকে সে যেই পণ্যটি দিয়েছে তা সুদের টাকা থেকে দিয়েছে তখন তা
গ্রহণ করা জায়েয হবে না।